কোনও কিছুতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ভাববেন। শত্রুতার অবসান হবে। গুরুজনদের কথা মানা দরকার। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সুফল ... বিশদ
আর পাঁচটা সপ্তাহান্তের দিনের মতোই শনিবার এল পাসোর ওই ওয়ালমার্ট বিপণীতে ভিড় করেছিলেন গ্রাহকরা। অনেকে মেক্সিকো সীমান্ত লাগোয়া এলাকাগুলি থেকেও এসেছিলেন জিনিসপত্র কিনতে। সবমিলিয়ে সেই সময় গোটা বিপণীতে প্রায় ৩ হাজার মানুষ ছিলেন। পুলিস জানিয়েছে, আচমকাই সেখানে ঢুকে বছর একুশের প্যাট্রিক ক্রাসিয়াস একটি অ্যাসল্ট রাইফেল থেকে এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে। খবর পেয়েই পুলিস তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছে আততায়ীকে হেফাজতে নেয়। ঘটনায় মৃতদের মধ্যে অন্তত তিনজন মেক্সিকোর নাগরিক বলে জানা গিয়েছে। পরে মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেজ ম্যানুয়েল লোপেজ ওব্রাডর ট্যুইটারে জানান, গুরুতর জখমদের মধ্যে ৬ জন মেক্সিকোর নাগরিক রয়েছেন। টেক্সাসের গর্ভনর গ্রেগ অ্যাবট এই ঘটনাকে ‘ভয়ঙ্কর’ আখ্যা দিয়ে জানান, হামলাকারীর বিরুদ্ধে একই সঙ্গে গণহত্যা এবং বিদ্বেষমূলক অপরাধের অভিযোগে মামলা হবে।
পুলিসের দাবি, ডালাসের মফসস্ল এলাকার বাসিন্দা প্যাট্রিক হামলা চালানোর আগে একটি চারপাতার চিঠি ইন্টারনেটে পোস্ট করেছিল। যার ছত্রে ছত্রে রয়েছে বর্ণবিদ্বেষ এবং উগ্র শ্বেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদের গন্ধ। সেখানে মূলত অভিবাসী এবং লাতিন আমেরিকার নাগরিকদের প্রতি তার তীব্র ঘৃণা ব্যক্ত করেছে প্যাট্রিক। জানা গিয়েছে, প্যাট্রিকের ব্যবহৃত ট্যুইটার অ্যাকাউন্টে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রশংসা করে একাধিক ট্যুইট করা হয়েছে। মেক্সিকো সীমান্তে দেওয়ার তৈরি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট, তাকে সাধুবাদ জানিয়ে প্রশংসাও করেছে প্যাট্রিক। যদিও, ঘটনার তীব্র নিন্দা করে বিবৃতি দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এই ঘটনাকে ‘কাপুরুষের কাজ’ আখ্যা দিয়ে তিনিজানান, নিরীহ মানুষকে খুন করার কোনও যুক্তি থাকতে পারে না। ট্রাম্প ট্যুইটারে লেখেন, ‘আমি সমগ্র দেশবাসীর পাশে দাঁড়িয়ে এই ঘৃণ্য অপরাধের তীব্র নিন্দা করছি। নিরীহ মানুষকে খুন করার কোনও কারণ অথবা যৌক্তিকতা থাকতে পারে না। আমি এবং মেলানিয়া টেক্সাসবাসীদের অন্তর থেকে গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।’ নিহতদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে প্রার্থনা করেছেন পোপ ফ্রান্সিসও। রবিবার প্রার্থনার জন্য ভ্যাটিকানের সেন্ট পিটার্স স্কোয়্যারে উপস্থিত জনতাকে পোপ বলেন. ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস, ক্যালিফোর্নিয়া এবং ওহায়োতে বন্দুকবাজের হামলায় নিহত নিরীহ মানুষগুলির জন্য আপনারাও আমার সঙ্গে প্রার্থনা করুন।’ গত ২৮ জুলাই উত্তর ক্যালিফোর্নিয়ার একটি জনপ্রিয় খাদ্য উৎসবে তাণ্ডব চালিয়ে ছ’বছরের শিশু সহ মোট তিনজনকে হত্যা করেছিল এক বন্দুকবাজ আততায়ী। পোপ এদিন সেই ঘটনার কথাই উল্লেখ করেন।
ওয়ালমার্টের হামলার ঘটনার মোবাইলে তোলা কিছু ভিডিও এদিন ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে দেখা গিয়েছে, বন্দুকবাজের নজর থেকে বাঁচতে বিপণীর কর্মী থেকে শুরু করে ক্রেতারা উদভ্রান্তের মতো ছোটাছুটি করছেন। ধোঁয়ায় ভালোমতো দেখা যাচ্ছে না কিছু। তার মধ্যেই মেঝেতে ছড়িয়ে রয়েছে রক্তাক্ত নিথর দেহগুলি। মুহুর্মুহু গুলির আওয়াজও শোনা গিয়েছে ওই ভিডিওতে। ঘটনার তদন্তের সঙ্গে জড়িত একটি সূত্র জানিয়েছে, পৃথক ‘ডোমেস্টিক টেররিজম ইনভেস্টিগেশন’ দল তৈরি করে তাদের সহযোগিতা করছে এফবিআইও।
এদিকে, ওহায়োর হামলার ঘটনা সম্পর্কে ওরিগন পুলিসের লেফটেন্যান্ট কর্নেল ম্যাট কার্পার জানান, রবিবার ভোররাতে একটি জনপ্রিয় পানশালায় ঢুকে গুলি চালায় এক বন্দুকবাজ। ঘটনায় ৯ জনের মৃত্যু হয়। পরে পুলিসের গুলিতে ওই হামলাকারীরও মৃত্যু হয়। যদিও, তার পরিচয় এখন জানা যায়নি। ওই পুলিসকর্তা বলেন, ‘ওরিগন টেক্সাসের সবচেয়ে সুরক্ষিত এলাকা। ভাগ্যক্রমে ঘটনার সময় ওই এলাকায় একাধিক পুলিসকর্মী উপস্থিত ছিলেন। খবর পেয়েই তাঁরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান। যার ফলে আততায়ী বেশিক্ষণ হত্যালীলা চালাতে পারেনি।’ আপাতত ওই আততায়ীর পরিচয় এবং এই হামলার কারণ জানতে এফবিআইকে নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিস।