কোনও কিছুতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ভাববেন। শত্রুতার অবসান হবে। গুরুজনদের কথা মানা দরকার। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সুফল ... বিশদ
গত শনিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক মুখপাত্র জানিয়েছিলেন, শ্রীনগর ও বারামুলায় বিক্ষিপ্ত কিছু বিক্ষোভের ঘটনা ঘটলেও, সেটির একটিতেও ২০ জনের বেশি মানুষের জমায়েত হয়নি। যদিও, কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর দাবি ছিল, উপত্যকায় মানুষ ভয়ঙ্কর বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমেও ১০ হাজার মানুষের জমায়েতের খবর প্রকাশিত হয়েছিল। এরই প্রেক্ষিতে জম্মু ও কাশ্মীরের পুলিস প্রধান দিলবাগ সিংকে প্রশ্ন করা হলে তিনি সাফ জানান, কয়েকটি বিক্ষিপ্ত পাথর ছোঁড়ার ঘটনা ঘটেছে ঠিকই। কিন্তু সেগুলো বড় কিছু নয়। অন্যদিকে, খোদ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকও ১০ হাজার মানুষের জমায়েতের খবরকে ‘ভুল এবং অতিরঞ্জিত’ তকমা দিয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীর পুলিস ট্যুইট করে জানিয়েছে, উপত্যকার পরিবেশ শান্তিপূর্ণই রয়েছে। কোথাও কোনও হিংসার খবর নেই।
গত সোমবার থেকে টানা পাঁচদিন জারি থাকার পর শুক্রবারই জম্মু ও কাশ্মীরের বিভিন্ন এলাকা থেকে ১৪৪ ধারার নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছিল। সেই সঙ্গে বেশ কিছু অঞ্চলে জারি থাকা কার্ফুও শিথিল করা হয়। সোমবার ঈদের উৎসবে মানুষ যাতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে শামিল হতে পারেন, তা নিশ্চিত করাই উদ্দেশ্য প্রশাসনের। শনিবার শ্রীনগর শহরে প্রচুর মানুষকে রাস্তায় নেমে ঈদের কেনাকাটা করতে দেখা যায়। রবিবার মানুষকে ঈদের শুভেচ্ছা জানান রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক। শুভেচ্ছা বার্তায় রাজ্যপাল আশাপ্রকাশ করেন, এই উৎসব জম্মু ও কাশ্মীরের শতাব্দীপ্রাচীন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধনকে আরও মজবুত করবে। জম্মু ও কাশ্মীরের শান্তি, সমৃদ্ধি ও উন্নতির জন্য প্রার্থনাও করেন রাজ্যপাল।
রবিবার উপত্যকার বেশকিছু ব্যাঙ্ক, এটিএম এবং বাজার খোলা ছিল। প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, ঈদের কুরবানির খাতিরে আমজনতাকে সরবরাহের জন্য আড়াই লক্ষ ছাগল মজুত রাখা হয়েছে। শ্রীনগরে গড়ে ওঠা ছ’টি ‘মাণ্ডি’তে সেগুলি বিক্রি হবে। এছাড়া মানুষের দরজায় দরজায় ঘুরে শাক-সব্জি, এলপিজি সিলিন্ডার, পোল্ট্রি এবং ডিম সরবরাহের জন্য মোবাইল ভ্যানেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানান ওই আধিকারিক। ঈদের উৎসবের আনন্দে যাতে ভাটা না পড়ে, তাই ছুটির দিনেও প্রশাসনের তরফে ট্রেজারি, ব্যাঙ্ক ও এটিএমগুলি সচল রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এটিএমগুলিতে পর্যাপ্ত টাকা যাতে মজুত থাকে, সেদিকেও সজাগ দৃষ্টি দেওয়া হচ্ছে।
প্রশাসনের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, সমস্ত সরকারি কর্মচারীর বেতন এবং ঠিকা শ্রমিকদের মজুরি অগ্রিম মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি জেলার জেলাশাসকের তরফে ঈদের উৎসব উদযাপনের ঢালাও বন্দোবস্ত করা হয়েছে। সাধারণ মানুষের কাছে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী সরবরাহের জন্য জম্মু ও কাশ্মীরের মোট ৩ হাজার ৬৯৭টি রেশন ‘ঘাট’-এর মধ্যে সাড়ে তিন হাজারের বেশি রেশন ‘ঘাট’ সক্রিয় রয়েছে। সেনাবাহিনীর তরফেও সাধারণ মানুষের কাছে নিত্যপ্রয়োজনীয় এবং দরকারি জিনিসপত্র পৌঁছে দিতে ‘মিশন রিচ আউট’ অভিযান চালু করা হয়েছে।
অন্যদিকে, আগামী ১৮ আগস্ট হজ যাত্রা করে ফেরা ‘হাজি’দের অভ্যর্থনার জন্যও প্রশাসন ও পুলিসের তরফে বিরাট বন্দোবস্ত করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই উপত্যকার সমস্ত ডেপুটি কমিশনার তাঁদের নোডাল অফিসারদের বিমানবন্দরে ডিউটির জন্য বেছে নিয়েছেন। হজ-ফেরত তীর্থযাত্রীদের বিমানবন্দর থেকে নির্ঝঞ্ঝাটে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করবেন এই নোডাল অফিসাররা। এছাড়াও উৎসবের আবহে সাধারণ মানুষ যাতে প্রিয়জনদের সঙ্গে কথা বলতে পারেন তার জন্য ৩০০টি বিশেষ টেলিফোন বুথও তৈরি করা হয়েছে। সিআরপিএফের ‘মদতগার’ হেল্পলাইন নম্বরটি (১৪১১১) বদল করা হয়েছে। কোনওরকম সাহায্যের প্রয়োজন হলে বা কোনও তথ্য দেওয়ার থাকলে ‘৯৪৬৯৭৯৩২৬০’ নম্বরে ফোন করার আর্জি জানিয়েছে সিআরপিএফ।