কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
লোকসভা নির্বাচনের সঙ্গে বিধানসভা ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছিল ওড়িশায়। পাটকুড়া কেন্দ্র বাদে ১৪৬টি বিধানসভা কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হয়। গত পঞ্চায়েত ভোটে এখানে ভালো ফল করে বিজেপি। প্রাপ্ত ভোট তথা গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদের আসনের নিরিখে দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসে তারা। মনে করা হয়েছিল, শাসকদলের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলা বিজেপি এবারের নির্বাচনে বিজেডিকে ভালো বেগ দেবে। কিন্তু, বৃহস্পতিবার ফল বেরতেই দেখা যায় হু হু করে এগিয়ে যাচ্ছেন বিজেডি প্রার্থীরা। শেষমেশ ১১২টি আসন জিতে নিজেদের গড় ধরে রাখতে সক্ষম হয় নবীন পট্টনায়েক শিবির। যা ম্যাজিক ফিগার ৭৪ থেকে অনেক এগিয়ে।
লড়াই কঠিন বুঝে দু’টি কেন্দ্র থেকে লড়েছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পট্টনায়েক। গঞ্জাম জেলার হিঞ্জিলি এবং পশ্চিম ওড়িশার বিজেপুর কেন্দ্র ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। দু’টিতেই জয় পেয়েছেন বিজেডি সুপ্রিমো। জয়লাভ করছেন এন এন পাত্র, ঊষা দেবী, বিক্রমকেশরী অরুখ, প্রফুল্ল সামাল, নরসিংহ সাহু সহ একঝাঁক মন্ত্রী। বড়চনা থেকে জিতেছেন সরকারের মুখ্য সচেতক তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী অমরপ্রসাদ শতপথী। কামাক্ষ্যানগরের দুর্গ ধরে রেখেছেন আরেক মন্ত্রী প্রফুল্ল মল্লিক। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জে বি পট্টনায়েকের জামাই তথা রাজ্যসভার সদস্য সৌম্যরঞ্জন পট্টনায়েক খণ্ডপাড়া কেন্দ্রের নিকটতম নির্দল প্রার্থী দুষ্ম্যন্ত সোয়াইনকে ৮১ হাজার ৪৩০ ভোটে হারিয়েছেন। যদিও হেরে গিয়েছেন মন্ত্রী মহেশ্বর মোহান্তি।
তবে, অন্য রাজ্যের মতো ভালো ফল না করলেও ২৩টি আসনে জিতে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে বিজেপি। গত বিধানসভায় ১০টি আসন ছিল তাদের। এবার একধাক্কায় ১৩টি আসন বাড়াতে সক্ষম হয়েছে গেরুয়া শিবির। বিজেপি প্রার্থী তথা প্রাক্তন মন্ত্রী জয় নারায়ণ মিশ্র হারিয়েছেন বিদায়ী বিজেডি বিধায়ক রাসেশ্বরী পাণিগ্রাহীকে। তবে, রাধারানি পাণ্ডা, রবি নায়েকের মতো বহু প্রার্থীর ইন্দ্রপতন হয়েছে। বিজেডির সরোজ কুমারের কাছে হেরে গিয়েছেন পাটনাগড়ের বিজেপি বিধায়ক কে সিংদেও। অন্যদিকে, রাজ্যের ২১ লোকসভা আসনের মধ্যে ৮টি নিজেদের পকেটে পুড়েছে বিজেপি। যেখানে ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে মাত্র একটি আসন পেয়েছিল তারা। জয়ী সাংসদদের মধ্যে রয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জুয়েল ওরাম, বিজেপির জাতীয় সম্পাদক সুরেশ পুজারি, প্রাক্তন আমলা অপরাজিতা ষড়ঙ্গী। তবে, হেরে গিয়েছেন দলের জাতীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট বৈজয়ন্ত পণ্ডা, জাতীয় মুখপাত্র সম্বিত পাত্রের মতো হেভিওয়েট একগুচ্ছ নেতা। রাজ্যের বাকি ১৩টি লোকসভা আসনে জিতেছে বিজেডি।
অন্যদিকে, সারাদেশের মতো ওড়িশাতেও ভরাডুবি হয়েছে কংগ্রেসের। গ্র্যান্ড ওল্ড পার্টি জিতেছে মাত্র ন’টি বিধানসভায়। যেখানে ২০১৪ সালের ভোটে রাজ্যে তাদের আসনসংখ্যা ছিল ১৬। দলের এই ভরাডুবির পর প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দেন নিরঞ্জন পট্টনায়েক। ভাণ্ডারিপোখারি থেকে নিজেও হেরে গিয়েছেন তিনি। পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর কাছে। নিরঞ্জনের কথায়, ‘রাজ্যে লোকসভা ও বিধানসভা ভোটে খারাপ ফলের নৈতিক দায় নিয়ে এআইসিসি প্রেসিডেন্টকে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়েছি। ওড়িশায় শুধু কংগ্রেস পরাস্ত হয়েছে তা নয়, আমিও হেরে গিয়েছি।’