রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
যদিও পদাধিকার বলে নীতি আয়োগের গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য হওয়া সত্ত্বেও এদিনের বৈঠকে অনুপস্থিত ছিলেন তিন রাজ্যর মুখ্যমন্ত্রী। যোজনা কমিশন ভেঙে দিয়ে নীতি আয়োগ গড়া এবং তার বৈঠক কোনও ফলপ্রসূ হয় না দাবি করে বৈঠক এড়ালেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের একটি সেচ প্রকল্পের উদ্বোধনে মোদিকে আমন্ত্রণ জানাতে চেয়ে সাক্ষাতের সময় চেয়ে না পাওয়ায় গোঁসা করে আজ আসেননি তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও। ওই প্রকল্প নিয়ে ব্যস্ত আছেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন। অন্যদিকে, শরীর অসুস্থ জানিয়ে অনুপস্থিত ছিলেন পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং।
পাঞ্জাব না এলেও বাকি মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, ছত্তিশগড় এবং কংগ্রেসের সঙ্গে জোট সরকারে চলা কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রীরা মোদির বৈঠকে হাজির ছিলেন। উপস্থিত ছিলেন পুদুচেরির মুখ্যমন্ত্রী কংগ্রেসের নারায়ণস্বামীও। রাষ্ট্রপতি ভবনে বসেছিল নীতি আয়োগের ডাকা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠক। সেখানে কোন বিষয়ে জোর দিতে হবে, কীভাবে কেন্দ্রের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে হবে, দরকারে চড়াতে হবে সমালোচনার সুর, তা জেনে নিতে এদিন সকালে কংগ্রেস সদর দপ্তর ২৪ আকবর রোডে গিয়ে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা অর্থনীতিবিদ ড. মনমোহন সিংয়ের কাছে পাঠ নেন কমলনাথ, অশোক গেহলট, নারায়ণনস্বামী এবং কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী জেডিএস নেতা কুমারস্বামী। বৈঠকে মনমোহন সিং তাঁদের কৃষি এবং অর্থনৈতিক বিষয়টি নিয়ে সরকারের উপর চাপ তৈরির পরামর্শ দেন।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও কংগ্রেসের তোলা বিষয়কে গুরুত্ব দিয়েই বলেন, রাজ্যগুলি যেভাবে জিএসটিতে এগিয়ে এসেছে, একইভাবে দেশের অর্থনৈতিক সূচকের উন্নয়নেও এগিয়ে আসবে। আগামী ২০২৪ সালের মধ্যে ভারতকে পাঁচ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের অর্থনীতিতে পরিণত করার সংকল্প নেন মোদি। বলেন, কঠিন হলেও অসম্ভব নয় বলেই আমি মনে করি। রাজ্যগুলি সঙ্গে থাকলে সব সম্ভব। বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন, রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল, সড়কমন্ত্রী নীতিন গাদকারিও উপস্থিত ছিলেন।
কেবল আর্থিক বিষয়ই নয়। নীতি আয়োগের গভর্নিং কাউন্সিলের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মোদি জল সংরক্ষণ, যক্ষ্মা নিবারণ, কৃষি, মাওবাদী মোকাবিলা নিয়েও রাজ্যগুলির সহযোগিতা সর্বাগ্রে প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন। বলেন, খরা পরিস্থিতির জন্য আমাদের তৈরি থাকতে হবে। তাই কেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট যে প্রকল্প রয়েছে, সেটি বেশি করে কার্যকর করতে হবে। কৃষকদের উন্নয়নে বছরে ছ’ হাজার টাকার পিএম কিষাণ প্রকল্পের কথাও তুলে ধরেন মোদি। একইসঙ্গে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এসে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে কেন্দ্র যে ‘জল জীবন মিশনে’র মাধ্যমে দেশের সব বাড়িতে নলবাহিত জল সরবরাহ করার পরিকল্পনা নিচ্ছে, তাও সফল করার ডাক দিয়েয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
মাওবাদী সমস্যা নিয়েও কথা বলেন মোদি। তাঁর সরকার মাওবাদী সমস্যার প্রায় নিষ্পত্তি করে দিয়েছে বলে উল্লেখ করেন। বলেন, এখনও কিছু পিছিয়ে পড়া জেলায় বা অঞ্চলে যে মাওবাদী সমস্যা রয়েছে, তা কড়া হাতে দমন করা হবে। ওইসব এলাকার উন্নয়নে যেমন জোর দেওয়া হবে, একইসঙ্গে মাওবাদী দমনও চলবে। পিছিয়ে পড়া জেলাগুলিকে মোদি সরকার অ্যাসপিরেশনাল ডিস্ট্রিক্ট বা সম্ভাবনাময় জেলা বলে উল্লেখ করে। ওইসব জেলাগুলির উন্নয়নে যে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে, তার উপর জোর দেন তিনি। স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর উন্নয়নে ‘আয়ুষ্মান ভারতে’র প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে দেশ থেকে যক্ষ্মা নির্মূল করার টার্গেট নেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে ২০২২ সালের মধ্যে স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর উন্নতি তথা পরিষেবা বাড়ানোর কথাও বলেন তিনি। এই ব্যাপারে সরাসরি পশ্চিমবঙ্গের নাম উল্লেখ না করেও মোদি বলেন, যেসব রাজ্য এখনও প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনায় আয়ুষ্মান ভারতের অধীনে আসেনি, তাদের অনুরোধ করছি, অবিলম্বে যুক্ত হন।