বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
ইসরোর বেঙ্গালুরুস্থিত ইউ আর রাও স্যাটেলাইট সেন্টারের (পূর্বতন নাম আইস্যাক) প্রাক্তন অধিকর্তা তথা চন্দ্রযান-১’এর প্রজেক্ট ডিরেক্টর এবং চন্দ্রযান-২’এর প্রথম প্রজেক্ট ডিরেক্টর এম আন্নাদুরাই বলেন, ‘খেলার মাঠে ভারত যখন নামে, প্রত্যেকদিন কি কেউ নিশ্চিতভাবে বলতে পারবে ভারত জিতবেই! এটাও সেরকমই একটা খেলার মাঠ। এখানে বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা মহাকাশ গবেষণার বিভিন্ন কাজ করছেন। একটা সফল হলে, একটা ব্যর্থ হতেই পারে। তবে সবথেকে বড় কথা চন্দ্রযান-২ কিন্তু ব্যর্থ হয়নি। সেটিকে ব্যর্থ হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করেছেন বর্তমান বিজ্ঞানীরা।’ নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস, ‘এর আগেও বহুবার এরকম পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছিল ইসরোকে। তারপরে ইসরো আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। আমার বিশ্বাস এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘জিএসএলভি মার্ক-থ্রি ইসরোর একটি গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র। তাই তার উপর সর্বদাই কড়া নজর থাকে। প্রথমবার যখন পরীক্ষামূলকভাবে জিএসএলভি মার্ক-থ্রি রকেটের উৎক্ষেপণ করা হচ্ছিল, সেই সময়েও একেবারে শেষ পর্যায়ে এসে অভিযানকে স্থগিত করে দেওয়া হয়েছিল। অথচ তারই কয়েক সপ্তাহ পর সেটি কী সুন্দর জিস্যাট উপগ্রহকে নিয়ে নিরাপদে মহাকাশে পাড়ি জমিয়েছিল। সবটাই যান্ত্রিক। সমস্যা হতেই পারে। সেটা কতটা ধরা পড়ছে, সেটাই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।’ তাই চন্দ্রযান-২’এর ক্ষেত্রে অভিযান শুরু হওয়ার আগেই ত্রুটি ধরা সম্ভব হওয়ায় বিজ্ঞানীদের প্রশংসাই করেছেন তিনি। তাঁর দাবি, ‘হাজার কোটি টাকার অভিযান বিজ্ঞানীদের বিচক্ষণতাতেই রক্ষা পেল। না হলে এর আরও খারাপ পরিণতি হতে পারত।’
আন্নাদুরাইয়ের সঙ্গে সহমত পোষণ করেছেন ইসরোর অপর প্রাক্তনী তথা শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টারের প্রাক্তন অধিকর্তা কাটুরু নারায়ণ। তিনি বলেন, ‘এই ঘটনাকে কোনওভাবেই ব্যর্থতা বলা যায় না। যে কোনও দেশের মহাকাশ গবেষণার সঙ্গে জড়িতদের কাছে এটা খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। চূড়ান্ত উৎক্ষেপণের সময় সমস্ত পদক্ষেপকে বারবার করে দেখা হয়। যাতে কোথাও কোনও ভুল-ত্রুটি থাকলে তা সঙ্গে সঙ্গে সংশোধন করা যায়। এক্ষেত্রেও তাই হয়েছে, জ্বালানি ভরা থেকে শুরু করে সেটিকে উৎক্ষেপণের চূড়ান্ত পর্যায়ে সেট করা সববিষয়েই কড়া নজরা রাখছিলেন বিজ্ঞানীরা। সেই সময়েই কোনও ত্রুটি ধরা পড়ায় সঙ্গে সঙ্গে অভিযান স্থগিত করা হয়েছে। এটা ভালো লক্ষণ।’ তাঁর মতে, আর এর জন্য কোনও অতিরিক্ত খরচের বিষয় নেই। তাই যা ত্রুটি ধরা পড়েছে, তা শীঘ্রই খতিয়ে দেখা হবে। তারপরে সেটিকে সারিয়ে চূড়ান্ত উৎক্ষেপণ ফের করা হবে। ভারতে মহাকাশ গবেষণার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা ফিজিক্স রিসার্চ ল্যাবরেটরির (পিআরএল) প্রাক্তন অধিকর্তা তথা চন্দ্রযান-১ অভিযানের প্রধান বিজ্ঞানী জীতেন্দ্রনাথ গোস্বামী বলেন, ‘ব্যর্থতার কোনও প্রশ্নই ওঠে না। খুব শীঘ্রই ইসরোর বিজ্ঞানীরাই জানিয়ে দেবেন কী ত্রুটি হয়েছিল।’ তা শুধরে নিয়ে ফের এই অভিযান সফল হবে বলে তিনিও আশাবাদী।