কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
মাওবাদীদের যাবতীয় কার্যকলাপ এতদিন ভূমিতেই সীমাবদ্ধ ছিল। জঙ্গল এলাকায় ওঁত পেতে বাহিনীর গতিবিধির উপর নজর রাখত তারা। কিংবা গ্রামবাসীদের ভিতর থেকে ‘সোর্স’ তৈরি করে পুলিসের উপর নজরদারি চালাত। এই প্রথম আকাশপথে ড্রোনের মাধ্যমে নজরদারি শুরু করেছে মাওবাদীরা। যা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কাছে রীতিমতো ‘হুমকির’ বলেই মনে করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, মোকাবিলার ক্ষেত্রেও নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হচ্ছে নিরাপত্তাবাহিনীকে।
ছত্তিশগড়ের মাও অধ্যুষিত জেলা সুকমা। গত মাসে সেখানাকার কিস্তারাম ও পালোডিতে অবস্থিতি সিআরপি ক্যাম্পের উপর সন্দেহজনক ড্রোন নজরে আসে জওয়ানদের। পর পর তিনদিন দু’টি ক্যাম্পের উপর ঘোরাফেরা করছিল ড্রোন। সঙ্গে সঙ্গেই দু’টি ক্যাম্পের দায়িত্বে থাকা আধিকারিক অন্যান্য ক্যাম্পের কাছেও রিপোর্ট পাঠান। সূত্রের খবর, ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, ক্যাম্পের উপর উড়তে থাকা ড্রোনে হালকা সাদা ও লাল আলো দপদপ করে জ্বলছিল। শোঁ শোঁ শব্দে বেশ কয়েক পাক ঘুরে সেটি চলে যায়। তিনদিনে কমপক্ষে চারবার দেখা গিয়েছে ড্রোনের। এবং সেটি যে মাওবাদীরা নিয়ন্ত্রণ করছে, সে ব্যাপারে সিআরপিএফ একরকম নিশ্চিত। কিন্তু প্রশ্ন হল এই ধরনের নজরদারি ড্রোন মাওবাদীদের হাতে এল কী করে? গোয়েন্দারা মাস কয়েক আগেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কাছে একটি রিপোর্ট পাঠিয়েছিল। সূত্রের খবর, ওই রিপোর্টে বলা হয়েছিল, অন্ধ্রপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, ঝাড়খণ্ড সহ একাধিক জেলায় মাওবাদীরা নিরাপত্তা বাহিনী ও পুলিসের গতিবিধির উপর নজর রাখতে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের উপর জোর দিচ্ছে। তারা রিমোর্ট কন্ট্রোলে নিয়ন্ত্রিত ড্রোন সংগ্রহের চেষ্টা চালাচ্ছে। সেই সন্দেহ আরও গাঢ় হয় মুম্বইয়ের এক ব্যবসায়ীর উপর নজর চালিয়ে। ওই ব্যবসায়ী বেশকিছু উন্নত প্রযুক্তির ড্রোন অপরিচিত কয়েকজন ব্যক্তিকে বিক্রি করেন বলে গোয়েন্দারা মনে করছেন। ক্রেতাদের মধ্যে মাওবাদী ক্যাডারও ছিল বলে মোটামুটি নিশ্চিত গোয়েন্দারা।
সুকমার ড্রোন-কাণ্ড সামনে আসার পরেই নড়েচড়ে বসেছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। মাওবাদীদের ড্রোনের সঙ্গে মোকাবিলায় প্রতিটি বাহিনীর সমন্বয়ের উপর জোর দেওয়া হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নিরাপত্তা বাহিনীর এক আধিকারিক বলেছেন, ‘বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগের। ড্রোনের সাহায্যে বাহিনীর গতিবিধি সুনির্দিষ্ট করার কাজ আরও বেশি সহজ করে ফেলবে মাওবাদীরা। এবার নিখুঁত লক্ষ্যে হামলা চালাতে পারবে তারা। মাওবাদীদের এই নয়া কৌশলের সঙ্গে মোকাবিলা করাটা বেশ চ্যালেঞ্জেরও।’ এরই পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, মাওবাদী অধ্যুষিত এলাকায় এই ধরনের ড্রোন দেখা মাত্রই গুলি করে নামানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রতিটি বাহিনীকে। প্রয়োজনে ড্রোন-নিধনকারী অস্ত্র ‘স্কাই ফেন্স’ কিংবা ‘ড্রোন গান’ ব্যবহারের উপরও জোর দেওয়া হয়েছে।