লন্ডন, ১০ জানুয়ারি: চুক্তি নিয়ে আপত্তি রয়েছে অনেক। আবার চুক্তি ছাড়া বিচ্ছেদ কার্যকর করাতেও মহাবিপত্তি। তাই ব্রিটেন পার্লামেন্টে এমপিদের সর্বদলীয় একটি জোট ব্রেক্সিট ঠেকাতে তৎপর হয়ে উঠেছে। মঙ্গলবার সরকারের আর্থিক বিলে (ফিন্যান্স বিল) সংশোধনী চেয়ে সংসদে একটি প্রস্তাব পাশ হয়। এর ফলে চুক্তি ছাড়া ব্রেক্সিট কার্যকর করতে গেলে সরকার জনগণের উপর করের বাড়তি বোঝা চাপাতে পারবে না। আর্থিক ক্ষমতা সীমিত করে চুক্তিবিহীন ব্রেক্সিট কার্যকর সরকারকে নিরুৎসাহিত করতেই এই কৌশল। বিরোধী দল লেবার পার্টির এমপি ইভেট কোপার এবং ক্ষমতাসীন দলের প্রাক্তন মন্ত্রী নিকি মর্গ্যান যৌথভাবে প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন। বিরোধীদলীয় এমপিরা এতে সমর্থন করেন। আর ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির ২০ জন এমপি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেন। মাত্র ৭ ভোটের ব্যবধানে (পক্ষে ৩০৩, বিপক্ষে ২৯৬) পাশ হওয়া প্রস্তাবটি প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মের জন্য বড় রকমের হার বলে বিবেচিত হচ্ছে। সম্পাদিত চুক্তি পাশ না হলে থেরেসা মে চুক্তি ছাড়াই বিচ্ছেদ কার্যকরে উদ্যোগী হবেন— এমন ধারণা বেশ জোরালো। বিচ্ছেদপন্থীরাও বলছেন, সম্পাদিত চুক্তির চাইতে চুক্তি ছাড়াই বেরিয়ে আসা দেশের জন্য তুলনামূলক ভালো। তবে বিচ্ছেদবিরোধীদের অবস্থান ভিন্ন। তাঁরা সম্পাদিত চুক্তির সমর্থক নন। আবার চুক্তিবিহীন বিচ্ছেদ হোক, তা–ও চান না। তাঁদের দাবি, সম্পাদিত চুক্তি পাশ না হলে সরকার যাতে নতুন করে সমঝোতার উদ্যোগ নেয় এবং প্রয়োজনে পুনরায় গণভোটের আয়োজন করে। এ জন্য পার্লামেন্টে বিভিন্ন প্রস্তাব এনে তাঁরা সেদিকেই গতিপথ ঠিক করে দেওয়ার কৌশল নিয়েছেন।
ব্রেক্সিট কার্যকর করতে দীর্ঘ প্রায় ১৮ মাসের সমঝোতার পর ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছান ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে। পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠ এমপির সমর্থন পেলে তবেই কার্যকর হবে এই চুক্তি। গত বছরের ১১ ডিসেম্বর চুক্তি অনুমোদন প্রশ্নে পার্লামেন্টে ভোটাভুটি হওয়ার কথা ছিল। এমপিদের তুমুল বিরোধিতা আঁচ করে হেরে যাওয়ার আশঙ্কায় প্রধানমন্ত্রী মে একেবারে শেষ মুহূর্তে ভোটাভুটি পিছিয়ে দেন। আগামী মঙ্গলবার (১৫ জানুয়ারি) ভোটাভুটির নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী ২৯ মার্চ ব্রেক্সিট কার্যকর হবে বলে দিনক্ষণ ঠিক করা রয়েছে।