গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
যদিও মোদির এই আশ্বাসে বিশ্বাস নেই বিরোধীদের। বিশেষত কংগ্রেসের। বৈঠক শেষে কংগ্রেসের রাজ্যসভার নেতা গুলাম নবি আজাদ পরিষ্কার করে দেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কথায় আমাদের বিশ্বাস নেই। মোদি সরকার বৈঠকে একরকম বলে। কিন্তু সংসদের কক্ষে অন্যরকম আচরণ করে। এর আগে এটা বারবার হয়েছে। তাই আমাদের দাবি না মানলে সংসদে আমরা সরব হবই।’ কংগ্রেসের লোকসভার নেতা অধীররঞ্জন চৌধুরি জানান, ‘আজকের সর্বদল বৈঠক ভালোই হয়েছে। কিন্তু সংসদের মধ্যে প্রায়ই সরকারের আচরণ বদলে যায়। তাই সংসদীয় মর্যাদা বজায় রেখে আমরা সাম্প্রতিক যাবতীয় ইস্যু তুলব। সরকারের কাছে জবাব চাইব।’
রবিবার সকাল সাড়ে দশটা থেকে বেলা একটা পর্যন্ত সংসদের লাইব্রেরি বিল্ডিংয়ে সর্বদলীয় বৈঠক চলে। গতকাল লোকসভার স্পিকারের পর আজ সংসদ বিষয়কমন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশি সর্বদল বৈঠক ডেকেছিলেন। যেখানে লোকসভা এবং রাজ্যসভা উভয়কক্ষেরই সংসদীয় দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। সেখানেই বিরোধীরা সরকারকে জানিয়ে দেন, অর্থনৈতিক মন্দা পরিস্থিতি, মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্ব থেকে শুরু করে পি চিদম্বরমের জেল, ৩৭০ ধারা বাতিল পরবর্তী কাশ্মীর পরিস্থিতির মতো ইস্যুতে তাঁরা সংসদে সরব হবেন। অধীররঞ্জন চৌধুরী বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি শাসন চলাকালীন কাশ্মীরে মুর্শিদাবাদের পাঁচজন শ্রমিককে সন্ত্রাসবাদীদের হাতে কেন প্রাণ হারাতে হল? এই ঘটনার পর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বা সরকারের পক্ষ থেকে কেন কোনও বিবৃতি দেওয়া হল না? কেন পাকিস্তানকে উদ্দেশ্য করে কোনও মন্তব্য দিলেন না প্রধানমন্ত্রী? এনিয়ে সংসদে সরব হব আমরা।’
শীতকালীন অধিবেশনে সরকার যে ২৭টি নতুন বিল আনছে, তার মধ্যে ‘দ্য সিটিজেনশিপ (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল ২০১৯’ অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ। এ নিয়ে সরকার এবং বিরোধীদের বিতণ্ডা বাধবে বলেই মনে করা হচ্ছে। রাজনৈতিক সূত্রে খবর, কংগ্রেস এবং তৃণমূল মনেপ্রাণে চাইছে, বিলটি এলেও তা সংসদীয় কমিটিতে যাক। আজকের সর্বদলীয় বৈঠকে ডিএমকে নেতা টি আর বালু মোদি সরকারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল আনা হচ্ছে, ভালো কথা। কিন্তু বিলটি নিয়ে তো স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকেরই পরামর্শদাতা কমিটির বৈঠকে কোনও আলোচনাই হয়নি। আগে সেখানে পাঠানো হোক।’ কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ বলেন, ‘সরকার একগুচ্ছ বিল আনবে বলে তালিকাবদ্ধ করেছে। কিন্তু এর আগের অধিবেশনে যা হয়েছে, তা এবার হতে দেব না। বিলকে যদি সংসদীয় কমিটিতে নাই পাঠানো হয়, তাহলে তা সংসদীয় গণতন্ত্র মেনে সকলের মতামত সমৃদ্ধ দেশের বিল কী করে হল? সেটা তো একজন অফিসারের লেখা বিল হয়ে গেল।’ যদিও সরকার সংসদীয় কমিটিতে এই বিলকে পাঠাতে আগ্রহী নয়। সরকারের যুক্তি, বিলটি নিয়ে যৌথ সংসদীয় কমিটি তৈরি হয়েছিল। তাদের মতামতও এসেছিল। তাহলে নতুন করে আবার কেন?
এদিনের সর্বদলীয় বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও। তাঁর সামনেই কংগ্রেস, ন্যাশনাল কনফারেন্স এবং এমডিএমকে’র রাজ্যসভার এমপি ভাইকো প্রশ্ন তোলেন, ‘কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা লোকসভার এমপি ফারুক আবদুল্লাকে কেন সংসদে আসতে দেওয়া হচ্ছে না?’ এনসি’র লোকসভার এমপি হাসনৈন মাসুদি কটাক্ষের সুরে বলেন, ‘অমিতজি আপনি তো কাশ্মীর নিয়ে চমক দিতে ভালোবাসেন। ফারুক আবদুল্লাকে আগামীকাল সংসদে এনে চমক দিতে পারবেন কি?’
বৈঠকের মধ্যেই চিদম্বরম প্রসঙ্গ তোলে কংগ্রেস। আর তাতেই অন্ধ্রপ্রদেশের ওয়াইএসআর কংগ্রেসের সঙ্গে তর্ক বেঁধে যায়। গুলাম নবি আজাদ বলেন, ‘অনেক এমপির বিরুদ্ধেই মামলা থাকে। কিন্তু সংসদে আসার অনুমতিও মেলে। চিদম্বরমের ক্ষেত্রে তা কেন হচ্ছে না?’ এর উত্তরে ওয়াইএসআর কংগ্রেসের এমপি মিধুন রেড্ডি বলেন, ‘কোনওভাবেই পি চিদম্বরমকে ছাড়া চলবে না। ইউপিএ যখন ক্ষমতায় ছিল তখন আমাদের নেতা জগনমোহন রেড্ডিকে ব্যাপক হেনস্থা করা হয়েছে।’ যদিও বিতর্ক বাড়ার আগেই অমিত শাহ উভয়কে শান্ত করতে বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমি কাউকেই খুশি করতে পারছি না। কারণ পি চিদম্বরম বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রয়েছেন। আমাদের হাতে কিছু নেই।’