বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
গত বছরের ২৮ সেপ্টেম্বরে সবরীমালা নিয়ে ঐতিহাসিক রায় শোনায় দেশের শীর্ষ আদালত। ধর্মীয় প্রথাকে দূরে সরিয়ে রেখে মন্দিরে সব বয়সী মহিলাদের প্রবেশের পক্ষে রায় শোনায় তৎকালীন প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রর নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ। তারপর সেই রায়ের পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে দাখিল হয় ৬৫টি আবেদন। এদিন ছিল সেই মামলার রায় প্রদান। সেখানে পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ ৩-২ রায়ে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে। এবং বিষয়টিকে বৃহত্তর সাত সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চে পাঠিয়ে দেয় প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের বেঞ্চ। পাশাপাশি বিচারপতি গগৈ, বিচারপতি এ এম খানউইলকর এবং বিচারপতি ইন্দু মালহোত্রা বলেন, শুধু সবরীমালা নয়, অন্যান্য ধর্মীয় স্থানেও মহিলাদের প্রবেশ নিষিদ্ধ রয়েছে।
এরপরেই রায়ের সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের একটি অংশ পড়ে শোনান বিচারপতি গগৈ। সেখানে তিনি বলেন, ধর্ম ও বিশ্বাস নিয়ে আবেদনকারীরা নতুন করে বিতর্ক তৈরি করতে চাইছেন। তিনি আরও বলেন, শুধু সবরীমালা নয়, মসজিদে মহিলাদের প্রবেশ এবং দাউদি বোহরা সম্প্রদায়ের মহিলাদের মধ্যে প্রচলিত সুন্নতের প্রথা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টকে সর্বজনীন নীতি গ্রহণ করা উচিত। তবে, এদিন পাঁচ সদস্যের বাকি দুই বিচারপতি আর এফ নরিম্যান এবং ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় পুনর্বিবেচনার যাবতীয় আবেদন খারিজ করে দেন।
অন্যদিকে, সুপ্রিম কোর্টের এদিনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে কেরলের রাজনৈতিক দলগুলি। এ বিষয়ে মহিলাদের নিরাপত্তা দিয়ে রাজ্য সরকারের বিষয়টিকে খুঁচিয়ে তোলা উচিত নয় বলে জানিয়েছেন কেরলের বিরোধী দলনেতা রমেশ চেন্নিথালা। তাঁর কথায়, ‘যেহেতু গত বছরের ২৮ সেপ্টেম্বরের রায়ে সুপ্রিম কোর্ট স্থগিতাদেশ দেয়নি, তাই নিষিদ্ধ বয়সসীমার মহিলাদের পাহাড়ী মন্দিরে নিয়ে গিয়ে এলডিএফ নেতৃত্বাধীন সরকারের পূর্বেকার অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়িত করা উচিত নয়।’ সুপ্রিম কোর্টের নয়া সিদ্ধান্ত পুণ্যার্থীদের বিশ্বাস সুরক্ষিত রাখবে বলে আশাপ্রকাশ করেছেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী উমেন চান্ডি।
তবে, মামলাটি বৃহত্তর বেঞ্চে স্থানান্তরিত হতেই বিজেপি বলেছে, নিশ্চয় আগের রায়ে কিছু ভুল-ত্রুটি ছিল, তাই এই সিদ্ধান্ত। দলের পদস্থ নেতা কুম্মানাম রাজশেখরন বলেন, ‘সরকারের সংযত আচরণ দেখানো উচিত এবং বৃহত্তর বেঞ্চের রায়ের জন্য অপেক্ষা করা উচিত। আর যদি নিষিদ্ধ বয়সসীমার মহিলারা আয়াপ্পা মন্দিরে পুজো দেওয়ার চেষ্টা করেন, তাহলে তাঁদের বাধা দেওয়া উচিত।’ সমাজকর্মী রাহুল ওসওয়ারন এদিনের সিদ্ধান্তকে ‘বিশ্বাসের পক্ষে রায়’ আখ্যা দিয়েছেন।