পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
শিখ ধর্মগুরু গুরু নানকের ৫৫০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে কর্তারপুর করিডর চালু করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে নরেন্দ্র মোদি সরকার। পাকিস্তানের কর্তারপুরের দরবার সাহিবের সঙ্গে ভারতের গুরুদাসপুরের ডেরা বাবা নানক মন্দিরের মধ্যে যোগসূত্রে স্থাপন করবে এই করিডর। ফলে কর্তারপুর সাহিবে যেতে কোনওরকম ভিসা লাগবে না ভারতীয় শিখ পুণ্যার্থীদের। সেইমতো গত মার্চের পর এদিন ওয়াঘা সীমান্তে বৈঠকে বসে ভারত-পাক দুই দেশের প্রতিনিধিদল। ভারতের আট সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের যুগ্মসচিব এস সি এল দাস। আর পাকিস্তানের ১৩ সদস্যের দলের নেতৃত্বে ছিলেন পাক বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র ফয়জল। সকাল ন’টা থেকে শুরু হয়ে প্রায় চার ঘণ্টা ধরে চলে সেই বৈঠক।
পুণ্যার্থীদের সংখ্যা ছাড়াও এদিনের বৈঠকে পাকিস্তানের কাছে ভারত যে সমস্ত দাবি রেখেছে সেগুলি হল, ১) বিশ্বাসের ভিত্তিতে পু্ণ্যার্থীদের মধ্যে কোনওরকম ভেদাভেদ করা চলবে না। ২) ওসিআই পরিচয়পত্রধারী ভারতীয় বংশোদ্ভূতদেরও অনুমতি দিতে হবে। ৩) কর্তারপুর যেতে ভিসা লাগবে না এবং কোনওরকম পারমিট বা ফি নিতে পারবে না পাকিস্তান। ৪) সারাবছর সপ্তাহে সাতদিনই পু্ণ্যার্থীরা সেখানে যেতে পারবেন। ৫) একা বা দল করে যেতে পারবেন পুণ্যার্থীরা। ৬) পায়ে হেঁটে পুণ্যযাত্রায় যাওয়ার অধিকার থাকবে পুণ্যার্থীর হাতে। ৭) পুণ্যার্থীদের জন্য লঙ্গর বা প্রসাদ বিতরণের ব্যবস্থা রাখতে হবে। ৮) পুণ্যার্থীর নিরাপত্তার জন্য কর্তারপুরে কনস্যুলার সুবিধা রাখতে হবে।
তারপরেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ফয়জল বলেন, ‘ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। দুই দেশই কর্তারপুর করিডর নিয়ে ৮০ শতাংশ এবং তারও বেশি ক্ষেত্রে সহমত পোষণ করেছে।’ বাকি ২০ শতাংশ পরবর্তী বৈঠকে সমাধান হয়ে যাবে বলে আশাপ্রকাশ করেছেন তিনি। একইসঙ্গে, কর্তারপুরকে শান্তির করিডরকে আখ্যা দিয়েছে তিনি বলেছেন, ‘পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এই অঞ্চলে শান্তি চান। আগামী নভেম্বরে গুরুনানকের ৫৫০তম জন্মবার্ষিকীতে এই করিডরের সূচনা করতে চান তিনি।’ তবে, আগামী নভেম্বরে কতজন ভারতীয় শিখ পুণ্যার্থীকে কর্তারপুর সাহিব যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে, তা পরিষ্কার করে বলেননি ফয়জল। শুরু বলেছেন, ‘সেটা পাঁচ হাজার থেকে আট হাজার হতে পারে। আমি এই মুহূর্তে সঠিক সংখ্যা বলতে পারছি না। সেটা এখনও ঠিক হয়নি।’
এদিকে, পাকিস্তানের বাঁধ নির্মাণের জন্য কর্তারপুর সংলগ্ন এলাকায় বন্যা দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে ভারত। পুণ্যার্থীদের নিয়ে এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বাঁধ নির্মাণের ফলে কী কী ক্ষতি হতে পারে, তার তথ্যপ্রমাণ ইসলামাবাদের হাতে তুলে দিয়েছে নয়াদিল্লি। পাশাপাশি, ভারতের মতো সেতু নির্মাণের উপদেশ দিয়েছেন তাদের। একইসঙ্গে, আগামী নভেম্বরের মধ্যে করিডরটি চালু করতে পাকিস্তানকে অন্তর্বর্তী ব্যবস্থার আশ্বাস দিয়েছে নয়াদিল্লি। এ বিষয়ে কর্তারপুর করিডরে কোনওরকম ভারত বিরোধী কাজ করতে দেওয়া হবে না আশ্বাস দিয়েছে পাকিস্তান।
অন্যদিকে, ভারতের আপত্তি মেনে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের আগে তাদের প্রতিনিধি দল থেকে খলিস্তানি বিচ্ছিন্নতাবাদী গোপাল সিংকে বাদ দিয়েছে পাকিস্তান শিখ গুরুদ্বার প্রবন্ধিক কমিটি (পিএসজিপিসি)। এর আগে কর্তারপুর নিয়ে গত ১৪ মার্চ বৈঠকে বসেছিল দুই দেশ। তারপর ২ এপ্রিল পরবর্তী বৈঠকের কথা থাকলেও প্রতিনিধিদলে গোপাল সিংকে নেওয়ার জন্য তা ভেস্তে যায়।