কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
বনদপ্তরের এক কর্তা জানান, ওড়িশার পক্ষ থেকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, গাড়ি তৈরির সমস্ত খরচ এবং সামগ্রী কেনার খরচ তারা দিয়ে দেবে। পশ্চিমবঙ্গ যেভাবে গাড়িটিকে তৈরি করেছে, সেরকমই গাড়ি যেন তাদের জন্যও তৈরি করে দেওয়া হয়। সেই মতোই রাজ্য বনদপ্তরের পক্ষ থেকে গাড়িটিকে ‘ঐরাবত’-এর মডেলেই সাজিয়ে তোলা হয়। সমস্ত কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার পর মঙ্গলবারই গাড়িটি ওড়িশা বনদপ্তরের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
আপাতত জানা গিয়েছে, গাড়িটি ওড়িশার কেওনঝড় জেলা এবং সংলগ্ন বনাঞ্চল ডিভিশনে হাতি-মানুষ সংঘাত কমাতে ব্যবহার করা হবে। কেওনঝড়ের ডিএফও বলেন, তাঁরা গাড়িটির নাম দিয়েছেন ‘গজ’। পশ্চিমবঙ্গে গাড়িটির সুফল সেখানকার বনকর্মীরা পেয়েছেন। তাই তাঁরাও আশাবাদী এখানকার বনকর্মীদের হাতে এই নয়া অস্ত্র এলে, হাতি-মানুষ সংঘাত কমাতে অনেক সুবিধাই হবে। ওড়িশার কেওনঝড়ে এই গাড়িটি ভালোভাবে কাজ করলে, ভবিষ্যতে আরও কয়েকটি গাড়ি তাঁদের নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বলেও তিনি জানান। সূত্রের খবর, পশ্চিমবঙ্গ এবং ঝাড়খণ্ড লাগোয়া বনাঞ্চল ডিভিশনে এরকম গাড়ি রাখার পরিকল্পনা রয়েছে ওড়িশা বনদপ্তরের। সেই মতোই, এ’রাজ্যের সঙ্গে তাদের কথাবার্তাও শুরু হয়েছে।
‘ঐরাবত’ বা ‘গজ’— কী রয়েছে এই বিশেষ গাড়িতে? বনদপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হচ্ছে, হাতিকে ধরা বা কাবু করার উপযুক্ত জাল এবং পর্যাপ্ত দড়ি থাকবে এই গাড়িতে। এই গাড়িটির মাথায় কয়েকটি জোরাল আলো থাকবে, যা অন্ধকারে হাতি খুঁজতে সহযোগিতা করবে। প্রয়োজনে আবার হাতিকে নিয়ন্ত্রণেও এই আলো ব্যবহার করা যাবে। এছাড়া গাড়িটিতে একটি তীব্র শব্দের সাইরেন থাকবে, যা এলাকাবাসীকে সতর্ক করে দেবে। হাতিকে বশ করার প্রয়োজনের কথা মাথায় রেখে ঘুম পাড়ানি গুলি ও বন্দুক সহ সবরকম ওষুধও এই গাড়িতে থাকবে। রয়েছে জখম হাতির প্রাথমিক চিকিৎসারও ব্যবস্থা। হাতি কোনও গর্তে পড়ে গেলে, সেটিকে টেনে তোলার ক্ষেত্রে ক্রেনও থাকছে গাড়িতে। বহু ক্ষেত্রে দেখা যায়, কোথাও হাতি তাড়াতে বা ধরতে গেলে অনেক সময় লেগে যায়। সেই অবস্থায় যাতে সমস্ত যন্ত্র চালানো যায়, তাই গাড়িটিতে একটি জেনারেটরও বসানো হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গ বনদপ্তরের পক্ষ থেকে এদিন ওড়িশা বনদপ্তরকে গাড়িটি হস্তান্তর করা হয়েছে। গাড়িটি তৈরির কাজে নিযুক্ত নীলাদ্রি গোস্বামী বলেন, এদিন ওড়িশা বনদপ্তরের কর্মী যাঁরা গাড়িটি নিতে এসেছিলেন, তাঁদের গাড়িটি কীভাবে ব্যবহার করা হবে সেটা হাতেকলমে করে দেখানো হয়েছে। রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) রবিকান্ত সিনহা বলেন, ওড়িশা বনদপ্তরের হাতে এদিন এই গাড়ি তুলে দেওয়া হয়েছে। আরও পাঁচটি গাড়ি ওড়িশাকে দেওয়ার বিষয়ে কথাবার্তা চলছে। ওড়িশা ছাড়াও ছত্তিশগড়ও সম্প্রতি ‘ঐরাবত’ নিয়ে আগ্রহ দেখায়। তবে তারা পশ্চিমবঙ্গের থেকে সমস্ত যন্ত্র নিয়ে নিজেদের মতো করে গাড়িতে সেট করেছে।