পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
হুগলির জেলার মগরা এলাকার দিগশুই গ্রামের বাসিন্দা শিবনারায়ণ ও শর্মিষ্ঠা আচার্য। কর্মসূত্রে দীর্ঘদিনই তিনি জম্মু-কাশ্মীরে রয়েছেন। ফলে তাঁর যমজ সন্তানেরও বড় হয়ে ওঠা ভূস্বর্গেই। সেখানকার কুঞ্জওয়ানি এলাকার পাবলিক স্কুলেই পড়াশোনা স্বপ্নিল আচার্য এবং স্বপ্নিলা আচার্য। বর্তমানে দু’জনেই সেখানকার স্কুলে দশম শ্রেণীতে পড়াশোনা করে। কেন্দ্রীয় সরকারের ‘জয় বিজ্ঞান ও জয় অনুসন্ধান’ প্রকল্পের আওতায় এবছর থেকেই ‘যুবিকা’র আয়োজন করা শুরু করেছে ইসরো। সেখানে মূলত অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর পড়ুয়াদের বিজ্ঞানের প্রতি আকৃষ্ট করাই মূল উদ্দেশ্য। সেই লক্ষ্যেই গোটা দেশ জুড়ে আবেদন চাওয়া হয়েছিল পড়ুয়াদের কাছে। তাতেই আবেদন করেছিল স্বপ্নিল ও স্বপ্নিলা। প্রত্যেক আবেদনপত্র নির্দিষ্ট মাপকাঠিতে বিশ্লেষণ করে দেশ জুড়ে ১০৮ জনকে বাছাই করা হয় ইসরোর পক্ষ থেকে। তাদের মধ্যে থেকেই জম্মু-কাশ্মীরে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ আসে রাজ্যের যমজ ভাই-বোনের।
স্বপ্নিলার কথায়, মহাকাশ গবেষণা নিয়ে তিনি সেভাবে কোনওদিনই আকৃষ্ট ছিলেন না। বায়োলজি নিয়ে তার আগ্রহ বরাবর। কিন্তু, মহাকাশ গবেষণাতেও বায়োলজির কী গুরুত্ব, এই কর্মশালা থেকেই তিনি উপলব্ধি করতে পেরেছেন। এখনকার পড়ুয়ারা তথাকথিত ডাক্তারি বা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের দিকে বেশি ঝুঁকছে। কিন্তু, এর বাইরে বিভিন্ন পড়াশোনা করে কীভাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা যায় এবং মহাকাশ গবেষণার সঙ্গে যুক্ত করা যায়, সেবিষয়ে বিজ্ঞানীদের পরামর্শ পেয়ে উৎফুল্লিত তিনি। বিশেষ করে দেশ-বিদেশের নামকরা বিজ্ঞানীদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে পেরে দারুণভাবে উৎসাহিত স্বপ্নিলা।
অন্যদিকে, মহাকাশ গবেষণা নিয়ে ভবিষ্যতে পড়াশোনা করতে আগ্রহী স্বপ্নিল এই কর্মশালায় অংশগ্রহণ করতে পেরে আরও বেশি আনন্দিত। তার কথায়, মহাকাশ গবেষণা অনেক বড় একটা প্ল্যাটফর্ম। সেখানে কীভাবে যুক্ত হওয়া যায়, সেবিষয়ে বিজ্ঞানীদের পরামর্শ তাদের মতো যুব বিজ্ঞানীদের উপকৃত করবে। বিশেষ করে যেখানে জম্মু-কাশ্মীরের মতো রাজ্যে যেখানে হামেশাই কার্ফুর ভ্রুকুটিতে পড়াশোনা শিকেয় উঠে যায়, সেখান থেকে গিয়ে দেশের বিজ্ঞানীদের কাছে এভাবে পরামর্শ পাওয়ায় তারা অভিভূত। একইসঙ্গে ইসরোর বিভিন্ন গবেষণা কেন্দ্রে তাদের নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কীভাবে গবেষণার কাজ চলছে, সেগুলিও দেখানো হয়। এমনকী ২২ মে শ্রীহরিকোটা থেকে একটি কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণও দেখানো হয়। মহাকাশ গবেষণায় একেবারে হাতের মুঠোয় প্রযুক্তির ব্যবহার এবং বিজ্ঞানীদের পরামর্শ পেয়ে ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে বলেই তারা বিশ্বাস করে। যমজ ভাই-বোন আরও জানিয়েছে, নিজের গ্রাম এবং পরিবারের থেকে দূরে থেকে পড়াশোনা করতে ভালো লাগে না। কিন্তু, এই কর্মশালায় দেশের বড় বড় বিজ্ঞানীদের পরামর্শ পেয়ে তাঁরা উৎফুল্লিত। তাই তাঁদের দেখানো পথেই ভবিষ্যতে পড়াশোনা করে বাবা-মা ছাড়াও ঠাকুমা (স্বাতী আচার্য) এবং দিদিমা (কল্পনা বিষ্ণু) এবং পরিবারের অন্যদের নাম উজ্জ্বল করাই এখন তাদের লক্ষ্য। অন্যদিকে, এই কর্মশালায় রাজ্যের প্রতিনিধি হিসেবে অংশগ্রহণ করেছিল কোচবিহারের পুণ্ডিবাড়ি জিডিএল বালিকা বিদ্যালয়ের নন্দিতা সাহা, রামপুরহাটের জিতেন্দ্রলাল বিদ্যাভবনের সোহম মণ্ডল এবং সিউড়ির বেনীমাধব ইনস্টিটিউটের অতীন্দ্রিয়া আচার্য।