নয়াদিল্লি, ৯ সেপ্টেম্বর: ভাগ্নে রাতুল পুরীর পর এবার মামা। আরও বিপাকে পড়তে চলেছেন মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথ। কারণ, ১৯৮৪ সালের দিল্লি শিখবিরোধী দাঙ্গায় কমল নাথের নাম থাকা একটি ফাইল পুনরায় খুলতে চলেছে কেন্দ্র। সে বিষয়ে সোমবারই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের থেকে সবুজ সঙ্কেত মিলেছে। ফলে, পি চিদম্বরমের পর কমল নাথকে নিয়ে আরও অস্বস্তিতে পড়তে চলেছে কংগ্রেস।
মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হিসেব কংগ্রেস কমল নাথের নাম চূড়ান্ত করতেই শিখবিরোধী দাঙ্গায় তাঁর জড়িত থাকার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। পাশাপাশি, মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথগ্রহণের দিন মধ্যপ্রদেশ ও পাঞ্জাবে দু’টি বিক্ষোভ সংগঠিত হয়েছিল। যদিও, কমল নাথ বরাবরই দাঙ্গায় তাঁর জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন। ১৯৮৪ সালে নিরাপত্তারক্ষীদের হাতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী খুন হওয়ার পর দিল্লি ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় শিখবিরোধী দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে। সেই দাঙ্গায় কমল নাথ ছাড়াও দিল্লি কংগ্রেসের জগদীশ টাইটলার, সজ্জন কুমারের বিরুদ্ধে উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। প্রসঙ্গত, শিখবিরোধী দাঙ্গা অন্য একটি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন সজ্জন কুমার।
মামলায় সাক্ষীদের অভিযোগ ছিল, মধ্য দিল্লির রাকাবগঞ্জ গুরুদ্বারের বাইরে একদল উত্তপ্ত জনতাকে উস্কানি দিচ্ছিলেন কমল নাথ। এবং তাঁর উপস্থিতিতেই শিখ সম্প্রদায়ের দু’জন প্রতিনিধি মারা যান। অথচ, দাঙ্গার তদন্তে গঠিত নানাবতী কমিশন তাঁর বিরুদ্ধে যথাযথ প্রমাণ না পাওয়ার জন্য কমল নাথকে ছেড়ে দিয়েছিল। দেশের এক প্রথম সারির ইংরেজি দৈনিকের সাংবাদিক সঞ্জয় সুরি সহ দু’জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছিল কমিশন। যেখানে প্রমাণিত হয়েছিল কমল নাথ ঘটনাস্থলে ছিলেন। কমল নাথও সে কথা স্বীকার করে জানিয়েছিলেন, রাকাবগঞ্জ গুরুদ্বারের বাইরে দাঁড়িয়ে উন্মত্ত জনতাকে শান্ত করছিলেন তিনি।
১৯৮৪ সালের দাঙ্গার নিষ্পত্তি হওয়া ২২০টিরও বেশি মামলার তদন্তে ২০১৬ সালে একটি বিশেষ তদন্তকারী দল গড়ে মোদি সরকার। সেইমতো দাঙ্গায় দোষী সাব্যস্ত হওয়া ৮৮ জনের সাজা গত বছর বহাল রেখেছিল দিল্লি হাইকোর্ট। পাশাপাশি, আদালতের রায়কে ‘ঐতিহাসিক’ আখ্যা দিয়ে সিনিয়র আইনজীবী এইচ এস ফুলকা জানান, দাঙ্গায় ৯৫ জনের দেহ উদ্ধার হলেও কেন একজনের বিরুদ্ধেও খুনের চার্জ আনা হল না, তা নিয়ে সমালোচলা করেছে হাইকোর্ট।
শিখবিরোধী দাঙ্গায় কমল নাথের নাম থাকা ফাইল খোলার সরকারি সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে এনডিএ জোটসঙ্গী শিরোমণি অকালি দল। তাদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হল জানিয়ে মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ইস্তফা দাবি করেছেন অকালি দলের দিল্লির বিধায়ক মজিন্দর সিং সিরসা। পাশাপাশি, কমল নাথের বিরুদ্ধে যে দু’জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্যপ্রমাণ দিয়েছিলেন, তাঁদেরও নিরাপত্তার দাবি জানিয়েছেন তিনি।