কর্মে অগ্রগতি ও নতুন কাজের বরাত প্রাপ্তি। আইটি কর্মীদের শুভ। মানসিক চঞ্চলতার জন্য বিদ্যাচর্চায় বাধা। ... বিশদ
‘জারপাল রানি’ আসলে পাক সেনার একটি জিপ। জারপাল পাকিস্তানের একটি জায়গা। তার নামেই এই নামকরণ। নাম শুনে যাই মনে হোক, এটি আসলে বিশ্ববিখ্যাত উইলিস জিপ। চাকচিক্যে নতুন গাড়িকেও হার মানাতে পারে এটি। গাড়িটির ধারে উর্দুতে কিছু লেখাও রয়েছে। উল্লেখ্য, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় প্রথমবার জিপ শব্দটিকে নিজেদের ট্রেডমার্ক বানিয়েছিল মার্কিন গাড়ি নির্মাতা সংস্থা উইলিস। প্রথমে সেনাবাহিনীর জন্যই এটি বানানো হতো।
১৯৭১ সালে ভারত-পাক যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনীর কাছ থেকে এটি ছিনিয়ে নিয়েছিল ভারতীয় সেনার তিন নম্বর গ্রেনাডিয়ার রেজিমেন্ট। একসময় বন্দুক লাগানো থাকত জিপটিতে। আজ সেসব কিছু নেই। মার্কিন জিপটি এখন রেজিমেন্টের যুদ্ধজয়ের প্রতীক। তাই যত্নআত্তিতে কোনও খামতি নেই। রেজিমেন্টের সঙ্গে দিব্যি ভারত ভ্রমণ সেরে ফেলেছে গাড়িটি। এখনও সেটি ব্যবহারযোগ্য।
একসময় এই রেজিমেন্টের দায়িত্বে ছিলেন সেনা পদকজয়ী অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল জে এস ধিলোঁ। বর্তমানে তিনি গুলমার্গের ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট এব স্কিয়িং অ্যান্ড মাউন্টেনিয়ারিংয়ের অধ্যক্ষ। গাড়িটির প্রসঙ্গে জানালেন, ‘আমরা জারপাল যুদ্ধের সময় এটিকে নিজেদের হেফাজতে নিই। পাকিস্তানের জারপাল এলাকার কাছে শাকারগড় সীমান্ত আক্রমণের সময় এটি ব্যবহার করেছিল পাক সেনা। এই যুদ্ধে দু’জনকে পরমবীর চক্র পদক দিয়ে সম্মানিত করেছিল ভারত সরকার।’ উল্লেখ্য, এই পরমবীর চক্রজয়ীরা হলেন, গ্রেনাডিয়ার রেজিমেন্টের কর্নেল হোশিয়ার সিং এবং আর্মার্ড রেজিমেন্টের সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট অরুণ ক্ষেত্রপাল।
সেই থেকেই গাড়িটিকে যুদ্ধজয়ের স্মারক হিসেবে ব্যবহার করছে তিন নম্বর গ্রেনাডিয়ার রেজিমেন্ট। ভিআইপি অতিথিদের প্রদর্শনী এবং শীর্ষ আধিকারিকদের গার্ড অব অনার দেওয়ার কাজে ব্যবহার করা হয় ‘জারপাল রানি’কে। রেজিমেন্ট জয়পুর, সিমলা, কুপওয়ারা, মীরাট- যেখানেই গিয়েছে, সেখানেই সঙ্গী হয়েছে ‘জারপাল রানি’। অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল জে এস ধিলোঁ আরও জানিয়েছেন, ১৯৮৮ সালে রেজিমেন্ট যখন পাঞ্জাবের ফিরোজপুরে ছিল, তখন সেটিকে পাঞ্জাব পরিবহণ দপ্তরের অধীনে নথিভুক্ত করা হয়। একমাত্র ইথিওপিয়ায় রাষ্ট্রসঙ্ঘের অভিযান বাদ দিলে জিপটি সব জায়গায় তাঁদের রেজিমেন্টের সঙ্গে ছিল। উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে সমর্থন করে ভারত। যাকে কেন্দ্র করে শুরু হয় ভারত-পাক যুদ্ধ। সেই যুদ্ধে শেষ হাসি হেসেছিল ভারতই।