বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
প্রথম মোদি সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন লুটিয়েন্স দিল্লির দুঁদে এই আইনজীবী। তবে শারীরিক অবস্থা ভালো যাচ্ছিল না তাঁর। দুর্বলতার জন্য নিয়ম ভেঙে কেন্দ্রীয় বাজেট পড়েছিলেন আসনে বসে। গত বছর ১৪ মে এইমসে তাঁর যকৃৎ প্রতিস্থাপন করা হয়। তার পরও অবশ্য শারীরিক অবস্থার তেমন উন্নতি হয়নি। এরপর চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে নিউ ইয়র্কে ফের হাসপাতালে ভর্তি হন অরুণ জেটলি। দীর্ঘ সেই চিকিৎসা প্রক্রিয়া সেরে দেশে ফিরে এলেও প্রথম মোদি সরকারের শেষ বাজেটে অংশ হতে পারেননি তিনি। নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর তিনি তাঁর শারীরিক অবস্থার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছিলেন যে তাঁকে যেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় না রাখা হয়।
২৮ ডিসেম্বর ১৯৫২ সালে দিল্লিতে জন্মগ্রহণ করেন অরুণ জেটলি। দিল্লির এক অভিজাত ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে পড়া শেষ করে ভর্তি বিকমে ভর্তি হন শ্রীরাম কলেজ অব কমার্সে। সেখানেই তাঁর ছাত্র রাজনীতিতে প্রবেশ। সদস্য হন আরএসএসের ছাত্র সংগঠন এবিভিপির। পরে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সভাপতিও হয়েছিলেন। আরও পরে তাঁকে এবিভিপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক করা হয়। রাজনীতির পাশাপাশি পড়াশোনাও চালিয়ে গিয়েছেন জেটলি। ১৯৭৭ সালে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই এলএলবির ডিগ্রি পান। রাজনীতির পাশাপাশি শুরু হয় আইনজীবী হিসেবে পথ চলা। ১৯৮৯ সালে ভিপি সিংয়ের সরকার তাঁকে অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল নিযুক্ত করে। বোফর্স কেলেঙ্কারি মামলার তদন্তে নথিপত্র সংক্রান্ত কাজের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। পরে একাধিক রাজনৈতিক নেতা (শারদ যাদব, এল কে আদবানি, মাধবরাও সিন্ধিয়া)-র হয়ে গুরুত্বপূর্ণ মামলার আইনজীবী নিযুক্ত হয়েছিলেন। পাশাপাশি একাধিক মামলায় একটি মার্কিন বহুজাতিক ঠান্ডা পানীয় সংস্থার প্রতিনিধিত্বও করেছিলেন। এরমধ্যেই তাঁর রাজনৈতিক উত্থানও ঘটতে শুরু করে। ১৯৯১ সালে তাঁকে জাতীয় কার্যকরী কমিটির সদস্য করে বিজেপি। প্রথম এনডিএ সরকারের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকের দায়িত্ব সামলেছিলেন। ২০০৯ সালে দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারের আমলে রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা নিযুক্ত হওয়ার পর ২০০৯ সালে আইনজীবী জীবনে দাঁড়ি টানেন অরুণ জেটলি। রাজ্যসভায় তাঁর গঠনমূলক বিরোধিতা নজর কেড়েছিল। অরুণ জেটলির নম্র কিন্তু দৃপ্ত কণ্ঠে তথ্যনিষ্ট বক্তব্য শাসক-বিরোধী উভয়পক্ষরই প্রশংসা কুড়িয়েছে।
২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন সরকারে প্রথমে অর্থ, প্রতিরক্ষা ও কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রকের দায়িত্ব পান অরুণ জেটলি। পরে প্রতিরক্ষা তাঁর হাত থেকে সরিয়ে নেওয়া হলেও অর্থমন্ত্রকের গুরুদায়িত্ব সামলেছেন মিথভাসী এই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। তাঁর মন্ত্রিত্বে থাকাকালীনই নোটবন্দি, জিএসটির মতো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তবে দ্বিতীয় এনডিএ সরকারের মাঝামাঝি সময় থেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তিনি।