কর্মে অগ্রগতি ও নতুন কাজের বরাত প্রাপ্তি। আইটি কর্মীদের শুভ। মানসিক চঞ্চলতার জন্য বিদ্যাচর্চায় বাধা। ... বিশদ
এবার কী হয়? এই প্রশ্ন বুকে নিয়েই শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টারের দিকে তাকিয়ে ছিল দেশ এবং গোটা বিশ্বও। কারণ? যে রকেটে করে এত গুরুত্বপূর্ণ একটি মিশনের যানগুলিকে মহাকাশে পাঠানো হচ্ছে, সেই জিএসএলভি মার্ক-থ্রি (ইসরো বিজ্ঞানীরা যাকে ভালোবেসে ফ্যাট বয় বা বাহুবলী বলে ডেকে থাকেন) এর আগে মাত্র দু’বার পরীক্ষিত। সেই সঙ্গে এই উৎক্ষেপণ যানের হাতেই রয়েছে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণার ভবিষ্যৎ অভিযান। কারণ এটিই এখন ভারতীয় বিজ্ঞানীদের কাছে সবচেয়ে শক্তিশালী উৎক্ষপণ যান।
তাই এই অভিযান ভারতীয় বিজ্ঞানীদের কাছে দ্বৈত পরীক্ষাও ছিল। প্রথমত, রকেটের সফল উৎক্ষেপণ, দ্বিতীয়ত অভিযানকে সাফল্যের মুখ দেখানো। সোমবারের এই সফল উৎক্ষেপণের পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ইসরোর সমস্ত বিজ্ঞানীদের অভিনন্দন জানিয়ে সাফল্যকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন। তার আগে অবশ্য সফল উৎক্ষেপণ প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে ইসরোর চেয়ারম্যান কে সিভান বলেন, এটা পুরোপুরি ইসরোর টিম ওয়ার্কের সাফল্য। ইঞ্জিনিয়ার থেকে প্রযুক্তিবিদ, বিজ্ঞানী সকলকে অভিনন্দন জানান তিনি। সিভান আরও বলেন, এটা যথেষ্ট কঠিন একটা সময় ছিল। গত ১৫ জুলাই প্রযুক্তিগত সমস্যায় উৎক্ষেপণ আটকে যাওয়ার পর ইসরোর গোটা পরিবার দিন-রাত এক করে উৎক্ষেপণ যানকে ঠিক করার কাজ চালিয়েছে। জিএসএলভি মার্ক-থ্রি’র এই সাফল্য আগামীদিনে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে আরও শক্তিশালী পদক্ষেপ হল বলেই তাঁর দাবি।
তিনি বলেন, এবারের অভিযানের অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ চন্দ্রযান-১ চাঁদের মাটিতে জলের সন্ধান পাওয়ার পর সেই গবেষণার কাজকেই আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে এই মিশন। সেই সঙ্গে এবারের অভিযানে ভারতীয় চন্দ্রযানের মধ্যে থাকা ল্যান্ডার (বিক্রম) এবং রোভার (প্রজ্ঞান) চাঁদের দক্ষিণ অংশে (অন্ধকার এলাকায়) নামতে চলেছে। এর আগে কোনও দেশ এই দক্ষিণ অংশে যান পাঠায়নি। ১৯৬৯ সালের ২০ জুলাই চাঁদের মাটিতে মানুষের প্রথম পা রাখার ঘটনার ৫০ বছরের মাথায় এমন ঘটনা ঘটতে চলেছে। ভারতের এই চন্দ্রযান-২ যদি সফলভাবে চাঁদের দক্ষিণ অংশে নামতে পারে, তাহলে আরও একটা ইতিহাস সৃষ্টি হবে। ১১০ বছর আগে প্রথমবার এক ব্রিটিশ অভিযাত্রী দল পৃথিবীর দক্ষিণ মেরুতে পদার্পণ করেছিল। আর প্রথম দেশ হিসেবে পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহের দক্ষিণাংশে পা দেবে ভারত।
তবে এর মাঝে এখনও অনেকটা কঠিন পথ পেরোতে হবে। ইসরোর চেয়ারম্যান কে সিভান জানিয়েছেন, আগে যে পথ ৫৪ দিনে অতিক্রম করার কথা ছিল, এখন সেই পথই ৪৮ দিনে অতিক্রম করতে হবে। তার উপর এই যাত্রাপথও খুব মধুর নয়। মাঝে অন্তত ১৫ বার যাত্রাপথ বদল করার প্রয়োজন রয়েছে। এমনকী পৃথিবীর কক্ষপথ থেকে চাঁদের কক্ষপথে যাওয়ার জন্য এক জায়গায় চন্দ্রযান-২’কে ঝাঁপও দিতে হবে। তাই সেই শেষ ১৫ মিনিট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলেই তিনি জানান।
গত এপ্রিলে উৎক্ষেপণ থেকে যাত্রাপথ সফলভাবে সম্পূর্ণ করেও চাঁদের মাটিতে নামার সময় ধ্বংস হয়ে যায় ইজরায়েলের চন্দ্রযান। তাই সতর্ক ভারতীয় মহাকাশ বিজ্ঞানীরাও।