বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
শনিবারও কাশ্মীরজুড়ে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। আধিকারিকরা জানিয়েছেন, গতকাল সন্ধ্যা থেকেই শ্রীনগর সহ কয়েকটি টেলিফোন এক্সচেঞ্জ ল্যান্ডলাইন পরিষেবা চালু করেছে। কিছু এলাকায় পরিষেবা পুনরায় চালু না হলেও, তার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। শীঘ্রই সেগুলি পুনঃসংযোগ করা হবে। যদিও, লালচকের মতো বাণিজ্য কেন্দ্র এবং প্রেস এনক্লেভে এখনও পরিষেবা চালু হয়নি। আরও আটটি টেলিফোন এক্সচেঞ্জের অধীনে থাকা ৫,৩০০টি ল্যান্ডলাইন সপ্তাহান্তে চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যসচিব এবং সরকারি মুখপাত্র রোহিত কানসাল। তবে মোবাইল এবং ইন্টারনেট এখনও বন্ধ রয়েছে। আজ মিলিয়ে টানা ২১ দিন ধরে বন্ধ কাশ্মীরের বাজারগুলি। চালু হয়নি সরকারি বাস পরিষেবা। তবে শহরের কিছু জায়গায় ছোট ছোট স্টল খুলে বসেছেন বিক্রেতারা।
অন্যদিকে, ৩৭০ ধারা খারিজের সমর্থনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মিছিল করেছেন প্রবাসী কাশ্মীরি পণ্ডিতরা। গত সপ্তাহে আটলান্টায় সংবাদমাধ্যম সিএনএনের সদর দপ্তরের সামনে থেকে ওই মিছিল করা হয়। কাশ্মীরি পণ্ডিতদের পাশাপাশি ভারতীয়-মার্কিন সম্প্রদায়ের অন্যান্য সদস্যরাও মিছিলে যোগ দিয়েছিলেন। ন্যাশনাল ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশনসের প্রাক্তন সভাপতি তথা আটলান্টা নিবাসী কাশ্মীরি বংশোদ্ভূত সুবাস রাজদান জানিয়েছেন, জম্মু ও কাশ্মীরের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত এবং কাশ্মীরি সংখ্যালঘুদের জন্য তীব্র বৈষম্যমূলক এই অস্থায়ী ধারাগুলির পরিবর্তনের প্রয়োজন ছিল। মিছিলে এই তথ্যই তুলে ধরা হয়েছে। এর জন্য মোদি সরকারকে ধন্যবাদও জানিয়েছেন তাঁরা।
এদিকে, কেন্দ্রের বিরুদ্ধে জোর করে কাশ্মীরে ভৌগোলিক পরিবর্তন এবং ঔপনিবেশিক কলোনি গড়ার অভিযোগ তুলেছেন বিচ্ছিন্নতাবাদী হুরিয়ত কনফারেন্সের চেয়ারম্যান সৈয়দ আলি শাহ গিলানি। যা সমস্ত আন্তর্জাতিক আইন এবং রাষ্ট্রসঙ্ঘের প্রস্তাবনা বিরোধী। এই জটিল পরিস্থিতিতে জম্মু ও কাশ্মীরবাসীকে প্রতিরোধের ডাক দিয়েছেন তিনি। গত শুক্রবার জারি করা এক বিবৃতিতে গিলানি জানিয়েছেন, প্রতিরোধ করতে গিয়ে আমাদের অত্যন্ত সুশৃঙ্খল থাকতে হবে। শত্রু অস্ত্র হাতে মারার জন্য তৈরি রয়েছে। তাদেরকে কোনওরকম অজুহাত তুলে দেওয়া উচিত হবে না।
৩৭০ ধারা খারিজের প্রতিবাদে এদিন সরব হয়েছেন সিপিআইয়ের সাধারণ সম্পাদক ডি রাজা। এনডিএ সরকারের সিদ্ধান্তকে অসাংবিধানিক এবং অগণতান্ত্রিক বলেই দাবি করেছেন তিনি। এদিন হায়দরাবাদে দলের বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন রাজা। গতকাল বিরোধী দলগুলির ১১ জনের প্রতিনিধিকে শ্রীনগর বিমানবন্দর থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। সেই দলে ছিলেন রাজা। এদিন কাশ্মীর প্রসঙ্গে তিনি জানান, ‘কাশ্মীরের এই পরিস্থিতি মোটেই স্বাভাবিক নয়। মানুষের এটা বোঝা উচিত। ওখানে কোনও টেলিফোন কাজ করছিল না। সরকার বলছে যে, ল্যান্ডলাইন কাজ করছে। কিন্তু তা সত্যি নয়, আমরা চেষ্টা করেছিলাম। ইন্টারনেট, টেলিফোন কিছুই কাজ করছে না। স্কুল-কলেজ খোলা অথচ পড়ুয়ারা যাচ্ছে না। অভিভাবকাও ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাতে চাইছেন না। মানুষ হাসপাতাল যেতে পারছেন না।’ যদি সব কিছু স্বাভাবিক থাকে, তাহলে কাশ্মীরে এখনও কার্ফু জারি রয়েছে কেন, সেই প্রশ্নও তুলেছেন তিনি।