কর্মে অগ্রগতি ও নতুন কাজের বরাত প্রাপ্তি। আইটি কর্মীদের শুভ। মানসিক চঞ্চলতার জন্য বিদ্যাচর্চায় বাধা। ... বিশদ
গত ১৬ জানুয়ারি প্রথমবার খসড়া চুক্তিটি সংসদে পেশ করেছিলেন টেরিজা মে। চুক্তিটির পক্ষে ছিলেন মাত্র ২০২ জন সংসদ সদস্য। বিপক্ষে ভোট দিয়েছিলেন ৪৩২ জন এমপি। প্রথমবার ২৩০ ভোটের ব্যবধানে হেরে দমে যাননি প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু গত সপ্তাহেও এই চুক্তি নিয়ে ভোটাভুটিতে ১৪৯ ভোটের ব্যবধানে হেরে যান তিনি। তবে তারপরেও আশাবাদী ছিলেন মে। শেষ মুহূর্তে চুক্তিবিহীন ব্রেক্সিটের মতো অনিশ্চয়তার পথ বেছে নেওয়ার থেকে তাঁর চুক্তিতে সিলমোহর দেওয়া যে সুবিধাজনক, তা এমপিরা বুঝতে পারবেন বলেই মনে করছিলেন তিনি। কিন্তু এখানেই তাঁর পরিকল্পনায় জল ঢেলে দিয়েছেন স্পিকার জন বার্কাউ। ১৬০৪ সালের সংবিধানের একটি ধারা উদ্ধৃত করে তিনি জানিয়েছেন, এভাবে সংসদকে চাপ দিতে পারে না সরকার। এমপিদেরও একই বিষয়ের উপরে দু’বার ভোট দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া যায় না। মে সরকার দ্বিতীয়বার ভোটের সময় ব্রেক্সিট চুক্তিতে বিতর্কিত আইরিশ ব্যাকস্টপ শর্ত (আইরিশ সীমান্তে ইইউয়ের নীতি চালু থাকা) নিয়ে কিছু পরিবর্তন করার দাবি জানিয়েছিল। তাই তখন অধ্যক্ষ সেই দাবি মেনে নিয়েছিলেন বলেই ইঙ্গিত দিয়েছেন বার্কাউ। কিন্তু এবার সরকার আর খসড়া চুক্তিতে পর্যাপ্ত পরিবর্তন না করলে সেটি ভোটের জন্য পেশ করতে দেবেন না তিনি। অধ্যক্ষের মতে, ‘একই চুক্তি নিয়ে বারবারর ভোটাভুটি করে সময় নষ্ট করার কোনও মানে হয় না। হাউসের সময়ের সঠিক ব্যবহার এবং সিদ্ধান্তকে সম্মান করার বিষয়টি সুনিশ্চিত করতে এটি একটি প্রয়োজনীয় ধারা।’ তবে সরকার যদি খসড়া চুক্তিতে নতুন কোনও পরিবর্তন আনেন, তা হলে তা নিয়ে ভোটাভুটি হতেই পারে বলেও জানিয়েছেন তিনি। উল্লেখ্য, ব্রিটিশ সংবিধান অনুযায়ী, হাউস অব কমন্সে কোনও প্রস্তাব বা সংশোধনীর উপর ভোটাভুটি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে অধ্যক্ষের।
অন্যদিকে, আগামী বৃহস্পতিবারই ব্রাসেলসে ইউরোপীয় কাউন্সিলের সামিটে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে টেরিজা মে’র। সেখানে ২৯ মার্চের সময়সীমা বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা করার কথা রয়েছে ইইউ নেতাদের। এর আগে তাঁরা মে’র প্রাথমিক খসড়া চুক্তিতে নতুন করে কোনও বদল মেনে নেবেন না বলে জানিয়েছেন। ফলে উভয় সঙ্কটে পড়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। হাউস অব কমন্সে তৃতীয় ভোটাভুটিতে ব্রেক্সিট চুক্তি পাশ করানো গেলে পাকাপাকিভাবে ইইউ ছাড়ার সময়সীমা ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানোর ব্যাপারে আশাবাদী ছিলেন টেরিজা মে। কিন্তু সেক্ষেত্রে মে মাসের শেষে ইউরোপীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রিটেনের যোগদান নিয়েও জটিলতা তৈরি হতে পারে। এই মুহূর্তে দু’টিমাত্র পথ রয়েছে ব্রিটেনের সামনে। এক, চুক্তিবিহীন ব্রেক্সিট। যে পথে হাঁটতে চান না অধিকাংশ ব্রিটিশ এমপি, এমনকী ইইউ নেতারাও। দ্বিতীয়, মে মাসে ইউরোপীয় সংসদ নির্বাচনের আগে পর্যন্ত ব্রেক্সিট পিছিয়ে দেওয়া। এবং সেই সময়ের মধ্যে চুক্তিটি সংসদে পাশ করানো। তবে অধ্যক্ষের এই নির্দেশ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর পথ আরও কঠিন করে দিল বলেই মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা।