বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
মিডিয়া সেন্টারে ঢুকেই বুঝলাম কলকাতার কোনও রাজনৈতিক দলের অফিসে এ রকম ব্যবস্থা নেই। পরিচয় দিয়ে কথা বলতে চাইলে এগিয়ে এলেন হিমাংশু দুবে। নিয়ে গেলেন চেম্বারে। প্রথম প্রশ্ন, ‘বাংলায় আমাদের সিট বাড়বে তো? আমি ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে মালদহ জেলায় দলের হয়ে কাজ করেছি। সেখানে দেখেছি, বিজেপির সম্ভাবনা প্রবল। আমাদের সমীক্ষা রিপোর্ট বলছে, আমরা কমপক্ষে ২০টা সিট পাব।’ যতবার উত্তরপ্রদেশের নির্বাচনের প্রসঙ্গ উঠেছে, উনি কিন্তু ঘুরিয়ে ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছেন বাংলার ভোট-আলোচনায়। তাঁর স্পষ্ট দাবি, ‘দিদি এবার পারবে না। দিদি-মোদিজির লড়াই হচ্ছে। এবারের ভোট মোদির। হয় মোদির পক্ষে, না হয় বিপক্ষে। ঠিক ছিল, মোদিজি আপনার রাজ্যে সাতটি সভা করবেন, পরে আরও বাড়িয়ে ১৬টি করছেন।’
আপনাদের বিরুদ্ধে অখিলেশ-মায়াবতীর মহাগঠবন্ধন হয়েছে। ভোটে তো প্রভাব পড়বে? এই প্রশ্নে বাংলার সঙ্গে সাযুজ্য রেখে তিনি বলেন, ‘আপনাদের ওখানে তৃণমূল-সিপিএম জোট হলে কেমন হবে? নেতাদের জোট হয়েছে। নিচুতলায় হয়নি। লিখে রাখুন, বিজেপির আসন কমবে না।’ তাঁর কাছ থেকে সরে গিয়ে মিডিয়া কো-অর্ডিনেটর ডঃ তরুণ কান্তি ত্রিপাঠির সঙ্গে ভোট নিয়ে আলোচনা। সেখানেও তিনিও টেনে আনলেন বাংলার প্রসঙ্গ। জানতে চাইলেন, ‘ভোটের লড়াই কেমন জমে উঠেছে। বিজেপির কটা আসন বাড়বে?’ নানা অঙ্ক তিনি বোঝাতে শুরু করলেন।
সেখান থেকে বেরিয়ে সমাজবাদী পার্টির অফিস। ভরদুপুরে পার্টি নেতা-কর্মীরা বসে-শুয়ে আছেন। নিরাপত্তারক্ষীকে বলে দেখা করলাম আশিস যাদবের সঙ্গে। তিনি বৃহস্পতিবারের অখিলেশের সভার প্রস্তুতি নিয়ে কথা বলছিলেন। কলকাতা থেকে এসেছি শুনেই আলোচনা থামিয়ে জানতে চান, ‘দিদির আসন বাড়বে তো? গতবার ৩৪ হয়েছিল। দেশের স্বার্থে বাড়া দরকার। উত্তরপ্রদেশে যে মহাজোট হয়েছে, তার সঙ্গে দিদি মিলে কেন্দ্রে নতুন সরকার তৈরি হবেই। দিদি কলকাতায় ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ড থেকে এই মহাজোটের সূচনা করেছেন। দিদিকে দরকার। বিজেপি যতই চেষ্টা করুক, প্রতিষ্ঠান বিরোধী ভোট পড়বেই। আমরা চাই দিদির আসন বাড়ুক।’
উত্তরপ্রদেশে এসে দিনভর বিভিন্ন স্তরের মানুষের সঙ্গে কথাবার্তায় বুঝলাম, ঘুরে ফিরেই আলোচনায় মমতা বন্দ্যেপাধ্যায় ও নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদি। কলকাতা থেকে ১৯০০ কিমি দুরের দেশের সর্ববৃহৎ রাজ্যের রাজধানীতে চর্চার অন্যতম বিষয়, মোদি-মমতা দ্বৈরথ। এদিন মনে হল, বাংলার মানুষকে সামনে পেয়ে দিদি বনাম মোদির যুদ্ধই এখন লখনউ মহানগরীর কৌতূহলের বিষয়। আর সেই সুযোগ হাতছাড়া করলেন না কেউই। দিদি-মোদির লড়াই কিন্তু আজ বাংলার মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। লোকসভা নির্বাচনের ভরকেন্দ্রই আপাতত বাংলা।