বিতর্ক বিবাদ এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। প্রেম পরিণয়ে মানসিক স্থিরতা নষ্ট। নানা উপায়ে অর্থ উপার্জনের সুযোগ। ... বিশদ
ফেসবুক পোস্টে বিনোদ বলছেন, কেউ বা কারা যদি অনবরত আপনার মায়ের নামে, বাবার নামে ও দাদার নামে অশ্লীল মন্তব্য করতে থাকে, আর আপনি যদি চুপ থাকেন তবে আপনি মহাপুরুষ আর আমি যে শুধু গালির উত্তর দিয়েছি মাত্র এতেই অসামাজিক হয়ে গেলাম? কিছুক্ষণের মধ্যেই ওই ফেসবুক পোস্ট ভাইরাল হয়ে যায়। এদিন তাঁকে মারধরের জন্য নিখিল নির্মলের বিরুদ্ধে কলকাতার ওই মানবাধিকার সংগঠন বিনোদের স্বাক্ষর করা অভিযোগপত্রটি নিয়ে কলকাতায় গিয়েছে।
এদিকে গত ৬ জানুয়ারি যেদিন সস্ত্রীক জেলাশাসকের ফালাকাটা থানায় ঢুকে বিনোদকে মারধর অভিযোগ ওঠে সেদিনই তাঁর স্ত্রী থানায় বিনোদের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। যদিও ওই যুবকের বিরুদ্ধে জেলাশাসকের স্ত্রী’র করা অভিযোগ নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে। জেলাশাসকের স্ত্রী অভিযোগ করেছেন, গত ৩ জানুয়ারি সন্ধ্যায় আলিপুরদুয়ারে ডুয়ার্স উৎসব থেকে বেরিয়ে আসার সময় বিনোদ তাঁর এক বান্ধবীর শ্লীলতাহানি করে। তিনি বাধা দিতে গেলে বিনোদ তাঁকেও মারধর করে। মারধরে তাঁর ‘ইন্টারনাল ব্লিডিং’ হয়। সেজন্য এক চিকিৎসককেও দেখান তিনি। ওই চিকিৎসক তাঁকে বিশ্রামে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
প্রশ্ন উঠেছে প্রথমত, এই ঘটনার পর সদ্য প্রাক্তন জেলাশাসকের স্ত্রী আলিপুরদুয়ার থানায় অভিযোগ করলেন না কেন? তাঁর স্ত্রী যেখানে এই ঘটনার কথা বলেছেন সেখান থেকে আলিপুরদুয়ার থানার দূরত্ব খুব কাছেই। দ্বিতীয়ত, ৩ জানুয়ারি মারধরের ঘটনা ঘটলেও তিনি পরের দিন ৪ তারিখ বা তার পরের দিন ৫ তারিখ কেন অভিযোগ করলেন না? তিনি বিনোদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেন ৬ জানুয়ারি। তাও আলিপুরদুয়ার থানায় না করে ফালাকাটা থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করলেন কেন? বিনোদের বিরুদ্ধে জেলাশাসকের স্ত্রীর করা অভিযাগ ইতিমধ্যেই আদালতে পাঠিয়ে দিয়েছে পুলিস। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, যদিও মামলাটি এখনও আদালতে ওঠেনি। বিনোদের বিরুদ্ধে জেলাশাসকের স্ত্রী’র এই অভিযোগের বিষয়ে পুলিসের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এবিষয়ে জানতে পুলিস সুপারকে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।
এদিন মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআরের সদস্যরা নিগৃহীত যুবকের বাড়িতে গিয়ে বিনোদ ও তাঁর পরিবারের সঙ্গে দেখা করে সমস্ত রকম আইনি সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। এপিডিআরএর আলিপুরদুয়ার শাখা সম্পাদক সুমন গোস্বামী বলেন, আমরা আক্রান্ত বিনোদ ও তাঁর পরিবারের পাশে আছি। তাঁর পরিবারকে সব রকম আইনি সহায়তা করা হবে। এই ঘটনার জন্য বিনোদকে সাইবার ক্রাইমে অভিযোগ জানানোরও পরামর্শও দিয়েছি আমরা।
এদিকে সস্ত্রীক জেলাশাসকের বিরুদ্ধে বিনোদের বাবা রাজমোহনবাবু ছেলেকে মারধরের যে অভিযোগ করেছেন সেই অভিযোগের তদন্তের অনুমতি চেয়ে বুধবারই আদালতের কাছে আর্জি জানিয়েছিল জেলা পুলিস। রাজমোহনবাবুর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিস ওই মামলায় ৫০৬ ও ৩২৩ ধারা দিয়েছে। এদিন সরকারি আইনজীবি এইচ টিটুং বলেন, আদালত অনুমতি দিয়েছে। তবে আদালত অনুমতি দিলেও এই কেসের তদন্তকারী অফিসারকে অভিযোগের তদন্ত শুরু করতে কমিশানারেট বা সচিবের কাছে অনুমতি নিতে হবে। পুলিস সুপার ফোন না ধরায় এদিন রাত পর্যন্ত জানা যায়নি ওই কেসের তদন্তকারী অফিসার কে হচ্ছেন এবং কমিশনারেট বা রাজ্য পর্যায়ের কোনও সচিবের কাছে এই অভিযোগের তদন্ত শুরু করার জন্য অনুমতি চাওয়া হচ্ছে।
এদিকে এদিন দুপুরে খবর রটে যায় যে বিনোদকে এদিন কে বা কারা মারধর করেছে। যদিও বিনোদের কাকা ললিতমোহনবাবু ও জামাইবাবু বাপি সরকার এই গুজব উড়িয়ে দিয়েছেন। এদিকে ফালাকাটা থানার আইসি সৌম্যজিৎ রায়ের বদলির প্রতিবাদে বিভিন্ন ক্লাব, গণসংগঠন ও স্থানীয় বাসিন্দারা থানার সামনে বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের দাবি, আইসি’কে বদলি করা যাবে না।