নয়াদিল্লি, ১৭ জুলাই: ২০২৩ সালের এপ্রিলের মধ্যেই ভারত রাশিয়া থেকে এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ ক্ষেপণাস্ত্র পেয়ে যাবে। বুধবার লোকসভায় একথা জানিয়েছেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী শ্রীপদ নায়েক। প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ৫ অক্টোবর ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে প্রায় ৪০ হাজার কোটি ডলারের চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। কিন্তু, রাশিয়ার সামরিক রপ্তানির উপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা জারির কারণে অস্বস্তির সৃষ্টি হয়েছে। গত আগস্টে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি আইনে স্বাক্ষর করেছেন। তাতে বলা রয়েছে যে, কোনও দেশ রাশিয়ার সঙ্গে প্রতিরক্ষা বাণিজ্য ও গোয়েন্দা তথ্য বিনিময় করলে তাদের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, ২০১৪ সালে ক্রিমিয়াকে ইউক্রেন থেকে বিচ্ছিন্ন করা, সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে জড়িয়ে পড়া এবং আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নাক গলানোর জন্য রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে শিক্ষা দিতেই ট্রাম্প এই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। যদিও আমেরিকার যে সব মিত্র দেশ রাশিয়ার থেকে সামরিক অস্ত্র ও সরঞ্জাম কিনবে, তারাও এই আইনের আওতায় পড়ছে। এর মধ্যে অন্যতম হল ভারত। রাশিয়ার কাছ থেকে পাঁচটি দূরপাল্লার এস-৪০০ ভূমি থেকে আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা পেলে ভারতের সামরিক বাহিনীর চেহারাই বদলে যাবে বলে মনে করছে ভারত। এই বিতর্কের মধ্যেই গত সপ্তাহে তুরস্ক রাশিয়ায় তৈরি এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র হাতে পেয়েছে। আমেরিকা বলেছে, তুরস্ক একই সঙ্গে এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র এবং আমেরিকার অত্যাধুনিক ফাইটার এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান ব্যবহার করতে পারবে না। ট্রাম্প বলেছেন, ‘তুরস্কের সঙ্গে আমাদের খুবই ভালো সম্পর্ক। কিন্তু, ওরা যেহেতু এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র পেয়েছে, তাই আমেরিকা আর তুরস্ককে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান বিক্রি করবে না।’ আমেরিকার প্রবল চাপ সত্ত্বেও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপ এর্দোগান এই চুক্তি থেকে পিছু হটেননি। তিনি বলেছেন, আঙ্কারার আধুনিক ইতিহাসে এটি একটি ঐতিহাসিক চুক্তি বলেই গণ্য হবে। ২০২০ সালের মধ্যেই বাকি ক্ষেপণাস্ত্রগুলি হাতে পেয়ে যাবে তুরস্ক।
ভারতও আমেরিকার চাপের কাছে মাথা নোয়াতে নারাজ। কারণ, এই এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ ক্ষেপণাস্ত্র অন্তর্মহাদেশীয় (ব্যালিস্টিক) ক্ষেপণাস্ত্র এবং চীনের তৈরি করা স্টেলথ জঙ্গি বিমানের মোকাবিলা সহজেই করতে পারবে। তাছাড়া, পাকিস্তানকে চাপে রাখার বিষয়টিও রয়েছে। রাশিয়ায় তৈরি এই ক্ষেপণাস্ত্রের মাধ্যমে মাত্র ৯ থেকে ১০ সেকেন্ডের মধ্যে ৬০০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুকে আঘাত হানা সম্ভব।