বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
দীর্ঘদিন রাজনৈতিক ময়দানে থাকলেও মমতা এবং অমিত শাহের মুখোমুখি বৈঠক এই প্রথম। এর আগে গান্ধীজির জন্মসার্ধশতর্ষ পালনের পরিকল্পনা বৈঠকে রাষ্ট্রপতি ভবনে উভয়ের দেখা হলেও কথা হয়নি। তাই এদিন মমতা-শাহ বৈঠক নিয়ে রাজনৈতিক মহলের আগ্রহ ছিল তুঙ্গে। বুধবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। ওই বৈঠকের পরেই অমিত শাহের সঙ্গে সাক্ষাতের সিদ্ধান্ত নেন মমতা। সেই মতো এদিন দুপুরে দেড়টায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অফিস নর্থব্লকে অমিত শাহ-মমতার বৈঠক হয়। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘একটা অংশ থেকে বাংলায় এনআরসি নিয়ে যে বার্তা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে, তা নিয়ে আমাদের কী মত, তা সকলেরই জানা। তবে আমি আজ এসেছিলাম অসমে এনআরসির চূড়ান্ত তালিকা থেকে যাঁদের নাম বাদ পড়েছে, তাঁদের নাম সংযুক্ত করার আবেদন নিয়ে।’ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এনআরসি থেকে যে ১৯ লক্ষ লোকের নাম বাদ পড়েছে তার মধ্যে অনেক বাংলাভাষী রয়েছেন। হিন্দি ভাষাভাষির পাশাপাশি গোর্খা ভাইবোনেরাও রয়েছে। তাঁদের কোনওভাবেই বাদ দেওয়া চলবে না। যাঁরা প্রকৃত ভোটার, তাঁদের দেশ থেকে তাড়ানো যাবে না। আচমকা ১৯ লক্ষ লোককে কেন তাড়িয়ে দেওয়া হবে? তাঁরা কোথায় যাবেন?’ পাশাপাশি মমতা বলেন, ‘বাংলায় এনআরসি নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কিছু বলেননি। আমি এসেছিলাম অসমের এনআরসি নিয়ে কথা বলতে।’
এনআরসি ইস্যুর পাশাপাশি এদিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে প্রথমবার মুখোমুখি বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গের সীমান্ত নিরাপত্তা প্রসঙ্গে আলোচনা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটানের মতো যে রাষ্ট্রগুলির সীমান্ত রয়েছে, তা সুরক্ষিত রাখার ব্যাপারে রাজ্যকে সবসময় সাহায্য করা হবে বলেই মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়ে দিয়েছেন অমিত শাহ। যদিও বৈঠকে জঙ্গলমহলের মাওবাদী অধ্যুষিত এলাকা নিয়ে কোনও কথা হয়নি।
এদিন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে রাজীব কুমার প্রসঙ্গ উঠেছে কি না, তা নিয়ে রাজ্য রাজধানীর কৌতূহল কম ছিল না। যদিও এ ব্যাপারে প্রশ্ন এড়িয়ে যান মমতা। বলেন, ‘এসব প্রশ্ন করবেন না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আমি এনআরসি নিয়ে কথা বলতে এসেছিলাম। অহেতুক অন্য বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করবেন না।’ অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক ছাড়াও এদিন সন্ধ্যায় দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সঙ্গে বৈঠক করেন মমতা। শুক্রবার কলকাতা ফিরছেন মুখ্যমন্ত্রী।
দিল্লিতে এসে প্রথমদিন রাজ্যের বকেয়া আদায়, দ্বিতীয়দিন অসমের এনআরসি। মুখ্যমন্ত্রীর দু’দিনের দিল্লি সফরের ঘোষিত এজেন্ডা এগুলি হলেও জল্পনা থামেনি বিজেপি তথা সরকারের দুই শীর্ষ কর্তার সঙ্গে ৪৮ ঘণ্টায় দুটি বৈঠকে মমতা ঠিক কী বার্তা দিয়ে গেলেন, তা নিয়ে! উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, দিল্লি সফরের প্রথম দু’দিনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটিও রাজনৈতিক বিবৃতি দেননি। তিনি স্পষ্টভাবে বোঝাতে চেয়েছেন এটি ছিল নিছকই সরকারি সফর।