শরীর ভালো যাবে না। সাংসারিক কলহবৃদ্ধি। প্রেমে সফলতা। শত্রুর সঙ্গে সন্তোষজনক সমঝোতা। সন্তানের সাফল্যে মানসিক ... বিশদ
আজ বৈঠকে বছরে ৫৫ হাজার কোটি টাকার ঋণ মেটানোর পরেও পশ্চিমবঙ্গে গত আট বছরে কতটা উন্নয়ন হয়েছে, তা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে একটি রিপোর্ট দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের পর আগামীকাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গেও মুখ্যমন্ত্রী দেখা করতে পারেন। তিনি নিজেই জানিয়েছেন, দিল্লি এলে প্রধানমন্ত্রীর পাশাপাশি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গেও দেখা করি। তাই আগামীকাল আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে সময় চেয়েছি। সেক্ষেত্রে বৃহস্পতিবার বিজেপি সভাপতি তথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে এই প্রথম মুখোমুখি কথা হতে পারে মমতার।
লোকসভা ভোট ও তৎপরবর্তী পর্বে মোদি-মমতার রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব ক্রমেই তুঙ্গে উঠেছে। ৩৭০ থেকে এনআরসি, প্রায় প্রতিটি ইস্যুতেই মোদি সরকারের কঠোরতম সমালোচক, সংসদের অন্দরে ও বাইরে তৃণমূলই। সিবিআইকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে, এই অভিযোগ তুলে মমতা লাগাতার আক্রমণ করেছেন মোদি সরকারকে। রাজনৈতিকভাবেও রাজ্য বিজেপি নয়, মমতা বরাবর তীক্ষ্ম আক্রমণ করেছেন মোদি এবং অমিত শাহকেই। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচন যতই এগিয়ে আসছে, মমতার বিজেপি বিরোধিতা আরও প্রবল হচ্ছে। বিজেপির অন্যতম প্রধান এজেন্ডা এনআরসির বিরুদ্ধে তিনি নিজেই কয়েকদিন আগে প্রতিবাদ মিছিলও করেন। দ্বিতীয় মোদি সরকারের প্রথম চার মাসে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, নীতি আয়োগ ও সরকারের ডাকা একটি বৈঠকেও হাজির না হয়ে মমতা তাঁর কট্টর মোদি-বিরোধী বার্তা দিয়ে চলেছেন।
আর ঠিক এমতাবস্থায় পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি ছাড়া আকস্মিক দিল্লি এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কেন বৈঠক করলেন, তা নিয়ে চরম কৌতূহলের সঞ্চার হয়েছে। নিজেই কৌতূহল উস্কে দিয়ে আজ মমতা সাংবাদিকদের বলেছেন, কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের মধ্যে স্বাভাবিক নিয়মেই বৈঠক হয়েছে। তবে কিছু রাজনৈতিক কথাবার্তাও এসেছে। কী সেই রাজনৈতিক আলোচনা? এ প্রশ্নের জবাব দেননি মমতা। কিন্তু বিরোধীরা সোচ্চার হয়েছে রাজীবকুমার-সিবিআই এপিসোড যখন ক্লাইম্যাক্সে পৌঁছেছে তখন মমতা-মোদির এই বৈঠক নিয়ে। রাজীবকুমার কবে গ্রেপ্তার হবে তা নিয়ে রাজ্য এবং জাতীয়স্তরেও চলছে তুমুল জল্পনা। তিনি কোথায় আছেন তা নিয়েও রহস্য তুঙ্গে। এনআরসি প্রসঙ্গেও এক প্রশ্নের উত্তরে মমতা বলেছেন, এসব নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কোনও আলোচনা হয়নি। হওয়ার কথাও ছিল না। তিনি বলেন, গোড়াতেই আপনারা ভুল করছেন। একটি বিশেষ চুক্তির পরিপ্রেক্ষিতে কেবলমাত্র অসমের জন্যই এনআরসি হয়েছে। তাই বিজেপির কে কী বলছে, তা নিয়ে আমি কোনও জবাব দেব না। মমতা বলেন, বাংলায় এনআরসির কোনও প্রস্তাব নেই। হবেও না। হতে দেব না।
বিপুল সমর্থন নিয়ে কেন্দ্রে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় বসার পর আজই প্রথম নরেন্দ্র মোদির মুখোমুখি হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রায় আড়াই বছর পর একান্ত বৈঠক করলেন মোদি-মমতা। এদিন বিকালে ৭, লোক কল্যাণ মার্গে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যান মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠকের পর তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক খুব ভালো হয়েছে। নরেন্দ্র মোদি দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর আমি তো শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে আসব বলে ঠিক করেছিলাম। কিন্তু সেসময় রাজ্যে ভিন্ন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল বলে বাতিল করেছিলাম।
বৈঠকে রাজ্যের নাম পশ্চিমবঙ্গর বদলে ‘বাংলা’ করার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলা নামটা রেখে যদি অন্য কিছু সংশোধন বা সংযুক্ত করা হয় তাহলেও আমাদের আপত্তি নেই বলে জানিয়েছি। আগাগোড়া সৌজন্যের আবহে বৈঠক হলেও অর্থনীতি নিয়ে পরোক্ষে প্রধানমন্ত্রীকে অস্বস্তিকর বার্তা দিয়ে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী। যে আর্থিক মন্দা নিয়ে নাজেহাল মোদি সরকার, সেই প্রেক্ষাপটে দেশের আর্থিক বৃদ্ধির হার ৫ শতাংশে নেমে গেলেও পশ্চিমবঙ্গ কিন্তু ১২.১ শতাংশ জিডিপি অর্জন করেছে সেই পরিসংখ্যান প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়ে এসেছেন মমতা।