জম্মু ও শ্রীনগর, ২১ ফেব্রুয়ারি (পিটিআই): আইন-শৃঙ্খলার পরিস্থিতি উন্নতি হওয়ায় কার্ফু তুলে নেওয়া হল জম্মু থেকে। পুলওয়ামা ঘটনার সাতদিন পর কার্ফু উঠে যাওয়ায় ছন্দে ফিরল জনজীবন। বৃহস্পতিবার জম্মুর জেলা শাসক রমেশ কুমার কার্ফু তুলে দেওয়া নিয়ে দু’টি নির্দেশ জারি করেন। ওই নির্দেশে প্রথমে সকাল সাতটা থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত কার্ফু তুলে নেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়। কিন্তু জেলাজুড়ে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না হওয়ায় এদিন সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কার্ফু তুলে নেওয়া হয়। পাশাপাশি টুজি ইন্টারনেট পরিষেবাও চালু হয়েছে জম্মুতে। তবে কার্ফু তুলে নেওয়া হলেও বিপুল সংখ্যক নিরাপত্তা বাহিনীও মোতায়েন রয়েছে শহরে। এদিন সকালে পুলিসের তরফে কার্ফু তুলে নেওয়ার কথা মাইকে ঘোষণা করা হয়। প্রশাসনের ঘোষণার পরপরই শহরের দোকানপাট খুলে যায়। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সংগ্রহ করতে বাইরে বেরিয়ে পড়েন মানুষ। পাশাপাশি সাতদিন বন্ধ থাকার পর এদিনই প্রথম স্কুল চালু হয়। নবম ও দশম শ্রেণির পরীক্ষা নির্দিষ্ট সময়সূচি মেনেই হবে বলে শিক্ষা দপ্তরের তরফে জানানো হয়েছে। তবে সমস্ত পরীক্ষা বাতিল করেছে জম্মু বিশ্ববিদ্যালয়। ব্যবসায়িক কাজকর্মও স্বাভাবিকভাবে শুরু হয়। শহরের যানবাহনও এদিন স্বাভাবিক ছিল। পুলওয়ামায় সিআরপিএফ কনভয়ে জঙ্গি হামলার পর থেকেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে জম্মু। জওয়ানদের উপর জঙ্গি হামলার প্রতিবাদে শুক্রবার পথে নামেন সাধারণ মানুষ। ব্যাপক বিক্ষোভ হয় জম্মুতে। তারপরই জারি করা হয় কার্ফু।
এদিকে উপত্যকায় কিছু রাজনৈতিক নেতার নিরাপত্তা তুলে দেওয়াকে ‘বিবেচনাহীন’ সিদ্ধান্ত আখ্যা দিলেন ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ওমর আবদুল্লা। তিনি ট্যুইটারে লিখেছেন, জম্মু ও কাশ্মীরের মূলস্রোতের রাজনৈতিক নেতা ও তাঁদের অফিসের নিরাপত্তা তুলে দেওয়ায় রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের মধ্যে ভয় ঢুকে গিয়েছে। পরিস্থিতি এমনই, কেউ নিশ্চিত হয়ে বলতে পারবেন না যে, আগামীকাল তাঁর নিরাপত্তা থাকবে কি না। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের গভর্নর সত্যপাল মালিকের প্রশাসনকে বিষয়টি বিবেচনা করার অনুরোধ জানিয়েছেন ওমর। পাশাপাশি তিনি কেন্দ্রকে একহাত নিয়ে বলেন, সন্ত্রাসের উত্তর হিংসা নয়। আমরা শান্তি চাই। তবেই কাশ্মীরে শান্তি ফিরবে। সেটা কেন্দ্র বুঝতে চাইছে না। কাশ্মীরে পরিস্থিতির উন্নতির জন্য কেন্দ্রে ক্ষমতার বদল প্রয়োজন। সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না কেন্দ্র, অথচ সাধারণ মানুষকে হেনস্তা করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, গত বুধবার ১৮ জন বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা সহ মোট ১৫৫ জন ব্যক্তির নিরাপত্তা তুলে নেয় জম্মু ও কাশ্মীর প্রশাসন।