বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
রাজ্যপালের সঙ্গে বেশ কিছুদিন ধরেই সংঘাত শুরু হয়েছে রাজ্যের শাসক শিবিরের। তাঁর কর্মসূচি বা মন্তব্যকে কেন্দ্র করে মূলত এই বিরোধ তৈরি হয়েছে বলে সরকারপক্ষের বক্তব্য। শাসকদলের অভিযোগ, সমান্তরাল প্রশাসন চালানোর অভিপ্রায় প্রকাশ করছেন ধনকার। কার্যত কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপি’র মুখপাত্রের মতো আচরণ করছেন তিনি। অন্যদিকে, ধনকার খোলাখুলি বুঝিয়েছেন, সংবিধান ও আইনের চৌহদ্দির মধ্যে থেকেই তিনি সাংবিধানিক প্রধানের দায়িত্ব পালন করছেন। রাজভবনে বসে ‘পুতুল রাজ্যপাল’ হওয়ার বাসনা তাঁর নেই। তাই রাজ্যের সাধারণ মানুষের কাছে তিনি যখন মনে করবেন, যাবেন। তবে রাজ্য-রাজ্যপালের এই সংঘাতের জের বাংলার গণ্ডি ছাড়িয়ে এখন সংসদের অন্দরেও গিয়ে পড়েছে। সেখানে এনিয়ে বিজেপি-তৃণমূল তরজা শুরু হয়েছে এই ইস্যুতে। পাশাপাশি বুধবার ধনকারকে মুর্শিদাবাদে তৃণমূলের কালো পতাকা দেখতে হয়েছে পুলিসের সামনেই।
উত্তরোত্তর বেড়ে চলা তিক্ততার ছাপ এবার পড়তে চলেছে সংবিধান দিবস পালনকে ঘিরেও। রাজভবনের দাবি, কাশ্মীর ইস্যুতে ৩৭০ ধারা বাতিলের পরিপ্রেক্ষিতে ২৬ নভেম্বর দিনটি এবার গুরুত্ব সহকারে পালনের উপর রাজ্যপাল বিশেষভাবে জোর দিয়েছেন। বিগত কয়েক বছর পালন করা হলেও একান্ত আলোচনায় আধিকারিকদের তিনি বুঝিয়েছেন, ৩৭০ ধারা বাতিলের কারণে বাবাসাহেব আম্বেদকর এবং শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের আত্মার শান্তি প্রাপ্তি হিসেবে এবার সংবিধান দিবস বাড়তি গুরুত্ব বহন করবে। সেই কারণে মাসখানেক আগে তিনি নিজে রাজভবনের এই অনুষ্ঠানে হাজির থাকার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়ে চিঠি লেখেন। চিঠি দেন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতিকেও। দিন দশেক আগে এই অনুষ্ঠানের অন্যতম বক্তা হিসেবে উল্লেখ করে ফের মমতাকে চিঠি পাঠানো হয়। দেওয়া হয় গোটা অনুষ্ঠানসূচিও। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও চিঠির উত্তর নবান্ন থেকে পাননি রাজ্যপাল।
এরই মধ্যে মঙ্গলবার জানা যায় যে, সংবিধান দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরতে বিধানসভায় দু’দিন ধরে বিশেষ অধিবেশন বসানোর উদ্যোগ নিয়েছে শাসকপক্ষ। এই খবর কানে যাওয়ার পরই রাজ্যপাল সোশ্যাল মিডিয়ায় রাজভবনের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতিকে ২৬ তারিখ আমন্ত্রণের বিষয়টি জানিয়ে দেন। সময়পোযোগী হলেও যার পিছনে নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য রয়েছে বলে পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করছে। সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর ওইদিন রাজভবনে যাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। তিনি বিধানসভার কর্মসূচিতেই নিজেকে ব্যস্ত রাখবেন বলে মনে করা হচ্ছে। তবে তিনি শেষমেশ না এলেও বিভিন্ন বিচারপতি, উপাচার্য, সংবাদমাধ্যম সহ সমাজের নানা ক্ষেত্রের কিছু বিশিষ্টদের উপস্থিতিতে রাজভবনে অনুষ্ঠান করতে অনড় রাজ্যপাল।