পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
কেরল সিপিএম সূত্রের খবর, দলের অন্দরে যথেষ্ট জনপ্রিয় পি জয়রাজনের মনের অবস্থা এখন অনেকটা আম ও ছালা দুই-ই হারানোর যন্ত্রণা। কান্নুর সংলগ্ন ভারাকারা লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী হয়ে তিনি কংগ্রেসের কাছে পরাজিত হয়েছেন। ফলে তাঁর এমপি হওয়া হয়ে ওঠেনি। তাঁকে নিয়ে বিস্তর অভিযোগ ও বিতর্ক অবশ্য রয়েছে। যদিও সে সব বিতর্ককে আমল না দিয়ে বিজয়ন এর আগে বরাবরই পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন বলে দুবার পদ থেকে সরে গিয়েও তা ফিরে পেতে সক্ষম হয়েছিলেন। কিন্তু জেলা সম্পাদকের পদে ফিরে গিয়ে দলের নেতা হিসেবে ফের নিজের ক্ষমতা জাহির করার সুযোগও এবার আর তাঁর রইল না। নেতৃত্বের এই কৌশল পরে তিনি বুঝতে পেরেছেন বলে তাঁর ঘনিষ্ঠরা বলছেন। তবে তাঁরা ইতিউতি এব্যাপারে পিনারাইয়ের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ব্যক্ত করতে শুরু করেছেন। যদিও রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্য বলেছেন, পি জয়রাজনের শরীর এখন তেমন ভালো নেই। স্নায়ুরোগে তিনি আক্রান্ত বলে জেলা সম্পাদকের গুরু দায়িত্ব থেকে তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এর পিছনে অন্য কোনও কারণ বা উদ্দেশ্য নেই।
দল বা নেতৃত্ব যাই ব্যাখ্যা তথা যুক্তি দিক, কেরল সিপিএমের বহু সদস্য-সমর্থক বা রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক কিন্তু তা চট করে বিশ্বাস করতে নারাজ। তাঁদের কথায়, পি জয়রাজনের রাজনৈতিক অতীত বহু বিতর্কে ভরা। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক খুনের অভিযোগ পর্যন্ত রয়েছে। কান্নুরে আরএসএস তথা গেরুয়া শিবির শুধু নয়, যে কোনও বিরোধী শক্তিকেই তিনি সংগঠন আর প্রশাসনিক ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে দমিয়ে রেখেছেন বরাবর। কিন্তু পার্টি অন্ত প্রাণ বলে যাবতীয় বিতর্ককে পিছনে ফেলে দলের ভিতরে নিজেকে জনপ্রিয় হিসেবেই তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছেন। দলে তাঁর জনপ্রিয়তা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে ভোটের অনেক আগেই তাঁকে নিয়ে গান, কবিতা ছড়িয়ে পড়েছিল। তাঁর ছবিসহ প্রশংসাসূচক স্লোগানের বিশালাকৃতির ফ্লেক্স ছেয়ে গিয়েছিল গোটা কান্নুর জুড়ে। এনিয়ে দলে একদা সমালোচনা হলেও শেষ পর্যন্ত সাত খুন মাফ হয়ে যায়। তবে বিজয়নরা তাঁর এই জনপ্রিয়তাকেই কৌশল হিসেবে ব্যবহার করে তাঁকে এবারের ভোটে প্রার্থী করেন। এর্নাকুলাম এবং কোট্টায়াম জেলার সম্পাদককেও এবার তাঁরা প্রার্থী করেছিলেন। দলের নিয়ম মোতাবেক প্রার্থী হওয়ার কারণে সাময়িকভাবে জেলা সম্পাদকের পদ ছেড়ে দিতে হয়েছিল তিনজনকেই। কিন্তু বাকি দু’জন ফের স্বপদে ফিরলেও নিজের ঘনিষ্ঠ পি জয়রাজনকে সেই সুযোগ না দেওয়ার পিছনে অন্য কোনও যুক্তিগ্রাহ্য কারণ থাকতে পারে না। আসলে ঘরপোড়া গোরু হিসেবে বিজয়নরা সিঁদূরে মেঘ দেখতে পেয়েছেন বলেই পি জয়রাজনকে সুকৌশলে ‘না ঘরকা, না ঘাটকা’ অবস্থায় এনে ফেললেন। জয়রাজন অবশ্য এখনও এনিয়ে মুখ খোলেননি বা খুলতে চাননি।