পেশা ও ব্যবসায় অর্থাগমের যোগটি অনুকূল। বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ বৃদ্ধি পেতে পারে। ... বিশদ
গত কয়েকমাসে কলকাতা সহ বিভিন্ন জেলা থেকে বিপুল পরিমাণ সোনা উদ্ধার করেছে শুল্ক দপ্তর ও ডিরেক্টর অব রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্স। যার সবটাই এসেছে বিদেশ থেকে চোরাপথে। সোনা পাচারের তদন্ত করতে গিয়ে দুটি বিষয় অফিসারদের নজরে এসেছে। একটি হল, বিদেশ থেকে আনা চোরাই সোনা দ্রুত গলিয়ে ফেলা হচ্ছে। ফলে বোঝা যাচ্ছে না, ওই সোনা কোন দেশের। সেই সোনাই পাঠানো হচ্ছে বিভিন্ন জায়গায়। তা দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে বিভিন্ন অলঙ্কার। দ্বিতীয়টি হল, ছোটখাট দোকানও চোরাই সোনা দিয়ে গয়না প্রস্তুত করে তাতে হলমার্ক লাগিয়ে বিক্রি করছে। হলমার্ক থাকলেও দেখা যাচ্ছে, সেই সোনা গুণমানে ঠিক নয়।
যেভাবে ছোটখাট দোকানে হলমার্ক যুক্ত সোনার গয়না বিক্রি হচ্ছে, তাতে সন্দেহ জাগে শুল্ক দপ্তরের অফিসারদের। হলমার্ক পাওয়ার জন্য এই দোকানগুলি সব মানদণ্ড পূরণ করছে কি না, তা নিয়ে খোঁজখবর শুরু করতেই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে। দেখা যায়, অখ্যাত দোকানের একটা বড় অংশই হলমার্ক পাওয়ার শর্ত পূরণ করছে না। তবে নামজাদা দোকানগুলি নিয়ে এমন অভিযোগ নেই। তাদের নিয়ে কোনও সমস্যাও নেই। এই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার এক কর্তার কথায়, হলমার্ক সার্টিফিকেট পেতে হলে নির্দিষ্ট কিছু মানদণ্ড আছে। এরজন্য ব্যুরো অব ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ডস-এর কাছে সংশ্লিষ্ট দোকানিকে আবেদন করতে হয়। জানাতে হয়, তিনি হলমার্ক যুক্ত সোনা বিক্রি করবেন। এরজন্য ওই সংস্থার থেকে সার্টিফিকেট নিতে হয়। সংস্থা স্বীকৃত যে হলমার্ক সেন্টার রয়েছে, সেখানে গয়না নিয়ে গিয়ে হলমার্ক করিয়ে আনতে হয় সংশ্লিষ্ট দোকানিকে। সেখানে ওই গয়না পরীক্ষার পর তাতে হলমার্ক লাগানো হয়। কোন গয়নার ক্ষেত্রে কতটা চার্জ নেওয়া হবে, তা নির্দিষ্ট করে দিয়েছে ব্যুরো অব ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ডস। এরজন্য কর দিতে হয় কেন্দ্রীয় সরকারকে।
শুল্ক দপ্তরের কর্তাদের নজরে এসেছে, এই নিয়মের অধিকাংশই মানেন না ছোট বা ভুঁইফোঁড় দোকানদাররা। ব্যুরো অব ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ডস-এর দেওয়া শংসাপত্র তাঁদের কাছে থাকে না। এমনকী অনেক ক্ষেত্রে জাল সার্টিফিকেট বানিয়েও রেখে দেন তাঁরা। খরিদ্দার দেখতে চাইলে সেটাই দেখিয়ে দেওয়া হয়। সেটি আসল না নকল, তা খালি চোখে বোঝা মুশকিল। হলমার্ক সেন্টারের একাংশের সঙ্গে যোগসাজশ গড়েই এই কাজ করছেন ওই অংশের স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা। পরীক্ষাগারে সেই অলঙ্কার পরীক্ষা না করেই লাগানো হচ্ছে হলমার্ক। অর্থাৎ গুণমান যাচাইয়ের কোনও পদ্ধতিই মানা হচ্ছে না। সরকার অলঙ্কার পরীক্ষার জন্য যে চার্জ নির্দিষ্ট করে দিয়েছে, এক্ষেত্রে তাও নেওয়া হচ্ছে না। ইচ্ছামতো দামের বিনিময়ে দিয়ে দেওয়া হচ্ছে হলমার্ক।
হলমার্ক নিয়ে সাধারণ মানুষের ধারণা কম থাকায় এই সুযোগ নিচ্ছে ভুঁইফোঁড় দোকানদারদের একাংশ। কারা এই কাজ করছে এবং কোন কোন সেন্টার এই কাজ চালাচ্ছে, সেই তথ্যই জোগাড় করছেন শুল্ক দপ্তরের অফিসাররা। এই সংক্রান্ত একটি তালিকাও তৈরি করা হয়েছে। গাফিলতি ধরা পড়লে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে ইঙ্গিত মিলেছে। এদিকে, বিআইএসের হলমার্ক বিভাগের আধিকারিক দীপক পাত্রের বক্তব্য, এই সংক্রান্ত বিষয়ে অভিযোগ জানানোর একটি সেল রয়েছে। নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তাঁরা নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেবেন।