সমৃদ্ধ দত্ত, নয়াদিল্লি, ১৬ সেপ্টেম্বর: আর্থিক মন্দা কাটাতে মরিয়া মোদি সরকার দেশি ও বিদেশি সংস্থাকে বেশি করে লগ্নিতে আগ্রহী করে তুলতে প্রয়োজনে এফডিআইয়ের দরজা আরও খোলার আভাস দিয়েছে। আজ বিশ্বের প্রথম সারির ইলেকট্রনিক্স সংস্থার কর্তারা কেন্দ্রীয় যোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদের বৈঠকে বলা হয়েছে গোটা বিশ্বে যেখানে রীতিমতো অস্থিরতা চলছে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে, সেখানে ভারত অনেক স্থিতিশীল। এবং ভারতই এখন আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রের উৎপাদন কেন্দ্র হয়ে ওঠার সবথেকে সঠিক স্থান। আজ এই বৈঠকে কেন্দ্রীয় সরকার অ্যাপল থেকে স্যামসাং, ডেল থেকে ওপ্পো, প্রতিটি সংস্থাকে অনুরোধ করেছে যাতে তারা নিজেদের প্রোডাক্টের উৎপাদন কেন্দ্র করে ভারতে। এবং শুধুমাত্র মোবাইল নয়, তারা যেন প্রতিরক্ষা, চিকিৎসা, রোবোটিকস এবং মেডিকেল ইলেকট্রনিক্সেও এগিয়ে আসে। রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেছেন, এফডিআই ব্যবস্থা ইতিমধ্যেই অনেকটা শিথিল করা হয়েছে। এই সুবিধা প্রদান ক্রমাগত আরও বাড়বে। তিনি কর্পোরেট কর্তাদের বলেছেন, আমাদের সরকার গ্রোথ ও লগ্নিবান্ধব পরিবেশ তৈরি করতে বদ্ধপরিকর। প্রসঙ্গত একদিকে যেখানে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন একের পর এক ঘোষণা করে চলেছেন আর্থিক মন্দার মোকাবিলায়, অন্যদিকে সেখানেই প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে প্রতিটি মন্ত্রককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে প্রত্যেক সপ্তাহে নিয়ম করে অর্থনীতির উন্নয়নে লাগাতার বৈঠক ও সম্মেলন করা হয়।
শিল্প বাণিজ্য মন্ত্রী পীযুষ গোয়েল থেকে শ্রমমন্ত্রী সন্তোষ গাঙ্গোয়ারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রতি মাসের একটি করে সমীক্ষা তৈরি করতে। কোন সেক্টরে কী কী শিল্প লগ্নি হল এবং কর্মসংস্থানের কতটা পরিবেশ তৈরি করা গেল সেটা নিয়েই এই সমীক্ষা রিপোর্ট প্রতি মাসেই দেখবে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর। এদিকে শ্রমমন্ত্রী সন্তোষ গাঙ্গোয়ারের একটি মন্তব্যকে কেন্দ্র করে সরকারের অন্দরে এবং এনডিএ জোটের মধ্যে তীব্র আলোড়ন শুরু হয়েছে। বেরিলির এমপি সন্তোষ গাঙ্গোয়ার শ্রমমন্ত্রী হিসেবে একের পর এক বৈঠকে করে চলেছে শিল্পমহলের সঙ্গে। তিনি রবিবার বলেছেন, তাঁকে বিভিন্ন শিল্প সংস্থার পক্ষ থেকে থেকে বলা হয়েছে চাকরি কিংবা কর্মসংস্থানের অভাব নেই। কিন্তু উত্তর ভারতের রাজ্যগুলিতে যোগ্য কর্মী পাওয়া সমস্যা। গাঙ্গোয়ারের এই মন্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়েছে। বিরোধীরা যেমন সরকারকে চেপে ধরেছে, একইভাবে ক্ষুব্ধ হয়েছে বিজেপি ও সরকারের একাংশও। কারণ এভাবে বস্তুত উত্তর ভারতীয় যুবসমাজকে অসম্মান করা হচ্ছে বলে অভিযোগে করেছে কংগ্রেস। এই নিয়ে প্রবল হইচই শুরু হয়েছে।