বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
গুজরাত কংগ্রেস কর্তা সি জে চাদভা বললেন, ‘মোদিজি বলেছেন তো তিনি নাকি এবার বেঙ্গলে সারপ্রাইজ দেখাবেন? উনি বুঝতে পারছেন না যে, তার থেকে বশি বিস্ময় অপেক্ষা করছে তাঁর নিজের রাজ্যে। মিলিয়ে নেবেন।’ কেন? একটা কম্পিউটার প্রিন্ট আউট সামনে রেখে চাদভা বোঝালেন বিজেপির আত্মবিশ্বাসের ফাঁকফোকর আর গুজরাতের দুর্গের ফাটলের মানচিত্র। ২০১৪ সালের মহাজয়ের পর এই রাজ্যে তিনটি ফ্যাক্টর সবথেকে বড় মাথাব্যথা হয়েছে বিজেপির জন্য। ১) হার্দিক প্যাটেল ও পাটীদার আন্দোলন। ২) কৃষকদের প্রবল ক্ষোভ ৩) জিএসটি। এবং একটি ক্ষুদ্র হলেও চার নম্বর কারণ আছে। আদিবাসী ক্ষোভ। এই এতগুলো ফ্যাক্টরকে মেরামত করা অসম্ভব। হার্দিক সরাসরি কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। সুতরাং তাঁর প্যাটেল সংরক্ষণের আন্দোলনকারীরা এবার কংগ্রেসের পাশে। রাহুল গান্ধী লাগাতার মাটি কামড়ে পড়ে থেকে গুজরাতের বিধানসভা ভোটে গ্রাম ও কৃষকদের কংগ্রেসের কাছে টেনে আনতে সক্ষম হয়েছেন। সেটা প্রমাণিত ওই ভোটে। আর সেই কারণেই গ্রামীণ কেন্দ্রে কংগ্রেস এগিয়ে। কিন্তু চিন্তাজনক হল, শহুরে কেন্দ্রে থাবা বসাচ্ছে কংগ্রেস। উত্তর গান্ধীনগর ও কালোল কেন্দ্র দু’টি আমেদাবাদের লাগোয়া। এই দু’টি আসনে ২০১৭ সালে কংগ্রেস জয়ী হয়েছে। এবং তার থেকেও বড় সিঁদুরে মেঘ হল সানন্দ। যেখানে ন্যানো কারখানা। সেই কেন্দ্রে বিজেপি মাত্র দেড় বছর আগে বিধানসভা ভোটে জয়ী হয়েছিল মাত্র ৭ হাজার ভোটে। সুতরাং গ্রামীণ ও কৃষক ভোটের পাশাপাশি জিএসটি কিংবা নোট বাতিলের কারণে শহুরে ভোটব্যাঙ্কও বিজেপির হাতছাড়া হয়েছে। অর্থাৎ ভালো ফল তো দূরের কথা, এবার গুজরাত থেকে বিজেপি অন্তত ছয় থেকে সাতটি আসন হাতছাড়া করার আশঙ্কা করছেই। যদিও কংগ্রেস নেতা চাদভা দাবি করছেন, বিজেপি এবার ১২টির বেশি আসন পাবে না।
আমেদাবাদের অফিসে বসে বিজেপি মুখপাত্র নবীন প্যাটেল কিন্তু এসব অঙ্ক হেলায় উড়িয়ে দিয়ে বললেন, ‘এবার আমি আপনাকে শোনাচ্ছি ২০১৪ সালের পর গত পাঁচ বছরে কী কী এমন হয়েছে, যা আমেদাবাদ ও গুজরাতের ভোল বদলে দিচ্ছে। ১) মেট্রো রেল ২) ভারতের প্রথম বুলেট ট্রেন ৩) গোটা রাজ্যকে রেল, সড়ক, বিমান একই রুটে একটি কমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক ৪) সৌরাষ্ট্রের উন্নয়ন।’ প্রশ্ন হল, এতই যদি উন্নয়ন হল তাহলে বিজেপি ভয় পাচ্ছে কেন? ‘কে বলল ভয় পাচ্ছে?’ প্রশ্ন করলেন নবীন প্যাটেল। তাহলে কেন রাজ্যের সিংহভাগ কেন্দ্রেই জেতা এমপিকেই পাল্টে দেওয়া হয়েছে? কেন পুরনো জয়ী প্রার্থীদের সরিয়ে নতুন যুব প্রার্থী দেওয়া হয়েছে? বিজেপি সরাসরি জবাব না দিলেও হিসেবটি হল, নরেন্দ্র মোদি কোনও ঝুঁকিই নেননি। যত কম মার্জিনের আসন ছিল, তার সব আসনের প্রার্থী বদলে ফেলা হয়েছে। কিন্তু গ্রাম, কৃষক, প্যাটেল! এরাই কিন্তু বিজেপির ভাগ্যনিয়ন্তা হতে চলেছে গুজরাতে!