ঝগড়া এড়িয়ে চলার প্রয়োজন। শরীর স্বাস্থ্য বিষয়ে অহেতুক চিন্তা করা নিষ্প্রয়োজন। আজ আশাহত হবেন না ... বিশদ
দেশের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মামলার আইনজীবী ছিলেন তিনি। রাজ্যসভার ছ'বারের সদস্য রাম জেঠমালানি এনডিএ সরকারে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর দায়িত্ব সামলেছেন। ১৯৯৮ সালে বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ মন্ত্রিসভায় যোগ দেন। পরে ১৯৯৯ সালের অক্টোবরে আবারও মন্ত্রিসভায় যোগদান। ২০০০ সালের জুলাই মাসে তিনি অটলবিহারী বাজপেয়ী সরকার থেকে বেরিয়ে আসেন। পাশাপাশি তিনি বার কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়ার সভাপতিও ছিলেন। উল্লেখ্য, সুপ্রিম কোর্টের ‘হায়েস্ট পেড’ আইনজীবী ছিলেন জেঠমালানি।
প্রাক্তন এই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। তিনি বলেছেন, রাম জেঠমালানির আকস্মিক মৃত্যুতে তিনি শোকাহত। তাঁর স্বভাবসিদ্ধ বাগ্মীতা দিয়ে জনসাধারণের সমস্যার কথা সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলার জন্য চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন। দেশ একজন পণ্ডিত ও বিচক্ষণ ব্যক্তিত্বকে হারাল। শোকপ্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও। শোকবার্তায় তিনি জানান, ভারত একজন ব্যতিক্রমী আইনজীবীকে হারাল এবং একজন কিংবদন্তি ব্যক্তিকে যিনি আদালত ও সংসদ, দু'জায়গাতেই বিরাট অবদান রেখেছেন। তিনি রসিক, সাহসী ছিলেন এবং কখনও কোনও বিষয়ে নিজের মত প্রকাশ করতে ভয় পেতেন না। জেঠমালানিজির আরও একটা গুণ হল তিনি মনের কথা বলার ক্ষমতা রাখতেন। এবং সেটা করতেন ভয় না পেয়ে। জরুরি অবস্থার কালো দিনগুলোতে ব্যক্তিস্বাধীনতার জন্য তাঁর লড়াই স্মরণীয় হয়ে থাকবে। দরিদ্র মানুষকে সাহায্য করা তাঁর চরিত্রের প্রাথমিক গুণ।
শোকজ্ঞাপন করে কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশংকর প্রসাদ জানান, বর্ষীয়ান আইনজীবী ও প্রাক্তন আইনমন্ত্রী রাম জেঠমালানির প্রয়াণে গভীর শোক প্রকাশ করছি। তাঁর তেজস্বিতা, বাগ্মীতা, শক্তিশালী ওকালতি এবং আইনের অসাধারণ জ্ঞান আইনি পেশায় এক মূল্যবান উদাহরণ হয়ে থাকবে। তাঁর পরিবারকে আমার গভীর সমবেদনা জানাই।
তাঁর বাড়ি গিয়ে প্রাক্তন এই মন্ত্রীকে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়ে আসেন উপ রাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নাইডু, স্বরাস্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। শোকজ্ঞাপন করে অমিত শাহ বলেন, রাম জেঠমালানির প্রয়াণ গোটা দেশের আইন সমাজের কাছে অপূরণীয় ক্ষতি। আইন বিষয়ে তাঁর প্রগাঢ় জ্ঞানের জন্য চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন। আমরা এক বিশিষ্ট আইনজীবীর পাশাপাশি একজন প্রাণবন্ত মানুষকেও হারালাম। তাঁর শোকতপ্ত পরিবারকে সান্ত্বনা জানাই।
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল তাঁর শোকবার্তায় দুঃখপ্রকাশ করে জানান, রাম জেঠমালানি নিজেই একটি প্রতিষ্ঠান৷ স্বাধীনতার পরবর্তী ভারতে ফৌজদারি আইনকে সংগঠিত করেছিলেন তিনি৷ তাঁর শূন্যতা কখনওই পূরণ হবে না ৷ আইনের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে তাঁর নাম লেখা থাকবে ৷
শোকজ্ঞাপন করে তাঁর পরিবারকে সমবেদনা জানান পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শোকবার্তায় তিনি জানান, বিশিষ্ট আইনজীবী, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় আইন এবং নগরোন্নয়নমন্ত্রী রাম জেঠমালানির মৃত্যুতে আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি। দিল্লিতে গেলে আমাদের প্রায়ই সাক্ষাৎ হত। তাঁর মৃত্যু আইন ও রাজনৈতিক জগতের এক অপূরণীয় ক্ষতি। আমি রাম জেঠমালানির পরিবার- পরিজন ও অনুরাগীদের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি ।
১৯২৩ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন রামজেঠমালানি। মাত্র ১৭ বছর বয়সেই আইনের ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। দেশভাগ হওয়ার আগে পর্যন্ত করাচিতে প্র্যাকটিস করতেন। দেশভাগের পর একজন শরণার্থী হিসাবে তিনি মুম্বই (তৎকালীন বম্বে) চলে আসেন। এরপর পরিবারকে নিয়ে নতুন করে শুরু হয় তাঁর জীবন। বহু আলোড়ন ফেলে দেওয়া মামলায় তিনি আইনজীবী হিসেবে অংশ নিয়েছিলেন।যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, লালুপ্রসাদ যাদব, অরবিন্দ কেজরিওয়ালের মতো বহু শীর্ষ রাজনীতিকের দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলাও।