সমৃদ্ধ দত্ত, নয়াদিল্লি, ১৩ সেপ্টেম্বর: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেখানো পথে মোটর ভেহিকেলস আইন নিয়ে দেশজুড়ে প্রায় সিংহভাগ রাজ্যই কেন্দ্রের বিপরীত অবস্থান নেওয়ায় একদিকে যেমন মোদি সরকার অস্বস্তিতে পড়েছে, তেমনই আবার সম্পূর্ণ একা হয়ে গিয়েছেন সড়ক পরিবহণ মন্ত্রী নীতীন গাদকারি। ৩৭০ নং ধারা থেকে তিন তালাক, প্রতিটি সরকারি সিদ্ধান্তের সমর্থনে সরকারের মন্ত্রীরা কিংবা বিজেপি নেতা সরব হয়েছেন, প্রচার করেছেন। বিরোধীদের সমালোচনার জবাবেও পাল্টা যুক্তি দিয়েছেন, আক্রমণ করেছেন তীব্র কন্ঠে। কিন্তু এই প্রথম দেখা যাচ্ছে মোটর ভেহিকেলস সংশোধনী আইন পাশ হওয়ার পর অতিরিক্ত কঠোর জরিমানা নিয়ে রাজ্যে রাজ্যে সব পক্ষের সরকারই ওই আইন হুবহু মেনে নিয়ে প্রয়োগ করতে নারাজ, এমনকী বিজেপি শাসিত সরকারও জানিয়ে দিয়েছে তারা কেন্দ্রের আইন চালু করতে রাজি নয়। এই সময়ে একমাত্র আইনের পক্ষে সরকারের আত্মপক্ষ সমর্থনে সরব হয়েছেন শুধুমাত্র নীতীন গাদকারি একাই। অন্য কোনও মন্ত্রী, বিজেপি দল কিংবা নেতারা এই ব্যাপারে একপ্রকার নীরব। যেহেতু নীতীন গাদকারির মন্ত্রকের সিদ্ধান্ত, তাই দায় যেন একমাত্র তাঁরই। বিরোধী শাসিত রাজ্য প্রায় কেউই চালু করছে না নতুন মোটর ভেহিকেলস আইন। যে রাজ্যগুলি করছে তারা সকলেই জরিমানার পরিমাণ অনেক কম ধার্য করে আইন বলবৎ করছে। এই অবস্থায় নীতীন গাদকারি বলেছেন, রাজ্য সরকারগুলির উপরই সিদ্ধান্ত গ্রহণের ভার দিলাম আমরা। তারাই ঠিক করুক জণগণের স্বার্থে কোনটা ঠিক হবে। তিনি বলেছেন, আমরা এই আইন চালু করেছি দেশজুড়ে ঘটে চলা দুর্ঘটনা প্রতিরোধ করতে। সুতরাং রাজ্যগুলি যদি জরিমানা কম করেও সেই লক্ষ্য পূরণ করতে পারে তাহলে তাদের দায়িত্ব।
উল্লেখ্য, মোটর ভেহিকেলস সংক্রান্ত আইন নিয়ে সিদ্ধান্তগ্রহণের অধিকার রাজ্যের এক্তিয়ারভুক্ত। গাদকারি বলেছেন, তিনি রাজ্যগুলির সঙ্গে কথাও বলবেন। বোঝা যাচ্ছে কেন্দ্র নরম হওয়ার আভাস দিচ্ছে। সেক্ষেত্রে আবার কোনও নতুন সংশোধনী আসবে কিনা তা নিয়েও জল্পনা শুরু হয়েছে। মোটর ভেহিকেলস সংশোধনী আইন এবার কেন্দ্রীয় সরকার অনেক কঠোর করেছে। প্রতিটি আইন ভঙ্গের ক্ষেত্রেই জরিমানার অঙ্ক হয়েছে অনেক বেশি। রাজ্যগুলির আপত্তি এখানেই। কারণ কেন্দ্র আইন পাশ করলেও সাধারণ মানুষের ক্ষোভের আঁচ লাগবে রাজ্য সরকারের গায়ে। মহারাষ্ট্র ও ঝাড়খণ্ডে বিজেপি সরকার তাই আসন্ন বিধানসভা ভোটের আগে এই আইন চালুই করেনি। করলেও জরিমানা কমানো হবে বলে জানিয়েছে তারা।