কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
কাশ্মীরের পুলওয়ামায় সিআরপিএফ কনভয়ের উপর হামলার পর আন্তর্জাতিক মহলে পাকিস্তানকে কোণঠাসা করতে কূটনীতির আশ্রয় নিয়েছে ভারত। নাশকতায় জয়েশ যোগ স্পষ্ট হতেই সুপ্রিমো মাসুদ আজহারকে নিষিদ্ধ ঘোষণার জন্য রাষ্ট্রসঙ্ঘের উপর চাপ বাড়িয়েছে নায়াদিল্লি। পাশে পেয়েছে আমেরিকা, ফ্রান্স, ব্রিটেন সহ ৪৯টি দেশকে। সেইমতো বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে থাকা ভারতীয় সম্প্রদায় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সোচ্চার হয়েছে। পাকিস্তানের উপর থেকে ‘সর্বোচ্চ সুবিধাপ্রাপ্ত দেশে’র তকমা তুলে নিয়ে সেদেশ থেকে আমদানিকৃত পণ্যে ২০০ শতাংশ শুল্ক বসিয়েছে নয়াদিল্লি। পুলওয়ামায় জড়িত, মদতদাতাদের শাস্তির দাবিতে আমেরিকা নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় পাকিস্তানের মাটিতে জঙ্গিদের নিরাপদ আশ্রয় না দিতে ইসলামাবাদের উপর চাপ বাড়িয়েছে।
শুক্রবার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য নিয়ে ভাইস প্রেসিডেন্ট লিউ হি নেতৃত্বাধীন চীনের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে হোয়াইট হাউসে তাঁর ওভাল অফিসে বৈঠক করেন ট্রাম্প। সাংবাদিক বৈঠক করে তিনি বলেন, ‘কাশ্মীরে পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়ঙ্কর।’ তারপর পুলওয়ামার জঙ্গিহানা নিয়ে ভারতের প্রতি সমবেদনা জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ট্রাম্প বলেন, ‘ভারত খুব কড়া জবাবের কথা ভাবছে। প্রায় ৫০ জনের প্রাণ হারানোর পর এরকম মানসিকতা জন্মানোর যে একটা কারণ আছে, সেটা আমি জানি।’
তবে দু’দেশের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে এই হিংসা থামানো উচিত বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। নয়াদিল্লি-ইসলামাবাদের মধ্যে বর্তমান পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়ঙ্কর। দুই দেশের মধ্যে ভীষণ ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আমরা চাই এটা থামুক। প্রচুর মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন এবং আমরা এটা বন্ধ দেখতে চাই। আমরা এর (প্রক্রিয়া) সঙ্গে ভীষণভাবে জড়িত।’ দক্ষিণ এশিয়ার এই দুই প্রতিবেশী দেশের সমস্যা সমাধানে অন্যান্য দেশের মতোই আমেরিকা কথাবার্তা চালাচ্ছে বলেও জানিয়েছেন ট্রাম্প। তাঁর কথায়, ‘আমরা দু’দেশের সঙ্গে কথা বলছি। বহু মানুষ কথা বলছেন। যা ঘটছে তার জন্য ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে প্রচুর সমস্যা তৈরি হয়েছে। অত্যন্ত ভারসাম্যের সঙ্গে বিষয়টার আলোচনা করতে হবে।’
এখানেই শেষ নয়। আগের সরকারের থেকে পাকিস্তান অনেক সুবিধা নিয়ে এসেছে বলেও জানিয়েছেন ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, ‘পাকিস্তানকে প্রতিবছর আমেরিকা ১৩০ কোটি ডলার আর্থিক সাহায্য করত। পরিবর্তে পাকিস্তান যথাযথ সাহায্য না করায় আমি সেই অর্থ সাহায্য বাতিল করে দিয়েছি। এই পরিস্থিতিতেও পাকিস্তানের সঙ্গে বেশকিছু বৈঠক করেছি আমরা। সত্যি করে বলতে গেলে যে স্বল্প সময়টুকু পেয়েছি তাতে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক আরও উন্নত হয়েছে।’
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামার অবন্তীপোরায় সিআরপি কনভয়ে জয়েশ জঙ্গির আত্মঘাতী গাড়িবোমা বিস্ফোরণে প্রাণ হারান ৪৯ জন জওয়ান। তারপর থেকেই দু’দেশের সম্পর্ক উত্তপ্ত। কড়া প্রত্যাঘাতের হুঁশিয়ারি দিয়েছে ভারত। এমনকী, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের সঙ্গে কথা বলেছেন মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন। সেখানে দোভালকে ভারতের আত্মরক্ষার অধিকারে পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। এবং জয়েশ সহ অন্যান্য জঙ্গি গোষ্ঠীকে পাকিস্তান যাতে তাদের মাটিতে নিরাপদ আশ্রয় না দেয়, সেজন্য একজোট হয়ে কাজ করারও আশ্বাস দিয়েছেন বোল্টন।