দীর্ঘমেয়াদি সঞ্চয় ও ব্যবসা থেকে অর্থাগম যোগ। প্রেমের প্রস্তাব পেতে পারেন। পুজো পাঠে মন। ... বিশদ
এদিন ফেসবুক পোস্টে অমিত শাহের মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেন কেরলে মুখ্যমন্ত্রী। বিজয়নের কথায়, হিন্দি আমাদের দেশকে একত্রিত করে বলে যে দাবি করা হচ্ছে তা সসম্পূর্ণ অবাস্তব। হিন্দি সংখ্যাগরিষ্ঠ ভারতবাসীর মাতৃভাষা নয়। তাঁদের উপর হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার পদক্ষেপ দাসত্বের শামিল। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বিবৃতি অ-হিন্দিভাষী মানুষের মাতৃভাষার বিরুদ্ধে রণহুঙ্কার। দেশের দক্ষিণ, পশ্চিম ও পূর্বাংশ হিন্দিতে কথা বলে না। ওইসব এলাকায় হিন্দিকে প্রাথমিক ভাষা বানানো সেখানের মানুষের মাতৃভাষাকে খারিজের শামিল। ভাষার কারণে যেন কোনও ভারতীয় নিজেকে বিচ্ছিন্ন বোধ না করেন। বৈচিত্রকে গ্রহণ করার মধ্যেই ভারতের শক্তি নিহীত রয়েছে। সঙ্ঘ পরিবারকে তাদের বিভাজনের নীতি বর্জন করতে হবে। বিজয়নের দল সিপিএমের তরফে এদিন বলা হয়েছে, সংবিধানের অষ্টম তফসিলে তালিকাভুক্ত সব ভাষাই জাতীয় ভাষা। তাদের সমান গুরুত্ব দিতে হবে। কোনও একটি ভাষাকে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা আমাদের দেশের একতা ও অখণ্ডতাকে বিঘ্নিত করবে। এক দেশ, এক সংস্কৃতি, এক ভাষার আরএসএস ধারণা থেকে তৈরি হওয়া এধরনের প্রচেষ্টার তীব্র বিরোধিতা করা হচ্ছে আরএসএস পলিটব্যুরোর তরফে।
বিতর্কের সূত্রপাত গতকাল হিন্দি দিবসে অমিত শাহের একটি মন্তব্য ঘিরে। হিন্দির পক্ষে সওয়াল করতে গিয়ে তিনি বলেন, ভারতে বহু ভাষা রয়েছে এবং প্রতিটি ভাষার গুরুত্ব রয়েছে। কিন্তু গোটা দেশে একটি বিশেষ ভাষা থাকাটা খুবই প্রয়োজনীয় যা গোটা বিশ্বে দেশের পরিচিতি হবে। কেরলের মুখ্যমন্ত্রী সমালোচনা করলেও অমিত শাহের সুরেই কথা বলতে শোনা গিয়েছে এই দক্ষিণী রাজ্যটির রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খানকে। তাঁর ট্যুইট, ভাষা মানুষকে ঐক্যবদ্ধ ও অনুপ্রাণিত করে। আসুন আমাদের জাতীয় ভাষা হিন্দির মাধ্যমে আমাদের একতাকে শক্তিশালী করি। মাতৃভাষার সঙ্গেই হিন্দিকে আমাদের কর্মস্থলে ব্যবহার করি।
হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার অভিযোগে এদিন কড়া প্রতিক্রিয়া এসেছে কেরল কংগ্রেসের তরফেও। রাজ্যের প্রবীণ কংগ্রেস নেতা রমেশ চেন্নিথালা বলেন, ভাষার ভিত্তিতে সমাজে বিভেদ সৃষ্টি ও মানুষের মধ্যে বিভাজনের চেষ্টা চলছে। অমিত শাহের মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি মুলাপল্লি রামচন্দ্রনও। শাহের এক দেশ এক ভাষার তত্বকে সমালোচনা করে তিনি বলেন, এর ফলে ভাষার ভিত্তিতে দেশে বিভাজন তৈরি হবে। সিপিএম রাজ্য সম্পাদক কোডিয়ারি বালাকৃষ্ণন বলেন, দেশের সমৃদ্ধ সংস্কৃতিকে অগ্রাহ্য করে আরএসএস এক ভাষা ও এক সংস্কৃতি চাপিয়ে দিতে চাইছে। অমিত শাহের মন্তব্যের মাধ্যমে আরএসএসের সেই অ্যাজেন্ডাই প্রকাশ্যে চলে এসেছে।
এদিকে, এক দেশের এক ভাষা হিসেবে হিন্দি ভাষাকে প্রতিষ্ঠিত করার যে চেষ্টা কেন্দ্র করছে, তা কখনই সফল হবে না বলে জানালেন কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ। রবিবার তিনি জানান, আমাদের এখানে ‘এক দেশ এক কর’ ব্যবস্থা চালু হতে পারে। কিন্তু ‘এক দেশ এক ভাষা’ চালু করার যে পরিকল্পনা কেন্দ্র নিয়েছে, তা কখনই বাস্তবায়িত হবে না। কারণ, আমাদের দেশে বহু ভাষা চালু রয়েছে। এই ইস্যুতে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন ডিএমকে সভাপতি এম কে স্ট্যালিন। তিনি জানিয়েছেন, গায়ের জোরে দেশজুড়ে হিন্দি ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে কেন্দ্র। এর মধ্যে দিয়ে বিজেপি সরকারের স্বেচ্ছাচারী মনোভাবই প্রকাশ পেয়েছে। কেন্দ্রের এহেন সিদ্ধান্তের মোকাবিলায় বিরোধী দলগুলির একজোট হওয়ার প্রয়োজনীয়তার কথাও শোনা যায় তাঁর গলায়। কেন্দ্রীয় সরকারের এহেন মনোভাবের বিরোধিতা করেন পুদুচেরির মুখ্যমন্ত্রী ভি নারায়ণস্বামীও।