বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
মঙ্গলবার তাঁর নতুন নির্বাচনী কেন্দ্র কেরলের এই পাহাড়-জঙ্গলঘেরা কেন্দ্রের ভোট শেষমেশ নির্বিঘ্নেই শেষ হয়েছে। সকাল সাতটায় ভোট শুরুর আগেই অনেক বুথে লাইন পড়ে যায় উৎসাহী ভোটারদের। গোটা দিনেই ওয়ানাড়ে চোখে পড়েছে লাইনে মহিলা ভোটারদের উপস্থিতি। সকালের দিকে কিছু বুথে ইভিএমের গড়বড় নিয়ে কংগ্রেসের তরফে অভিযোগ করা হয় নির্বাচন কমিশনে। কমিশন অবশ্য দ্রুত সেই অভিযোগে কান দিয়ে ভোট মেশিন বদল বা মেরামত করে দেয়। ধীরগতিতে ভোট হওয়ার জন্য সন্ধ্যা সাতটার পরও ওয়ানাড়ের কিছু বুথে ভোটারদের লাইন লক্ষ্য করা যায়। তবে নির্ধারিত সময় সন্ধ্যা ছ’টা পর্যন্ত কংগ্রেস সভাপতির দাঁড়ানো কেন্দ্রে প্রদত্ত ভোটের হার প্রায় ৭৫ শতাংশ হবে বলে যুযুধান রাজনৈতিক দলগুলির হিসেব। শেষ পর্যন্ত তা আরও কিছুটা বাড়লেও তারা অবাক হবে না বলে মনে করছে। এমনকী, ওয়ানাড় কেরলের ২০টি আসনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভোট পড়ার রেকর্ড কায়েম করতে পারে বলেও তাদের অনুমান। সব দলের মতেই এর কারণ একটাই—কেন্দ্র থেকে স্বয়ং রাহুল গান্ধীর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা। ভোটারদের মধ্যে, বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে তাই ভোটদানের বাড়তি উৎসাহ ছিল এবার।
ওয়ানাড়ের ভোট পর্ব পরিচালনা করার জন্য এআইসিসি নেতৃত্ব বিশেষ পদক্ষেপ নিয়েছিল। সভাপতির জন্য কোনও ঝুঁকি তারা নিতে চায়নি। তাই ওয়ানাড়ের প্রাক্তন জেলা সভাপতি বিভি বালকৃষ্ণাণকে মুখ্য নির্বাচনী এজেন্ট এবং অপর নেতা আব্দুল মজিদকে অতিরিক্ত এজেন্ট করে ময়দানে ভোট সামলানোর দায়িত্ব দিয়ে তারা থেমে থাকেনি। ওয়ানাড়ে যে সাতটি বিধানসভা কেন্দ্র রয়েছে তার সব কটিতেই এআইসিসি থেকে একজন করে ভিন রাজ্যের নেতাকে ক্যাম্প করে থাকার নির্দেশ দেয়। একই সঙ্গে তাঁদের সাহায্য করার জন্য আরও সাতজন প্রদেশ নেতাকেও রাখা হয়। সার্বিকভাবে রাহুলের অফিসের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে তাঁরা এদিন চলেন নিচুতলা থেকে খবরাখবর জোগাড় করে। বালকৃষ্ণাণ গোটা কেন্দ্রের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে তথ্য সংগ্রহ করেন। অন্যদিকে মজিদ জেলাসদর কালপেট্টায় অবস্থিত দলীয় দপ্তর ও কেন্দ্রীয় নির্বাচনী অফিসের মধ্যে দৌড়ঝাঁপ চালিয়ে ‘ওয়ার-রুমে’র তদারকিতে ব্যস্ত থাকেন। সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রেই নির্বাচনী অফিস খুলে এক ঝাঁক তরুণ-তরুণীকে বসিয়ে গত এক তিন সপ্তাহ ধরে চলেছে এই ওয়ার-রুম।
তবে নিজের কেন্দ্রের ভোটের খবর জানতে সভাপতি নির্ভর করেছেন এদিন বেণুগোপাল ও রামচন্দ্রনের উপর। আসলে প্রাক্তন সাংসদ বেণুগোপাল নিজে আলাপুঝা কেন্দ্রের ভোটার হওয়ায় সকালের দিকে তিনি সেখানেই ছিলেন। তারপর দিনভর তিনি মূলত গোটা রাজ্যের সঙ্গে ওয়ানাড়ের ভোটের তদারকিতে ব্যস্ত থাকেন ফোনাফুনির মাধ্যমে। একইভাবে রামচন্দ্রন ভোট দিতে গিয়েছিলেন ভাদাকারায়। ভোটদানের পর তিনিও রাজ্যের পাশাপাশি ওয়ানাড়ের ভোটের খবর নেন জেলার নেতাদের কাছ থেকে। দুই শীর্ষস্থানীয় নেতার কাছ থেকে ওয়ানাড়ে শান্তিতে ও অবাধে ভোট হওয়ার খবর রাহুল মা সোনিয়া ও বোন প্রিয়াঙ্কাকেও জানিয়ে দেন বলে এআইসিসি সূত্রের খবর।
মালয়ালি রাজ্যের ভিআইপি কেন্দ্রের ভোট নিয়ে কোনও পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে গাজোয়ারির কোনও অভিযোগ আনেনি। কেরলের ঐতিহ্য বজায় রাখার ক্ষেত্রে এদিন সব পক্ষই অন্তত অবাধ ভোটের ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়। তবে বিজেপি তথা এনডিএ জোটের প্রার্থী তুষার ভেল্লাপল্লি এদিন রাহুলের বিরুদ্ধে নির্বাচনী বিধিভঙ্গের অভিযোগ জানিয়েছেন। কমিশনের কাছে পাঠানো অভিযোগপত্রে তিনি জানিয়েছেন, ভোট চলাকালীন এদিন সকালে তাঁর টুইটে প্রচার চালিয়ে প্রকাশ্যে প্রচার চালানোর ব্যাপারে বিধিভঙ্গ করেছেন। বাম প্রার্থী সিপিআইয়ের পিপি সুনীর বলেছেন, শান্তিতে ভোট হয়েছে। চমকে দেওয়ার মতো ফলের ব্যাপারে আমরা আশাবাদী।