কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে পৃথক তুইপ্র্যাল্যান্ড রাজ্যের দাবিতে সরব থাকা আইপিএফটি’কে কাছে টেনে জোট করেছিল নরেন্দ্র মোদি-অমিত শাহ’র দল বিজেপি। ২৫ বছর টানা ক্ষমতায় থাকা বাম সরকারকে হটাতে তখন তুইপ্র্যাল্যান্ড নিয়ে কেন্দ্রের তরফে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠনের আশ্বাসও দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু এক বছরে সেই দাবি মেটানোর ধারেকাছে যায়নি দিল্লির সরকার। পাশাপাশি গ্রাম স্তরে বিভিন্ন কমিটির চেয়ারম্যান পদ নিয়েও বিজেপি তাদের বিশেষ পাত্তা না দেওয়ায় সব মিলিয়ে আইপিএফটি’র মধ্যে তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে দলের নিচুতলায় এই ক্ষোভ চরমে উঠেছে। এনিয়ে দলের দুই মন্ত্রী তথা সভাপতি এনসি দেববর্মা ও সাধারণ সম্পাদক মেবার জামাতিয়া’র উপর চাপও তৈরি হয়েছে প্রত্যাশিতভাবে। সংসদে গিয়ে রাজ্যের উপজাতিদের দাবিদাওয়া নিয়ে সরব হওয়ার জন্য অন্তত পূর্ব ত্রিপুরা কেন্দ্রটি যাতে তারা পায় সেজন্য বিজেপি নেতৃত্বের কাছে কাছে বেশ কিছু দিন আগে থেকেই দরবার শুরু করেন এনসি-মেবাররা। দলের অন্দরের ধূমায়িত ক্ষোভ এই কৌশলে সামাল দেওয়ার প্ল্যান করেন তাঁরা। কিন্তু তাঁদের সেই হিসেব মেলেনি দুটি আসনেই লড়াই করার ব্যাপারে বিজেপি অনড় মনোভাব নেওয়ায়। বিজেপি’র কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করেও পূর্ব আসনের দাবি পূরণে ব্যর্থ হন এনসি’রা।
এর পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি আইপিএফটি নেতৃত্ব প্রকাশ্যেই জানিয়ে দেন, জোট সরকারের শরিক হলেও তারা লোকসভা ভোটে দুটি আসনেই লড়বে। বিজেপি যদি তাদের অনড় মনোভাব ত্যাগ না করে তাহলে এই ভোটে তাদের ফল ভুগতে হবে। এমনকী, দুই কেন্দ্রের জন্য প্রার্থীর নামও তারা ঘোষণা করে রাখে। তারা ভেবেছিল, তাদের এই হুমকি’র ফলে হয়তো বিজেপি শেষমেশ পূর্ব কেন্দ্রটি তাদের জন্য ছেড়ে দেবে। কিন্তু বৃহস্পতিবার দোলের দিন রাতে দিল্লি থেকে দুই কেন্দ্রের জন্যই বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব প্রতিমা ও রেবতীর নাম ঘোষণা করে দেয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রতিমা শুক্রবার কয়েক হাজার সমর্থককে সঙ্গে নিয়ে ঢাকঢোল পিটিয়ে আগরতলায় মনোনয়ন জমাও দেন। রেবতী আগামী ২৫ তারিখ মনোনয়ন জমা দেবেন। বিজেপি’র এই অনমনীয় মনোভাব দেখে ওই রাতেই শুক্লচরণকে পশ্চিম কেন্দ্রে মনোনয়ন জমা করানোর সিদ্ধান্ত নেয় আইপিএফটি নেতৃত্ব। এদিন তারাও হাজারখানেক সমর্থককে হাজির করে সেই পর্ব সারে। সমর্থকদের সঙ্গে মিছিলে হেঁটে ডিএম অফিস পর্যন্ত যান এনসি-মেবাররা। যদিও কড়া রোদের কারণে এনসি তারপর অসুস্থ হয়ে পড়েন।
সংঘাতের এই আবহ সম্পর্কে মেবার এদিন বলেন, আমরা জোট ভাঙতে চাই না এখনও। পারস্পরিক বোঝাপড়ার রাস্তায় বিজেপি হাঁটতে চায়নি বলেই এই মুখোমুখি লড়াই হচ্ছে। আমাদের সোজা কথা—একটা নাও, একটা দাও। দুটোই খাব—ওদের এই আগ্রাসী মনোভাবে রাজ্যের উপজাতিরা বেজায় ক্ষুব্ধ। ভোটে সেটা ওরা টের পাবে। মেবারদের দাবি উড়িয়ে দিয়ে প্রতিমা বলেন, ওদের সাংগঠনিক ক্ষমতার দাবি কেবল মুখেই। উপজাতি এলাকায় আমাদের ১০ জন বিধায়ক রয়েছেন। ওদের রয়েছেন আটজন। রাজ্য তথা দেশের মানুষ আমাদের সরকার এবং সর্বোপরি মোদিজি’কে দেখে ভোট দেবে। আর হিম্মৎ থাকলে ওরা সরকার থেকে হটে যাক না দেখি।