বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
এদিন অনুষ্ঠানটি শুরু হওয়ার কথা ছিল বেলা ১১টা ৩০ মিনিট নাগাদ। তবে তা শেষ পর্যন্ত শুরু হয় দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটে। বাড়তি উপস্থিতি ছিল বকরওয়াল সম্প্রদায়ের সামুষের। সোপিয়ান, কুপওয়ারা, বান্দিপোরা ও শ্রীনগর জেলা থেকে বহু মানুষ উপস্থিত হয়েছিলেন ফয়জলের রাজনৈতিক দলের আনুষ্ঠানিক সূচনায়। ফয়জল নিজে বক্তব্য রাখলেন প্রায় ২৪ মিনিট। কেন রাজনীতিতে আসার সিদ্ধান্ত, এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর থেকে কত রকমের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হচ্ছে, সেসব জানালেন। সামনে আনলেন দলের ‘ভিশন ডকুমেন্ট’। সেখানে সব মিলিয়ে ২৯টি লক্ষ্যের কথা বলা হয়েছে। যদিও অধিকাংশ ক্ষেত্রের যার সঙ্গে মিল রয়েছে কাশ্মীরের রাজনৈতিক দলগুলির ইস্তাহারের। উদাহরণ হিসেবে ফয়জলের দলের প্রথম লক্ষ্য জম্মু ও কাশ্মীরের মানুষের ইচ্ছা ও আকাঙ্ক্ষা মোতাবেক শান্তিপূর্ণভাবে কাশ্মীর সমস্যার সমাধান। তবে তারই মধ্যে ফয়জলের দাবি, গত ৭০ বছরে বেহাল দশা ছাড়া আর কিছুই চোখে পড়েনি। আমাদের উদ্দেশ্য হল রাজ্যকে এক নয়া রাজনৈতিক দিশা দেখানো। আমাদের এই দল কোনও বিশেষ অঞ্চল বা ধর্মের ভিত্তিতে গঠিত হয়নি। আমি বন্ধুত্বের বার্তা পাঠাতে চাই। কাশ্মীরি পণ্ডিতদের সসম্মানে প্রত্যাবর্তন ছাড়া আমাদের এই রাজনীতি অসম্পূর্ণ। জম্মু ও কাশ্মীরের অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলির তরফে ইতিমধ্যেই কড়া প্রতিক্রিয়া আসতে শুরু করেছে। যদিও তা নিয়ে ভাবিত নন ফয়জল। প্রাক্তন এই আইএএস অফিসার বলছেন, নতুন চিন্তাভাবনাকে সব সময় সমালোচনার মুখে পড়তে হয়। আমরা অল্প বয়সিদের জন্য একটি মঞ্চ তৈরি করেছি। আগে যারা সমর্থন করছিল, এখন তারা আরএসএস ও বিজেপির এজেন্ট বলে দোষারোপ করছে। আমি মাঝেমধ্যেই ইমরান খান ও অরবিন্দ কেজরিওয়ালের উদাহরণ দিই। কারণ বিশ্বাসের জায়গা থেকে তাঁরা সরে যাননি। ২২ বছর পর ইমরান খান নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন। তবে তাঁকে সেনার লোক বলা হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে শেহলা রশিদ বলেন, কাশ্মীরের জন্য পৃথক আইন প্রচলিত থাকার বিষয়টি তাঁকে রাজনীতিতে যোগ দিতে বাধ্য করেছে। রশিদের কথায়, আইন নিয়ে আমাদের কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু তা প্রত্যেকের জন্য সমান হতে হবে। আমাদের রাস্তা, বিদ্যুৎ ও পানীয় জল চাই। কিন্তু তা দিতে হবে সম্মানের সঙ্গে। এই নতুন দলে মহিলাদের যোগদান করার আহ্বান জানিয়ে রশিদ বলেন, কাশ্মীর ইস্যুর সমাধানের রাস্তা তৈরি করবে তাঁদের এই দল।
ফয়জলের রাজনীতিতে যোগদান ও নতুন দল গড়ার এই সিদ্ধান্ত নিশ্চিতভাবেই ন্যাশনাল কনফারেন্স (এনসি) ও পিডিপির কাছে বড় ধাক্কা হতে চলেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতিমধ্যেই বিশাল সমর্থন পেতে শুরু করেছেন প্রাক্তন এই আইএএস অফিসার। ওমর আবদুল্লা ও মেহবুবা মুফতির ভোটব্যাঙ্কে এর প্রভাব পড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে। ফয়জলের এই রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের উপর গুরুত্ব দিয়ে নজর রাখছে উপত্যকার মূল স্রোতের সব দলই। জল্পনা অনুযায়ী, পিডিপি তাঁকে চাইছিল। যদিও সেই জল্পনা খারিজ করে দিচ্ছেন ফয়জল। রাজনীতি যোগদানের সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর থেকেই এনসি ও পিডিপির বহু সমর্থক ফয়জলের প্রতি তাঁদের আস্থা দেখাতে শুরু করেছেন। এরকমই একজন হলেন মহম্মদ আফজল। বান্দিপোরার কালুসা গ্রামের এই প্রবীণ মানুষটি ফয়জলের হয়ে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাঁর এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে। আফজল এনসির সক্রিয় কর্মী ছিলেন। তিনি বলছেন, বান্দিপোরা থেকে আটটি গাড়িতে শ্রীনগরের এই অনুষ্ঠানে এসে যোগ দিয়েছেন ন্যাশনাল কনফারেন্সের প্রাক্তন কর্মীরা। আগের সরকারগুলি আমাদের জন্য কিছুই করেনি। আমরা ফয়জলকে একটা সুযোগ দিতে চাই।
শাহ ফয়জলের সঙ্গে শেহলা। -পিটিআই