বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
দু’দিন আগেই লন্ডনের এক আদালত নীরব মোদির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল। ১৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকার পিএনবি জালিয়াতির মাথা ফেরার এই হীরে ব্যবসায়ী। অর্থ তছরুপের মামলায় ব্রিটেনের কাছে তাঁকে প্রত্যর্পণের আবেদন জানিয়েছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। সেই আবেদনের ভিত্তিতেই বিলেতের আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। ওই পরোয়ানা জারির পরপরই নীরবকে গ্রেপ্তার করা হল। মেট্রোপলিটন পুলিসের তরফে এদিন এক বিবৃতিতে নীরব মোদিকে গ্রেপ্তারের কথা জানানো হয়। ওই বিবৃতি অনুযায়ী, লন্ডনের হলবর্ন থেকে মঙ্গলবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে ফেরার এই হীরে ব্যবসায়ীকে। সম্প্রতি ওয়েস্ট এন্ডের সেন্ট্রাল পয়েন্টের একটি বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্টে থাকছিলেন নীরব। মেট্রোপলিটন পুলিসের বিবৃতি থেকে স্পষ্ট, ওই এলাকা থেকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাঁকে। গ্রেপ্তারের পর বুধবার ফেরার এই ব্যবসায়ীকে তোলা হয় ওয়েস্টমিনস্টার ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে। জামিনের আবেদন খারিজ করে নীরবকে আগামী ২৯ মার্চ পর্যন্ত হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
আদালতে তোলার পর এদিন জেলা বিচারক মেরি মালোন নীরবকে জামিন দিতে অস্বীকার করেন। তিনি সাফ জানিয়ে দেন, জামিন মঞ্জুর হলে আত্মসমর্পণের রাস্তায় অভিযুক্ত হাঁটবেন না বলেই পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি ইঙ্গিত দিচ্ছে। পাশাপাশি নীরবের বিরুদ্ধে যেভাবে বিশাল পরিমাণ আর্থিক জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে, জামিন খারিজের ক্ষেত্রে সেটিও বিবেচ্য হয়। ২৯ মার্চ পর্যন্ত নীরবকে হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। এদিন সাদা শার্ট ও ট্রাউজার পরে আদালতে হাজির হন ফেরার এই ব্যবসায়ী। নিজের নাম নিশ্চিত করা ও প্রত্যর্পণে অসম্মতি জানাতে কাঠগড়ায় ওঠেন নীরব। তাঁর আইনি দলের নেতৃত্বে ছিলেন চার্চ কোট চেম্বারের ব্যারিস্টার জর্জ হেপবার্ন-স্কট ও তাঁর সলিসিটার আনন্দ দুবে। প্রত্যর্পণ মামলায় এই একই আইনি দলকেই ব্যবহার করছেন আরও এক ফেরার ব্যবসায়ী বিজয় মালিয়াও। নীরবের এই আইনি দলের উল্টোদিকে ভারতীয় কৃর্তৃপক্ষের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করতে ক্রাউন প্রসিকিউশন সার্ভিসের (সিপিএস) পক্ষে উপস্থিত হন ড্রাইস্টোন চেম্বারের ব্যারিস্টার জোনাথন সোয়াইন। সিপিএসের তরফে আদালতে বলা হয়, ৪৮ বছর বয়সি এই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ভারতে ২০০ কোটি মার্কিন ডলারের জালিয়াতি ও অর্থ তছরুপের অভিযোগ রয়েছে। ব্রিটেনের আইন অনুযায়ী তাঁর ৭ থেকে ১০ বছরের জেল হতে পারে। নীরবকে জামিন দেওয়ার বিরোধিতা করেন ব্যারিস্টার সোয়াইন। জালিয়াতির দিকটি তুলে ধরতে তিনি জানান, ফেরার এই ব্যবসায়ীর কাছে তিনটি বৈধ ভারতীয় পাসপোর্ট ছিল। সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, সিঙ্গাপুর ও হংকংয়ের রেসিডেন্ট কার্ডও রয়েছে।
উল্টোদিকে নীরব মোদির আইনি দলের বক্তব্য ছিল, তাঁর ছেলে গত পাঁচ বছর ধরে ব্রিটেনের স্কুলে পড়াশোনা করছে। নীরব ব্রিটেনে কাজ করেন। নিয়মিত কর দেন। জামিনের সিকিউরিটি হিসেবে নীরবের তরফে ৫ লক্ষ পাউন্ড পেশ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। যদিও তা খারিজ করে দেন বিচারক।