রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
অনেকে বলেন, নাথিং ইজ ফ্রি ইন আমেরিকা। এয়ারপোর্টে পৌঁছে হাতেনাতে তার প্রমাণ মিলেছে। লাগেজ ট্রলিতে নিতে গিয়ে দেখি, সবগুলো একসঙ্গে লক করা! ক্রেডিট কার্ড খরচ করে ভাড়ায় নিতে হবে। কী অদ্ভুত! তবে, এখানে নাকি তিন ‘ডব্লু’-তে কোনও ভরসা নেই। ওয়েদার, ওয়ার্ক এবং উইমেন। সেই দুবাই এয়ারপোর্টে রসিকতা করে বলেছিলেন এক আমেরিকান মহিলা। কী যেন নাম? এমিলি বার্নাট। বলেছিলেন, ‘ওয়েদার মানে আবহাওয়া সকালে ভালো তো বিকেলে খারাপ। রাতে ভালো তো দুপুরে খারাপ। সকালে টগবগে রোদ তো দুপুরে বৃষ্টি। এই গনগনে গরম তো এই কনকনে ঠান্ডা। ওয়েদারের কোনও ভরসাই নেই!’ ওয়ার্ক-এরও নাকি এখানে কোনও ভরসা নাই। সকালে হায়ার তো বিকেলে ফায়ার। অর্থাৎ অফিসে গিয়ে দেখলেন চাকরি নেই। তবে কাজের লোকের গুরুত্ব এখানে সবচেয়ে বেশি। কেউ যদি দক্ষ বা যোগ্য হন তা হলে তাঁরা তাঁকে মাথায় তুলে রাখবেন। আর ক্রিয়েটিভ কিংবা আইডিয়া মেকারদের তো তুলনাই নেই। যাঁরা এই প্রতিযোগিতায় হেরে যান, তাঁদের অবস্থা হয় শোচনীয়। আর উইমেন? মার্কিন মুলুকের বেশিরভাগ মেয়ে অন্য যেকোনও কিছুর থেকে টাকাকেই বেশি গুরুত্ব দেয়। টাকা, ভালোবাসা কিংবা সুযোগ সুবিধা যেটাই হোক না কেন, তাদের যদি আজ আপনাকে ভালো লাগে তা হলে আপনার সঙ্গে থাকবে। মাস কিংবা বছর পার করার পরও যদি অন্য কাউকে ভালো লেগে যায় তাহলে তার সঙ্গে চলে যাবে। যাকে বলে ফ্রিডম। মার্কিন মহিলাদের স্বাধীনতা যেকোনও ভারতীয়র কাছে ঈর্ষা হতেই পারে। তবে তাদের সততা হচ্ছে এই যে, যখন যার সঙ্গে থাকবে তখন মনেপ্রাণে শুধু তারই। কারও আঙুলে রিং দেখলে তাকে বিরক্তপর্যন্তকরবে না। শুধু বলবে, তুমি তো এনগেজড। বেস্ট উইশেস!
আমেরিকায় সবচেয়ে গুরুত্ব পান তাঁরাই, যাঁরা পড়াশোনা করেন, গবেষণা করেন। এদেশে লেখাপড়া করতে বয়স বাধা নয়। যে কোনও বয়সেই তাঁর যোগ্যতা অনুযায়ী যেকোনও প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়ে ডিগ্রি অর্জন করতে পারেন। আমেরিকান কিশোর কিশোরীরা অনার্স, মাস্টার্স বা পিএইচডি নিয়ে খুব একটা আগ্রহী নয়। তারা স্কুল লেভেল পার করার পরই অস্থির হয়ে যায় অর্থ উপার্জনের জন্য। তখন তারা বাবা মায়ের থেকে দূরে সরে যায়। একটা গার্লফ্রেন্ড অথবা একটা বয়ফ্রেন্ড জোগাড় করে ফেলে। এমিলি বারবার বলে দিয়েছিলেন, আমেরিকানরা প্রচণ্ড অধিকার সচেতন। নিজের অধিকার তারা কাউকে ছাড়বে না, আবার অন্যের অধিকারে খুব একটা নাকও গলাবে না। বাকস্বাধীনতা এখানে আকাশচুম্বী। আমেরিকাতে একজন প্রেসিডেন্টের নামে সমালোচনা করলেও কেউ তার গায়ে টোকা পর্যন্ত দিতে পারে না। মার্কিন টেলিভিশন চ্যানেলে কত শো-ই হয়েছে, শুধুমাত্র প্রেসিডেন্টকে ব্যঙ্গ করার জন্য। নিজেদের সমালোচনা করা, নিজেকে নিয়ে ফান করার শক্তিতে আমেরিকা প্রচণ্ডভাবে শক্তিমান। সব কিছুই খুব বড় মার্কিনমুলুকে। হাইওয়ে, ট্রাক, রেস্তরাঁয় খাবারের পরিমাণ, পানীয়ের গ্লাসের সাইজ, স্টারবাকসের কফির কাপের সাইজ— সব। মানুষগুলো একটু যান্ত্রিক, বড়সড়। কিন্তু সৌজন্যবোধ শেখার মতো।