ক্রাইস্টচার্চ, ১৯ মার্চ (এএফপি): নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে জঙ্গি হামলায় হতদের মধ্যে ছ’জনের দেহ তাঁদের পরিবারের হাতে তুলে দিল প্রশাসন। মঙ্গলবার নিউজিল্যান্ড পুলিসের তরফে এই খবর জানানো হয়েছে। যদিও পুলিস সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, জঙ্গি হামলায় হত ৫০ জনের প্রত্যেককে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি। মৃত ৫০ জনের ময়নাতদন্ত শেষ হলেও এখনও পর্যন্ত মাত্র ১২ জনের পরিচয় জানা সম্ভব হয়েছে। তাঁদের পরিবারের হাতে দেহ তুলে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। হামলার পর চারদিন কেটে গেলেও এখনও পর্যন্ত সকল নিহতদের পরিচয় জানা সম্ভব না হওয়ায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকে। গতকালের পর আজও অনেকে ক্রাইস্টচার্চের মসজিদের সামনে প্রিয়জনদের স্মৃতিতে ভিড় জমান। সেই সময়েই দ্রুত দেহ হস্তান্তরের দাবি তোলেন তাঁরা। পরে পুলিসের তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘নিহতদের পরিবারের হাতে দ্রুত দেহ তুলে দেওয়ার জন্য আমরা সব ধরনের চেষ্টা করছি। কিন্তু তার আগে প্রত্যেক মৃত ব্যক্তির পরিচয় জানাটা জরুরি। চিহ্নিতকরণ শুনতে সহজ হলেও প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত জটিল।’ সেই কারণেই মৃতদের পরিচয় জানতে দেরি হচ্ছে বলে পুলিস সূত্রে খবর। আল নুর মসজিদে জঙ্গি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন মতিউল্লা সফি। বাবার দেহ শনাক্তকরণের জন্য সুযোগ চেয়ে পুলিসের কাছে আবেদন জানিয়েছেন ২৩ বছর বয়সি মহম্মদ সফি। এক আত্মীয়ের অন্ত্যেষ্টি ক্রিয়ায় যোগ দিতে অকল্যান্ড থেকে ক্রাইস্টচার্চে এসেছেন জাভেদ দাদাভাই। পুলিসের তরফে তাঁদের পরিবারকে বাড়তি সময় লাগবে বলে আগে থেকে সতর্ক করা হয়েছিল বলে জানান তিনি।
এদিকে, মসজিদের হামলায় অভিযুক্ত অস্ট্রেলিয়ার ব্রেন্টন টারান্টকে কোনওরকম ছাড় দেওয়া হবে না বলে বার্তা দিলেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্দা আর্দেন। তিনি বলেন, ‘কড়া আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ যদিও একথা বলার সময় একবারের জন্যও হামলাকারীর নাম উচ্চারণ করেননি আর্দেন। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘হামলাকারী একজন জঙ্গি। অপরাধী। সে একজন মৌলবাদী। সেই কারণে আমি কখনও তার নাম উচ্চারণ করব না।’ হামলায় নিহতদের স্মৃতির উদ্দেশে শোক প্রকাশও করেন তিনি। যদিও প্রধানমন্ত্রীর শোক প্রকাশের মধ্যেই ফরেন্সিক বিভাগের দেরির জন্য নতুন করে ক্ষোভ মাথাচাড়া দিয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নিহতদের পরিবারের সদস্যরা নিউজিল্যান্ডে আসতে শুরু করেছেন। সেদেশের অভিবাসন দপ্তরের আধিকারিক পিটার এলেমস জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত ৬৫ জনকে ভিসা দেওয়া হয়েছে।