খার্তুম, ১০ জানুয়ারি (এএফপি): সুদানে সরকার বিরোধী বিক্ষোভকে ঘিরে মৃত্যু হল তিনজনের। দেশে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, আইন-শৃঙ্খলার অবনতি সহ একাধিক ইস্যুতে টানা প্রায় একমাস আন্দোলন চালাচ্ছেন বিরোধীরা। প্রেসিডেন্ট ওমর অল-বশিরের বাসভবন, বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের পাশাপাশি অবস্থান-বিক্ষোভ চলে সুদানের রাজপথেও। গতকাল ওমদুরমানের একটি প্রধান রাস্তা ঘিরে বিক্ষোভে শামিল হয়েছিলেন প্রায় এক হাজার মানুষ। সেই বিক্ষোভ ঠেকাতে গিয়ে পুলিস কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটায়। বৃহস্পতিবার তিনজনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছে পুলিস। তবে, মৃত্যুর কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। পুলিসের এক মুখপাত্রের বক্তব্য, ওমদুরমানের মূল রাস্তায় একটি বেআইনি জমায়েত হয়েছিল। সেখানে সরকার-বিরোধী বিক্ষোভ দেখানো হচ্ছিল। পুলিস কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটিয়ে জমায়েত হটিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। ওই তিনজনের মৃত্যুর কারণ অবশ্য জানা যায়নি। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। যদিও সুদানের বিরোধীদল ন্যাশনাল উম্মা পার্টির তরফে দাবি করা হয়েছে, জনগণের বিক্ষোভ হটাতে গিয়ে কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটানোর মধ্যেই গুলিও চালিয়েছিল বশিরের পুলিস বাহিনী। গতকাল ঘটনার একটি ভিডিও ফুটেজ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। তাতে বশির-বিরোধী আন্দোলনকারীদের পুলিসকে লক্ষ্য করে ইট ও পাথরের টুকরো ছুঁড়তে দেখা যায়। পুলিসও পাল্টা কাঁদানে গ্যাসের সেল নিয়ে তেড়ে যায়। কিন্তু বিক্ষোভরত তিনজনের মৃত্যু কীভাবে হল, তা স্পষ্ট নয়। বুধবার রাতে ওমদুরমানের একটি হাসপাতালের চিকিৎসক জানিয়েছেন, তিনি বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারীর চিকিৎসা করেছেন। তাঁরা প্রত্যেকেই গুলিবিদ্ধ হয়ে জখম হয়েছিলেন। বশিরের সুদীর্ঘ শাসনকালে সুদানে অর্থনৈতিক সঙ্কট চরম আকার নিয়েছে। প্রায় নিঃশেষিত বিদেশি মুদ্রার ভাণ্ডার। আকাশ ছুঁয়েছে জিনিসপত্রের দাম। তার উপর গত বছর ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে পাঁউরুটির দাম এক লপ্তে তিনগুণ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় বশির সরকার। সেই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে নতুন করে বিক্ষোভ শামিল হন বিরোধীরা। সুদানের সরকারি সূত্র বলছে, এ পর্যন্ত বিক্ষোভকে ঘিরে কমপক্ষে ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে দু’জন নিরাপত্তা কর্মীও রয়েছেন। তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলির পর্যবেক্ষণ বলছে, সুদানে এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ৪০ জন।