বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
সোমবার মধ্যপ্রদেশে রাতলামে একটি জনসভা করেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে তিনি ভোটের বেশি হারের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘পণ্ডিতরা বলছেন, কোনও মোদি-ঝড় নেই। সেইমতো দিল্লি থেকে বিভিন্ন খবর তৈরি হচ্ছে। প্রথমে তাঁরা কোনও মোদি-ঝড় নেই বললেও ভোটের বেশি হার দেখে ওঁরা চিন্তিত।’ এরপরেই মোদি বলেন, ‘ওঁরা জানেন না যে দু’ধরনের মানুষ রেকর্ড গড়ে — আমার তরুণ বন্ধুরা যারা প্রথমবার ভোট দিচ্ছেন। আর মা-বোনেরা যাঁরা ধর্ষকদের মৃত্যুদণ্ড দিতে তাঁদের ভাইকে নির্বাচিত করতে মনস্থির করেছেন।’
যিনি রান্নার গ্যাস, বিদ্যুৎ দিয়েছেন, তাঁকে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করতে মায়েরা পুরো শক্তি নিয়ে ভোট দিচ্ছেন বলেও দাবি করছেন মোদি। এরপরেই তাঁর সংযোজন, ‘যখন মা-বোনেরা ভোট দিতে বেরিয়ে আসেন, তখন পণ্ডিতেরাও বুঝতে পারেন না কোথা থেকে ঝড় আসছে। দেশের প্রতিটি বাড়ি থেকে ঝড় ধেয়ে আসছে।’ শিখ দাঙ্গা নিয়ে কংগ্রেসের বিদেশ শাখার প্রধানের করা ‘হয়েছে তো হয়েছে’ মন্তব্য নিয়েও এদিনের সভা থেকে কংগ্রেসকে আক্রমণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ভোপাল গ্যাস ট্র্যাজেডি থেকে কমনওয়েলথ, টু-জি দুর্নীতি থেকে কয়লা — সমস্ত দুর্নীতিই হয়েছে রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বাধীন দলের চোখের সামনে। আর সেই দল এখন বলছে, ‘হয়েছে তো হয়েছে’!
এদিন রাতলামের বাসিন্দা তথা আইএনএস বিক্রমাদিত্য অগ্নিকাণ্ডে মৃত লেফটেন্যান্ট কমান্ডার ধর্মেন্দ্রসিং চৌহানকে শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী। তারপরেই ‘পিকনিক’ করতে গান্ধী পরিবারের আইএনএস বিরাট ব্যবহারের কথা তুলে ধরেন তিনি। মোদির কথায়, ‘আর প্রশ্ন তোলা হলে ওরা লজ্জাহীনভাবে বলে হয়েছে তো হয়েছে।’ নিজের স্বভাবসুলভ বাচনভঙ্গিতে মাওবাদী হানা, শিখ দাঙ্গা সহ বিভিন্ন ইস্যুতে ‘হয়েছে তো হয়েছে’ মন্তব্য নিয়ে কংগ্রেসকে নিশানা করেন তিনি। বলেন, ‘এই শব্দবন্ধ নিছক তিনটি শব্দ নয়, কংগ্রেসের আদর্শ, ঔদ্ধত্যের পরিচয় দেয়।’
মধ্যপ্রদেশের কমল নাথ সরকারকেও আক্রমণ করতে ছাড়েননি মোদি। নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি মতো কংগ্রেস রাজ্যবাসীর ঋণ মকুব করতে ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে ‘হিন্দু সন্ত্রাসবাদী’ শব্দটি কংগ্রেসের তৈরি দাবি করে এদিন প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কংগ্রেসের নামদারদের নেতৃত্বাধীন সরকারের ভ্রান্ত নীতির জন্য দেশে বোমা বিস্ফোরণ হয়। তার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তান যোগ রয়েছে। অথচ, কংগ্রেস কী বলে, হয়েছে তো হয়েছে।’ কংগ্রেসের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জন্য ভোপাল কেন্দ্রের প্রার্থী দিগ্বিজয় সিং ভোট দেননি বলে দাবি করেন তিনি। মোদির কথায়, ‘এটা প্রমাণ করে কংগ্রেস নেতাদের ঔদ্ধত্য। যেখানে দেশের রাষ্ট্রপতি, আমি এবং অন্যান্যরা ভোট দিচ্ছেন, সেখানে দিগ্বিজয় ভোট দেননি।’
মধ্যপ্রদেশের পাশাপাশি এদিন হিমাচল প্রদেশের সোলান এবং পাঞ্জাবের ভাতিণ্ডায় জনসভা করেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানেও তাঁর নিশানায় ছিল কংগ্রেস। মোদি বলেন, প্রতিরক্ষা খাতে ভারত যেখানে সিংহভাগ ক্ষেত্রে বিদেশের উপর নির্ভরশীল, সেখানে প্রতিটি প্রতিরক্ষা চুক্তিকে কংগ্রেস ‘এটিএম’ হিসেবে ব্যবহার করত। সশস্ত্র সেনাবাহিনীর জন্য বুলেট-প্রুফ জ্যাকেট কিনতে ছ’বছর দেরির জন্যও কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকারকে দায়ী করেছেন তিনি। অন্যদিকে, ভাতিন্ডায় পিত্রোদার মন্তব্য নিয়ে ১৯৮৪ সালের শিখ দাঙ্গার প্রসঙ্গটি নতুন করে উস্কে দেন প্রধানমন্ত্রী। নাম না করে পিত্রোদাকে রাহুল গান্ধীর গুরু বলে কটাক্ষ করেন তিনি। এরপরেই মোদির সংযোজন, ‘‘আপনারই লজ্জা পাওয়া উচিত নামদার (রাহুল গান্ধী)। ‘হয়েছে তো হয়েছে’র মানে কি? জনগণকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হচ্ছে, পরিবারকে ধ্বংস করা হচ্ছে, আর লজ্জাহীনভাবে আপনি বলছেন ‘হয়েছে তো হয়েছে’? এই চৌকিদার আশ্বাস দিচ্ছে, ১৯৮৪ সালের ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বিচারের জন্য আমি লড়াই করে যাব। বাদল সাহেবের আশীর্বাদে একজন অপরাধীর মৃত্যুদণ্ড দিয়েছি। বাকিদের কারাদণ্ড। বাকি দোষীরা শীঘ্রই দোষী সাব্যস্ত হবে।’