পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড কিলবার্নের এমপি সিদ্দিক ৩৭ সপ্তাহের গর্ভবতী। ৪ ফেব্রুয়ারি সিজার প্রক্রিয়ায় সন্তানের জন্ম দেওয়ার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু শেষ মুহূর্তে ডায়াবেটিস ধরা পড়ায় রয়্যাল ফ্রি হসপিটালের চিকিৎসকরা তাঁকে পরামর্শ দেন, ১৪ অথবা ১৫ জানুয়ারি অস্ত্রোপচার করা দরকার। এটি তাঁর দ্বিতীয় সন্তান। কিন্তু তিনি চিকিৎসকদের জানিয়ে দেন, সন্তানের জন্ম দেওয়ার থেকেও ব্রেক্সিটের বিপক্ষে ভোট দেওয়া অনেক বেশি জরুরি। আর সেটা নিজের সন্তানদের স্বার্থেই। চিকিৎসকদের তিনি প্রস্তাব দেন, ১৭ জানুয়ারি যেন তাঁর সিজার করা হয়। উপায় না দেখে সেই প্রস্তাবই মেনে নিতে বাধ্য হয়েছেন চিকিৎসকরা। সিদ্দিকের কথায়, ‘হাসপাতাল স্বাস্থ্য পরিষেবা এবং স্বাস্থ্য আইন নিয়ে দারুণ সচেতন। বলা যেতে পারে, চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে গিয়েই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমি।’
কিন্তু কেন? ব্রিটেনের পার্লামেন্টে সাধারণভাবে প্রচলিত আছে, অন্তঃসত্ত্বা, সদ্য মা হয়েছেন এমন অথবা অসুস্থ এমপিরা বিপক্ষ দলের এরকম কোনও এমপির সঙ্গে মৌখিক চুক্তি করে উভয়েই ভোটদান থেকে বিরত থাকেন। এর ফলে সামগ্রিকভাবে ভোটের ফলে কোনও প্রভাব পড়ে না। কিন্তু ২০১৮ সালের জুলাই মাসে এমনই একটি ‘চুক্তি’ ভঙ্গ করেন রিপাবলিকান পার্টির চেয়ারম্যান ব্র্যান্ডন লুইস। লিবারেল ডেমোক্র্যাটদের ডেপুটি লিডার জো স্যুইনসনের সঙ্গে ‘বিশ্বাসঘাতকতা’ করে ভোট দিতে চলে আসেন তিনি। পরে তাঁর জন্য স্যুইনসনের কাছে দুঃখপ্রকাশ করলেও, সেই ‘বিশ্বাসঘাতকতা’র স্মৃতিই দগদগে সিদ্দিকের মনে। সিদ্দিকের মতে, ‘এই ব্যবস্থাটাকে যদি ফের অসম্মান করা হয়, তাহলে আমার কিছু করার থাকবে না। কারণ, এই ভোটটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। ভোট দিতে আসার জন্য আমার উপর দলের কোনও চাপ নেই। কিন্তু এই সিদ্ধান্তটা আমি নিয়েছি আমার দেশের স্বার্থে। আমার ছেলেও যাতে পৃথিবীতে এসে জানতে পারে, ব্রিটেনকে ইউরোপের সঙ্গে জুড়ে রাখার জন্য এরকম কিছু করেছিল তার মা।’
আপাতত চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণেই রয়েছেন তিনি। স্থিতিশীল। আজ পার্লামেন্টে হুইল চেয়ারে করে সিদ্দিককে নিয়ে আসবেন তাঁর স্বামী ক্রিস। ঘটনাচক্রে, দু’বছর আগে মেয়ে আজালিয়ার জন্মের সময়ও সমস্যা তৈরি হয়েছিল তাঁর। তবে সেটা শারীরিক। কিন্তু ছেলের বেলায়, দেশের স্বার্থে তাঁর জন্ম দেওয়া পিছিয়ে দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত তিনি নিয়েছেন, পার্লামেন্টে হয়তো কুর্নিশ জানাবে তাঁকে। সম্মান জানাবে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম। কারণ, তাঁদের দিকে তাকিয়েই নিজের সঙ্গে এই লড়াই সিদ্দিকের।