বিমাসূত্রে ধনাগম হতে পারে। প্রেম-প্রণয়ে আনন্দ। কাজকর্মে অগ্রগতি ও সুনাম। ... বিশদ
সাম্প্রতিক পেশ হওয়া বাজেটে ‘সুপার রিচ ট্যাক্স’ নামে পরিচিত ‘লং টার্ম’ ও ‘শর্ট টার্ম’ মূলধনী লাভের উপর অতিরিক্ত সারচার্জ ধার্য করেছিল মোদি সরকার। এদিন সেই সারচার্জ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী আভাস দিয়েছেন, আগামীদিনে ব্যক্তিগত ও শিল্পসংস্থা উভয় ক্ষেত্রেই সারচার্জ প্রত্যাহার করা হবে বলে। অর্থমন্ত্রীর মতে বিশ্বজুড়ে আর্থিক মন্দা চলছে। বিশ্বে জিডিপি বৃদ্ধির হার সাড়ে ৩ শতাংশ। সেখানে তাঁর দাবি ভারতের আর্থিক উন্নয়ন এখনও যথেষ্ট তেজি। মুখে একথা বললেও শিল্পসংস্থা ও লগ্নিকারীদের বার্তা দিয়ে সীতারামন বলেছেন, ভারতের অর্থনীতিতে ব্যবসা করা অনেক সুবিধাজনক। যে দুটি সিদ্ধান্তকে উন্নয়নের প্রতীক হিসেবে মোদি সরকার সবথেকে বেশি প্রচার করেছিল, সেই জিএসটি এবং নোটবাতিলের অভিঘাত যে শিল্পের পক্ষে মোটেই সুখকর হয়নি, সেকথা আজ স্বীকারই করা হয়েছে অর্থমন্ত্রকের পক্ষ থেকে। কারণ, সবথেকে বেশি সংশোধন করা হয়েছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প সংক্রান্ত নানাবিধ ঘোষণা ও জিএসটি ব্যবস্থা।
এমনকী, এমএসএমই আইন সংশোধনের ঘোষণাও করা হয়েছে আজ। জিএসটি যে দেশীয় ব্যবসাকে বেশ কিছু ক্ষেত্রে প্রবলভাবে আঘাত করেছে সেটা অবশেষে সরকার বুঝতে পেরেছে। আজ অর্থমন্ত্রী বলেন, জিএসটি কাউন্সিলের সঙ্গে রবিবার বৈঠক ডাকা হয়েছে। কী সমস্যা হয়েছে তা জানার জন্য। জিএসটি ফাইল প্রক্রিয়া সরল হবে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকে চাঙ্গা করতেই হবে। শিল্পসংস্থাকে স্বস্তি দিতে একধাক্কায় ১৪০০ মামলা প্রত্যাহার করা হচ্ছে বলেও জানানো হয়েছে। কোম্পানিদের বিরুদ্ধে মামলা কমানো হবে। বস্তুত আজ নির্মলা সীতারামনের প্রতিটি বাক্য থেকেই স্পষ্ট যে শিল্পসংস্থার প্রতি কঠোর মনোভাব দেখানোর রাস্তা থেকে সম্পূর্ণ পিছু হটছে কেন্দ্র। এমনকী কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপন্সিবিলটি বা সিএসআর লঙ্ঘন করা হলে সেটাকেও আর আইনি অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হবে না বলে সাফ জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। সেকারণেই ‘ক্যাপিট্যাল গেইনস’ বা মূলধনী লাভ থেকে বর্ধিত সারচার্জ কমানো হচ্ছে।
সাম্প্রতিক বাজেটে চালু হওয়া ক্যাপিট্যাল গেইনসের উপর নতুন সুপার রিচ ট্যাক্স প্রত্যাহার করে নেওয়া হচ্ছে। স্টার্ট আপ করতে গেলে যে নয়া ট্যাক্স আরোপ করা হয়েছিল বাজেটে, সেই অ্যাঞ্জেল ট্যাক্সও এদিন বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। ব্যাঙ্ক, এমএসএমই, এনবিএফসির ক্ষেত্রে ৭০ হাজার কোটির প্যাকেজ দেওয়া হচ্ছে। সেইসঙ্গে যে কোনও ব্যাঙ্ক রেট কাটের সুবিধা পাবে সাধারণ মানুষ। বাড়ি ও গাড়ির ইএমআই কমানো হবে সরাসরি রেপো রেট কমানোর সঙ্গে। যে কোনও লোন ক্লোজারের ১৫ দিনের মধ্যে লোন সমাপ্ত হওয়ার নথিপত্র গ্রাহককে দিয়ে দিতে হবে।
আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও হাউজিং ফাইনান্স কর্পোরেশনকে বাড়ি, গাড়ি কেনার জন্য অতিরিক্ত ২৫ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হবে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য সমস্ত বকেয়া জিএসটি টাকা ৩০ দিনের মধ্যে ফেরত দিতে হবে। এমএসএমই আইনের সংশোধন করা হবে। অর্থমন্ত্রী স্বীকার করেছে অটোমোবাইল সেক্টর মন্দায় পড়েছে। তিনি বলেন এটা নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। ২০২০ সাল মার্চ পর্যন্ত কেনা গাড়ি নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। বি এস ফোর সব গাড়ির বিক্রি ও রেজিস্ট্র চলবে।
অটোমোবাইল সেক্টরকে চাঙ্গা করতে অভিনব ব্যবস্থা হয়েছে। অর্থমন্ত্রী বলেন, সরকারি দপ্তরগুলির সমস্ত পুরনো গাড়ি ছেড়ে দিয়ে নতুন গাড়ি কিনবে। আজ গ্রহণ করা সিদ্ধান্তই শেষ নয়। আগামীদিনে এরকম আরও কিছু ঘোষণা করা হবে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রোমোটারদের টাকা দিয়ে দেশের বিশেষ করে দিল্লি ও সংলগ্ন এলাকার লক্ষ লক্ষ মানুষ নিজেদের ফ্ল্যাট পাচ্ছেন না। এবার তাদের কষ্টার্জিত অর্থে ক্রয় করা ফ্ল্যাট যাতে নির্মিত হয়ে যায় সেই উদ্যোগে নেবে সরকার।