পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
শুক্রবার বার্মিংহামে ভারতের কনস্যুলেট জেনারেলের দপ্তরের বাইরে জমায়েত করে বিক্ষোভ দেখান তেহরিক-ই-কাশ্মীরের সমর্থকরা। দীর্ঘদিন ধরেই কাশ্মীরের স্বাধীনতার পক্ষে সওয়াল করে আসছে সংগঠনটি। ‘কাশ্মীরে খুনোখুনি বন্ধ কর’ শীর্ষক ওই বিক্ষোভে দেখা গিয়েছে একাধিক ভারতবিরোধী ব্যানার-পোস্টার। আগামী ১৫ আগস্ট, স্বাধীনতা দিবসে দুপুর ১টায় লন্ডনে ভারতীয় দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ দেখানোর পরিকল্পনা করছে অপর একটি গোষ্ঠী। পাকিস্তানি সমর্থকদের পাল্টা জবাব দিতে প্রস্তুতিও শুরু করেছেন অনাবাসী ভারতীয়রা। সোশ্যাল মিডিয়া গ্রুপগুলি উপচে পড়ছে সেই কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার বার্তায়।
এর মধ্যে, ভারতের এই পদক্ষেপের ‘তীব্র নিন্দা’ করার দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে চিঠি পাঠিয়েছেন বিরোধী দল লেবার পার্টির কয়েকজন ব্রিটিশ মুসলিম সাংসদ। তাঁদের দাবি, ভারত সরকারের ৩৭০ ধারা তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত একটি ‘পরিকল্পিত আকস্মিক আঘাত’। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির এই কাজের বৃহত্তর দিকটিও বিবেচনা করার আর্জি জানিয়েছেন তাঁরা। চিঠিটির খসড়া তৈরি করেছেন ব্রিটেনের ছায়া মন্ত্রিসভার (সরকারের মন্ত্রিসভার আদলে গড়া বিরোধীদের মডেল) আইনমন্ত্রী ইয়াসমিন কুরেশি। চিঠিতে সই রয়েছে মূলত পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত আরও আটজন সাংসদের।
সমালোচনার সুর শোনা গিয়েছে লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিনের গলাতেও। ট্যুইটারে ভারতের নাম না করে তিনি লিখেছেন, ‘কাশ্মীরের পরিস্থিতি গভীরভাবে উদ্বেগজনক। মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে, যা একেবারেই মেনে নেওয়া যায় না। কাশ্মীরিদের অধিকারকে সম্মান জানিয়ে রাষ্ট্রসঙ্ঘের প্রস্তাবনা লাগু করা উচিত।’ বিরোধী দলের নেতার এই বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছেন লন্ডনের রাজনৈতিক কৌশলী তথা ইন্ডিয়া আইএনসি. গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা-সিইও মনোজ লাডওয়া। উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদির ডিরেক্টর অব কমিউনিকেশনস ছিলেন তিনি। মনোজ জানিয়েছেন, ‘আমার আশঙ্কা একটি আদর্শগত বিকৃত মানসিকতা আপনার চোখ অন্ধ করে দিয়েছে। যা সন্ত্রাসে ইন্ধন জোগাবে, আন্তর্জাতিক আইন এবং জম্মু ও কাশ্মীরের মহিলা, দলিত, হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন এবং এলজিবিটিকিউ সংখ্যালঘুদের অধিকার অস্বীকার করবে।’
বিরোধী দলের কায়দায় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে পাল্টা চিঠি দিয়েছেন কনজারভেটিভ পার্টির এমপি বব ব্ল্যাকম্যান। লেবার পার্টির বিরুদ্ধে তাঁর অভিযোগ, কাশ্মীর ভারত ও পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক বিষয়। ব্রিটেনের দীর্ঘ দিনের এই অবস্থান ভাঙতে চাইছে তাঁরা। উল্লেখ্য, উত্তর লন্ডনের সাংসদ ব্ল্যাকম্যান নরেন্দ্র মোদির দীর্ঘদিনের সমর্থক হিসেবে পরিচিত। তাঁর মতে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী তাঁর পার্টির নির্বাচনী ইস্তাহারের সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করেছেন। ব্রিটেন অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মাথা গলায় না। এই প্রসঙ্গে তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন মনোজ লাডওয়া। সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্ল্যাকম্যানের চিঠি নিয়ে মাতামাতি শুরু করেছেন বিজেপি সমর্থকরাও।
বিষয়টি নিয়ে ১০, ডাউনিং স্ট্রিটের পক্ষ থেকে অবশ্য সরকারিভাবে কিছু জানানো হয়নি। কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে গত সপ্তাহেই বরিস জনসনকে ফোন করেছিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। সেই প্রসঙ্গে অবশ্য বিবৃতি দিয়েছে ডাউনিং স্ট্রিট। তাতে অবশ্য দু’পক্ষই আলোচনাস্তরে সমস্যার সমাধানের ব্যাপারে সম্মত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়। বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়েছেন ব্রিটেনের বিদেশ সচিব ডোমিনিক রাব। সেখানে কাশ্মীর ইস্যুতে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানিয়েছেন, ‘আমরা বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছি। দু’পক্ষকেই শান্ত থাকার বার্তা দিয়েছি। কিন্তু আমরা ভারত সরকারের প্রেক্ষিত থেকে পুরো পরিস্থিতির স্পষ্ট ধারণা পেয়েছি।’ এর আগে কাশ্মীর নিয়ে সব পক্ষকে শান্ত থাকার বার্তা দিয়েইছল ব্রিটেনের বিদেশ এবং কনওয়েলথ দপ্তরও।