গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
রাজ্য পর্যায়ে প্রতিযোগিতায় সব জেলা থেকে যে হস্তশিল্প সামগ্রীগুলি আনা হয়েছে, সেগুলি আগামী ২৩ নভেম্বর থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজ্যি সরকারের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত নিউ টাউনে ইকো পার্কের পাশে হস্তশিল্প মেলায় থাকবে। পুরস্কৃত সামগ্রীগুলিও চিহ্নিত করা থাকবে। ক্ষুদ্র শিল্প দপ্তরের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ‘কারুভাসা’ স্টলে গিয়ে কেউ চাইলে ওই হস্তশিল্পগুলি কিনতে পারবেন। আগ্রহী ক্রেতাদের সঙ্গে শিল্পীর সরাসরি যোগাযোগ করিয়ে দেবেন তাঁরা। শিল্পী না থাকলেও তাঁর সৃষ্টি শিল্প কেনা যাবে। বিক্রির অর্থ চলে যাবে শিল্পীর কাছে।
রাজ্যে অধিকাংশ জেলা থেকে পুরস্কৃত হয়ে মনোনীত হওয়া ১২টি করে হস্তুশিল্প সামগ্রী রাজ্য প্রতিযোগিতায় এসেছিল। জেলা পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় সার্টিফিকেটের সঙ্গে পাঁচশো থেকে দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত পুরস্কার দেওয়া হয়েছে শিল্পীদের। রাজ্য পর্যায়ে পুরস্কৃত হবে মোট ৭৫টি হস্তশিল্প সামগ্রী। তাদের এক থেকে পাঁচ হাজার টাকা করে আর্থিক পুরস্কার দেওয়া হবে।
এই হস্তশিল্পগুলি মূলত গ্রামীণ শিল্পীদের হাতে তৈরি। দপ্তরের আধিকারিকরা জানালেন, এই শিল্পীদের অনেকেরই প্রথাগত শিল্প শিক্ষা নেই। কিন্তু তাঁদের রক্তে আছে শিল্প সৃষ্টির দক্ষতা। গত বছর হস্তশিল্প মেলার আগে এক দরিদ্র মহিলা মেলায় অংশ নেওয়ার আশায় ছুটে এসেছিলেন তাঁদের কাছে। উদ্দেশ্য ছিল মেলায় সামগ্রী বিক্রি করে অসুস্থ স্বামীর চিকিৎসার খরচের সঙ্গে বাড়ি ভাড়ার টাকার ব্যবস্থা করা। ওই মহিলা তার দিয়ে হস্তশিল্পের সামগ্রী তৈরি করেন। মেলা প্রাঙ্গণে অল্প জায়গা পেয়ে মাত করে দেন তিনি। দর্শকের ভিড় লেগে যায় ওইটুকু জায়গাটির সামনে। প্রায় তিন লক্ষ টাকার সামগ্রী বিক্রি করে সংসারের অভাব মিটিয়েছেন তিনি। এদিনের প্রতিযোগিতায় ওই মহিলা শিল্পীর তৈরি তারের মোটরবাইক স্থান পেয়েছে। যার বিক্রয়মূল্য ধার্য হয়েছে ১০ হাজার টাকা।
এনআরসি ছাড়াও এই প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন হস্তশিল্প সামগ্রীর মধ্যে দিয়ে বিভিন্ন ভাবনা-চিন্তা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। বাঁকুড়ার এক শিল্পী ডোকরার কাজের মাধ্যমে তুলে ধরেছেন গাছ ও জল সংরক্ষণের বার্তা। একটি গাছ তৈরি করা হয়েছে। যার সামনে রয়েছেন দেবী দুর্গা। সরস্বতী, লক্ষ্মী, গণেশরা রয়েছেন গাছে। এর বিক্রয়মূল্য ধার্য হয়েছে ৬৫ হাজার টাকা। এক লক্ষ টাকা বিক্রয়মূল্যে রাখা আছে একটি খেলার ট্রফি। যেটি তৈরি হয়েছে, ধান, পাট ও ধাতু দিয়ে। এক লক্ষ টাকা মূল্যের বাঁশকাঠির তৈরি সাজানো আয়না ছিল প্রতিযোগিতায়। সঙ্গীত সম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকার অসুস্থ হয়ে মুম্বইয়ের হাসপাতালে থাকলেও কাঠ খোদাইয়ে তৈরি তাঁর মূর্তি যোগ দিয়েছে প্রতিযোগিতায়।