গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
বৃহস্পতিবার জয়েশ জঙ্গির আত্মঘাতী হামলায় পুলওয়ামায় ৪৯ আধাসেনার মৃত্যুর পর মাসুদকে বিশ্বজঙ্গির তকমা দিতে ফের জোর সওয়াল করেছে ভারত। কারণ, অবন্তীপোরায় সিআরপিএফ কনভয়ের উপর হামলার ছক পাকিস্তানে বসেই কষেছিল মাসুদ। কিন্তু, অতীতে যতবারই ভারত মাসুদকে নিষিদ্ধ করার দাবি রাষ্ট্রসঙ্ঘে তুলেছে, ততবারই প্রক্রিয়াগত নিয়ম-নীতির কথা তুলে ধরে তার বিরোধিতা করেছে চীন। যার জেরে ভেস্তে গিয়েছে সেই পদক্ষেপ। কাশ্মীরে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার পর মনে করা হয়েছিল, এবার অন্তত চীন মাসুদকে বিশ্বজঙ্গি ঘোষণা করার দাবিতে ভারতকে সমর্থন করবে। কিন্তু, সে গুড়ে বালি!
এদিন সাংবাদিক বৈঠকে চীনের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র গেং শুয়াং বলেছেন, ‘আমরা এই (পুলওয়ামা) হামলায় গভীর শোকাহত। হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ও জখম পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই। যে কোনও ধরনের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আমরা। আশা করি, আঞ্চলিক দেশগুলি সন্ত্রাস দমনে এবং সংশ্লিষ্ট এলাকায় শান্তি ও স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে সহযোগিতা করবে।’ কিন্তু, মাসুদকে আন্তর্জাতিক জঙ্গি ঘোষণায় চীনের অবস্থান কী? জবাবে গেং বলেছেন, ‘রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের ১২৬৭ কমিটির জঙ্গি তালিকা নিয়ে সুনির্দিষ্ট নীতি রয়েছে। যার মাধ্যমে জঙ্গি সংগঠনগুলিকে তালিকাভুক্ত করা হয়। নিরাপত্তা পরিষদের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় আগে থেকেই রয়েছে জয়েশ সংগঠনের নাম। এই নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি অত্যন্ত গঠনমূলক ও দায়িত্বশীলতার সঙ্গে পাকা হাতে বিবেচনা করা হবে।’
আসলে মাসুদকে বিশ্বজঙ্গির তকমা দেওয়া নিয়ে অত্যন্ত কৌশলগতভাবে এগতে চায় চীন। আর সে কারণেই জয়েশ নিয়ে মুখ খুললেও তার সুপ্রিমো মাসুদ নিয়ে কোনওরকম সরাসরি মন্তব্য করতে চাননি গেং। গত বছর চীনের উহানে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতিতে বৈঠকে বসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও সেদেশের প্রেসিডেন্ট জি জিনপিং। মনে করা হয়েছিল, সেই বৈঠকের উত্তাপের পর মাসুদ নিয়ে এবার অন্তত নয়াদিল্লির পাশে দাঁড়াবে বেজিং। কিন্তু, সে প্রসঙ্গ এদিন এড়িয়ে গিয়েছেন গেং। তাঁর কথায়, ‘একজন নির্দিষ্ট কাউকে তালিকাভুক্ত করার ক্ষেত্রে চীন অত্যন্ত পেশাদারী ও দায়িত্ববান ভূমিকা নেবে। আমরা সবসময় প্রয়োজনীয় পরিস্থিতি অনুযায়ী কাজ করে এসেছি। আর তাই এ বিষয়েও ভারত ও সংশ্লিষ্ট দেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রেখে আমরা কাজ করব।’
শুধু মাসুদকে আন্তর্জাতিক জঙ্গির তকমা নিয়ে নয়, রাষ্ট্রসঙ্ঘের মিলিটারি অবজারভার গ্রুপ ইন ইন্ডিয়া অ্যান্ড পাকিস্তান (ইউএনএমওজিআইপি) কমিটিকে ভারত-পাকিস্তানের নিজেদের ভূখণ্ডে ঢুকতে না দেওয়া নিয়েও মুখ খুলেছেন গেং। তিনি বলেন, ‘আশা করি দুই দেশ নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করবে। এ বিষয়ে আঞ্চলিক দেশগুলিও সন্ত্রাসবাদে লাগাম টেনে সংশ্লিষ্ট এলাকায় শান্তি ও স্থিতিশীলতা স্থাপনে সহযোগিতা করবে।’ মাসদুকে বিশ্বজঙ্গি ঘোষণা করার দাবিতে ভারত যখন রাষ্ট্রসঙ্ঘে গিয়েছিল, তখন পাকিস্তানের পাশে দাঁড়িয়ে একমাত্র চীন সেই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভেটো দিয়েছিল। এমনকী, তারপর আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্সও মাসুদের বিরুদ্ধে আবেদন জানালে চীনের ভেটো ক্ষমতা বলে তা খারিজ হয়ে যায়।