বিতর্ক বিবাদ এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। প্রেম পরিণয়ে মানসিক স্থিরতা নষ্ট। নানা উপায়ে অর্থ উপার্জনের সুযোগ। ... বিশদ
রাজনৈতিক মহলের মতে দলের রাজ্য নেতৃত্ব বার বার কোচবিহারে এসে দলের অন্দরের কোন্দল নিয়ে নেতৃত্বকে সতর্ক করছে। সম্প্রতি সর্বভারতীয় যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় রাসমেলার ময়দানের সভা থেকেও এনিয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। কিন্তু তারপরেও দলের দ্বন্দ্ব কমছে না। দিনহাটার পর এবার কোচবিহারের চান্দামারিতেও তৃণমূলের স্থানীয় নেতারা নিজেদের মধ্যে কোন্দলে জড়িয়ে পড়ছেন। তৃণমূলের জেলা সহসভাপতি জলিল আহমেদ বলেন, দলে কোনও দন্দ্ব মানা হবে না। এই ঘটনায় দলীয় স্তরে তদন্ত করা হবে।
ভৈরববাবু বলেন, আমরা কেন পোস্ট অফিস পাড়ার মিটিংয়ে গিয়েছিলাম, কেন ব্যক্তিগত উদ্যোগে রাসমেলার ময়দানের মিটিংয়ে গিয়েছিলাম তারই জবাবদিহি চাইছিল দলেরই ওরা। আমরা বিধায়কের নেতৃত্বেই এলাকায় সংগঠন করি। ওরা বামফ্রন্ট থেকে সদ্য দলে এসেছে। ওরা প্রথমে ভাইয়ের খোঁজ করছিল। তাঁকে না পেয়ে আমার উপর, আমার স্ত্রী ও মায়ের উপর চড়াও হয়েছিল। স্থানীয় বিধায়ক মিহিরবাবু বলেন, প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্যকেও মারধর করা হয়েছে। যারা এই ধরনের গণ্ডগোল পাকাচ্ছে তারা দলের ভালো চায় না। তারা দলের ক্ষতি করছে। গোটা বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত খোঁজ নিচ্ছি।
কাঁচামারির বাসিন্দা ভৈরববাবু চান্দামারি পঞ্চায়েতের প্রাক্তন সদস্য। তাঁর ভাই জ্যোতিষ সরকার এলাকায় যুব নেতা হিসাবেই পরিচিত। এই পরিবারের সদস্যরা এলাকায় মিহির গোস্বামীর অনুগামী বলেও পরিচিত। বৃহস্পতিবার বিকালে কয়েকজন যুবক বাইকে চেপে এসে জ্যোতিষবাবুর খোঁজ করে। তাঁকে না পেয়ে তারা ভৈরববাবুর উপর হম্বিতম্বি শুরু করে। কিছুক্ষণ পর তারা ফিরে যায়। এরপর লাঠি, রড নিয়ে তারা দল বেঁধে ফের ফিরে আসে। এরপর তারা ভৈরববাবুর উপর চড়াও হয়। ভৈরববাবুর বুকে, পিঠে লাঠি দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। তাঁর স্ত্রীর হাত ধরে টানাটানি করা হয়েছে ও গলার হার ছিনতাই করা হয়েছে বলেও অভিযোগ। এমনকী ভৈরববাবুর মা সুলতা সরকার বাঁচাতে গেলে তাঁর উপরেও দুষ্কৃতীরা চড়াও হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনার জেরে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি কোচবিহার পুরাতন পোস্ট অফিস পাড়ায় দলের একটি সভা ছিল। সেখানে বিধায়ক হাজির ছিলেন। সেই সভাতে ভৈরববাবুর ভাই সহ চান্দামারি থেকে অনেকেই এসেছিলেন। এনিয়ে দলের অপর গোষ্ঠী বেজায় ক্ষুব্ধ ছিল। এরপর গত ৮ জানুয়ারি কোচবিহার রাসমেলা ময়দানে যুব তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা ছিল। সেই সভাতে আসার জন্য দলের একটি গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে গ্রামে গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু সেই গাড়িতে ভৈরববাবুরা না উঠে ব্যক্তিগত উদ্যোগে গাড়ি ভাড়া করে তাঁরা গিয়েছিলেন। এর জেরে দলের অপর গোষ্ঠীর আক্রোশ তাঁদের উপর পড়ে।
এদিকে বৃহস্পতিবার রাতে কোচবিহারের দিনহাটার ভেটাগুড়িতে তৃণমূলের একাধিক নেতা কর্মীদের বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে যুব’র বিরুদ্ধে। তৃণমূলের স্থানীয় অঞ্চল সভাপতি সহ চারটি বাড়িতে অতর্কিতে হামলা চালানো হয়েছে। দরজা, জানালা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। তৃণমূলের অঞ্চল নেতৃত্বের অভিযোগ, বিকালে বাইশগুড়িতে মিটিং ছিল। রাতে আচমকা গাড়ি ও বাইকে চেপে এসে যুব’র নাম নিয়ে বিজেপি সহ বাম আশ্রিত দুষ্কৃতীরা পর পর কয়েকটি বাড়িতে হামলা চালিয়েছে। তারা বাড়ি লক্ষ্য করে বোমা ও গুলি ছুঁড়েছে বলেও অভিযোগ। পুলিস গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তৃণমূলের ভেটাগুড়ি অঞ্চল সভাপতি মন্তেশ্বর রায় বলেন, যুব’র নাম করে দুষ্কৃতীরা এসব করেছে। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি।