কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
এমনিতে বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের মধ্যে আরও পাঁচজন শনিবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। স্পিকার যাতে তাঁদের ইস্তফাপত্র গ্রহণ করেন, সেই আবেদন জানিয়ে। তবে একদিন আগেই সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বেশ কিছুটা অক্সিজেন পেয়ে যায় মুখ্যমন্ত্রী কুমারস্বামীর নেতৃত্বাধীন জেডিএস-কংগ্রেস জোট সরকার। শীর্ষ আদালত জানিয়ে দিয়েছে, মঙ্গলবার পর্যন্ত বিক্ষুব্ধদের ইস্তফা গ্রহণ বা তাঁদের বিধায়ক পদ খারিজ করা নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না স্পিকার। এরপরই সবাইকে অবাক করে মুখ্যমন্ত্রী কুমারস্বামী বিধানসভায় ঘোষণা করেন, আস্থাভোটে যেতে চান তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণার পর শনিবার একেবারে ভোর থেকে মাঠে নেমে পড়ে কংগ্রেস নেতৃত্ব। কোমর বেঁধে নেমে পড়েন কর্ণাটক কংগ্রেসের ‘সঙ্কটমোচনকারী’ বলে পরিচিত নেতা ডি কে শিবকুমার। তাঁর সঙ্গেই আসরে নামেন উপমুখ্যমন্ত্রী জি পরমেশ্বর, পরিষদীয় দলনেতা সিদ্ধারামাইয়া ও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি দীনেশ গুন্ডুরাওয়ের মতো শীর্ষ নেতারা। ফলস্বরূপ বরফ গলার প্রথম ইঙ্গিত আসে কংগ্রেস-জেডিএসের ১৬ বিক্ষুব্ধ বিধায়কের মধ্যে অন্যতম এমটিবি নাগরাজের দিক থেকে। আবাসনমন্ত্রী নাগরাজ সাংবাদিকদের বলেন, সিদ্ধারামাইয়া ও দীনেশ গুন্ডুরাও আমার সঙ্গে কথা বলেছেন। ইস্তফা প্রত্যাহার করে দলে থেকে যাওয়ার অনুরোধ করেছেন। ভেবে দেখতে কিছুটা সময় চেয়েছি। পাশাপাশি তাঁদের বলেছি, চিকাবালাপুরার বিধায়ক সুধাকরের সঙ্গেও কথা বলব। ইস্তফা প্রত্যাহারে যাতে তাঁর মনও গলানো যায়। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় নাগরাজের পাশেই দেখা গিয়েছে পরমেশ্বর ও শিবকুমার সহ প্রদেশ কংগ্রেসের শীর্ষ নেতাদের। তাহলে কি মতপার্থক্য কেটেছে? সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কিছু মতপার্থক্যের জেরেই ইস্তফা দিয়েছিলাম। সব রাজনৈতিক দলেই মতপার্থক্য থাকে। বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের মন গলানোর চেষ্টা করছে পার্টি হাইকমান্ড। সেই কাজে তাঁদের সাহায্যের জন্য আমিও সর্বতোভাবে চেষ্টা করব। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার পর কংগ্রেস পরিষদীয় দলের নেতা সিদ্ধারামাইয়ার বাসভবনের উদ্দেশে রওনা হন নাগরাজ।
মুম্বইয়ের হোটেলে বিক্ষুব্ধদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গিয়েও ব্যর্থ হয়েছিলেন শিবকুমার। যদিও হাল ছাড়তে নারাজ কংগ্রেসের ‘সঙ্কটমোচনকারী’ এই নেতা। এদিন ভোর ৫টায় গিয়ে হাজির হন বিক্ষুব্ধ বিধায়ক নাগরাজের বাড়িতে। প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা সেখানে হত্যে দিয়ে পড়ে থাকেন। সেখানে গিয়ে হাজির হন উপমুখ্যমন্ত্রী পরমেশ্বরও। ইস্তফা প্রত্যাহারে এই বিক্ষুব্ধ বিধায়ককে রাজি করানোর লক্ষ্যে। শুধু নাগরাজ নন, রামলিঙ্গ রেড্ডি, মুনিরত্ন, কে সুধাকর এবং আর রোশন বেগের মতো বিক্ষুব্ধদেরও ইস্তফার রাস্তা থেকে সরিয়ে আনার জোরদার প্রচেষ্টা চলছে বলে খবর। আবার জেডিএস সূত্রে খবর, অন্তত চারজন কংগ্রেস বিধায়কের সঙ্গে সরাসরি কথা বলছেন মুখ্যমন্ত্রী কুমারস্বামী। ইস্তফা প্রত্যাহার করিয়ে তাঁদের ফিরিয়ে আনা যাবে বলে নাকি মুখ্যমন্ত্রী আশাবাদী। তবে জোট শিবিরের এই তোড়জোড়ের মধ্যে পাল্টা সক্রিয় হয়েছে বিজেপিও। বিক্ষুব্ধ বিধায়ক রামলিঙ্গ রেড্ডির বাড়িতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বিজেপির বেশ কিছু নেতা। তবে এই রাজনৈতিক টানাপোড়ের নিয়ে মুখ খুলতে চাননি রামলিঙ্গ রেড্ডি। তাঁর সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া, ১৫ জুলাই পর্যন্ত কোনও রাজনৈতিক বক্তব্য দেব না।
গতকাল কুমারস্বামী আস্থাভোটের পথে হাঁটার ঘোষণা করায় কংগ্রেস ও বিজেপি, দুই দলই হাতে থাকা বিধায়কদের বিভিন্ন হোটেল ও রিসর্টে তুলতে শুরু করে। যাতে বিধানসভায় শক্তি পরীক্ষার দিন হাত কামড়াতে না হয়। এরই মধ্যে এদিন দুই নির্দল বিধায়ক বিরোধী বেঞ্চে বসার আসন চেয়ে আবেদন করেছেন। ক’দিন আগেই এই দুই বিধায়ক মন্ত্রিপদ থেকে ইস্তফা দিয়ে কুমারস্বামী সরকারের উপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন। জানিয়ে দিয়েছিলেন, বিজেপি সরকার গড়তে তাঁদের সমর্থন পাবে।