রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
এবারের লোকসভা নির্বাচনের পর থেকেই বিভিন্ন ইস্যুতে কেন্দ্রের সঙ্গে সংঘাতের সৃষ্টি হচ্ছে রাজ্যের। সে পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক সংঘর্ষের ঘটনাই হোক, অথবা জুনিয়র চিকিৎসকদের কর্মবিরতি। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উদ্দেশ্যে একাধিকবার অ্যাডভাইজারি পাঠিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। তার পাল্টা জবাব দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। এই পরিস্থিতিতে এদিনের সর্বদলীয় বৈঠকে রাজ্যের ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘অহেতুক’ হস্তক্ষেপ নিয়ে তৃণমূলের সোচ্চার হওয়ার ঘটনাকে রীতিমতো তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। সর্বদলীয় বৈঠকে তৃণমূলের তরফে উপস্থিত ছিলেন দলের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন। সূত্রের খবর, সর্বদলীয় বৈঠকে তাঁরা স্পষ্ট জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোয় এভাবে রাজ্যের উপর অহেতুক হস্তক্ষেপ করতে পারে না কেন্দ্র। আর তা কোনওমতেই মেনে নেওয়া হবে না। এছাড়াও নির্বাচনী সংস্কার চেয়েও সরব হয়েছে তৃণমূল। যার মধ্যে রয়েছে ব্যালট পেপারে ভোটগ্রহণ এবং নির্বাচনে ‘স্টেট ফান্ডিং’য়ের মতো ইস্যুও। একইসঙ্গে বিভিন্ন বিলের যথাযথ ‘স্ক্রুটিনি’, মহিলা সংরক্ষণ বিল এবং অর্ডিন্যান্সের প্রয়োগ নিয়েও সর্বদলীয় বৈঠকে সরব হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।
জানা গিয়েছে, বৈঠকে তৃণমূল দাবি করেছে, অন্তত ৭৫ শতাংশ বিলকে স্ক্রুটিনির জন্য সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো উচিত। সর্বদলীয় বৈঠকে তারা বলেছে, চতুর্দশ এবং পঞ্চদশ লোকসভায় ৭৫ শতাংশ বিলকে পাঠানো হয়েছে সংসদীয় কমিটিগুলিতে স্ক্রুটিনির জন্য। কিন্তু ষষ্ঠদশ লোকসভায় অর্থাৎ ২০১৪ থেকে ২০১৯ সালে মাত্র ২৫ শতাংশ বিলের স্ক্রুটিনি হয়েছে। সংসদের এই অধিবেশনে মহিলা সংরক্ষণ বিল পাস করানোর দাবি জানিয়ে তৃণমূল বলেছে, ষষ্ঠদশ লোকসভায় টিএমসির ৩৫ শতাংশ মহিলা এমপি ছিলেন। সপ্তদশ লোকসভায় তা বেড়ে হয়েছে ৪১ শতাংশ। একইসঙ্গে অর্ডিন্যান্সের প্রসঙ্গে তৃণমূল আজ সর্বদলীয় বৈঠকে বলেছে, সংবিধান মোতাবেক অধ্যাদেশ শুধুমাত্র ‘জরুরি অবস্থা’র হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা উচিত। কিন্তু ষষ্ঠদশ লোকসভায় এর ভয়ানক ব্যবহার হয়েছে, যা গত ৭০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। সূত্রের খবর, একাধিক ইস্যুতে এদিনের সর্বদলীয় বৈঠকে সরব হয়েছে কংগ্রেসও। কংগ্রেসের পক্ষে বৈঠকে লোকসভায় সোনিয়া গান্ধীর প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধীররঞ্জন চৌধুরি ও কেরলের এমপি কে সুরেশ। ছিলেন রাজ্যসভার এমপি গুলাম নবি আজাদ। সর্বদলীয় বৈঠকে কাশ্মীর সমস্যা, দেশজোড়া ক্রমবর্ধমান বেকারত্ব, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা, কৃষি সঙ্কটের মতো বিষয় তুলে কংগ্রেসের গুলাম নবি আজাদ দাবি করেছেন, সপ্তদশ লোকসভার প্রথম অধিবেশনে এই বিষয়গুলির উপর আলোচনা করতে হবে। সংসদ বিষয়ক মন্ত্রকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অধিবেশন সুষ্ঠুভাবে চালানোর আর্জি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বৈঠকে বলেছেন, সংসদ অচল করে দিয়ে মানুষের মন জেতা সম্ভব নয়। রাজনৈতিক মতাদর্শ ভিন্ন হতেই পারে, কিন্তু দেশের উন্নয়নে সকলকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। পরে বৈঠক ফলপ্রসূ হওয়ার কথা জানিয়ে ট্যুইটও করেছেন মোদি।
বৈঠকের পর কেন্দ্রীয় সংসদ বিষয়কমন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশী বলেছেন, ‘সংসদীয় সবকটি দলের মধ্যে যাতে সদ্ভাব বজায় থাকে, সেই লক্ষ্যে এবার দুটো নতুন উদ্যোগ নিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। যেসব রাজনৈতিক দলের সংসদে এমপি রয়েছে, সেই দলগুলির দলীয় সভাপতির সঙ্গে আগামী ১৯ জুন বৈঠক করবেন নরেন্দ্র মোদি। আগামী ২০ জুন বৈঠক করবেন দুই কক্ষের সমস্ত এমপির সঙ্গে। মতামতের আদানপ্রদানই এর একমাত্র উদ্দেশ্য হবে।’ উল্লেখ্য, আগামী ১৭ এবং ১৮ জুন শপথ নেবেন নতুন এমপিরা। আগামী ১৯ জুন রয়েছে লোকসভার অধ্যক্ষ নির্বাচন। ২০ তারিখ যৌথ সভায় ভাষণ দেবেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। বাজেট পেশ হবে আগামী ৫ জুলাই।