বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
প্রবল বৃষ্টিতে রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ের সভা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হলেও কর্মীদের ভিড় দেখে উৎসাহিত কংগ্রেস পরিষদীয় নেতা আব্দুল মান্নান বলেই ফেলেন, মঞ্চে বসে যাঁরা বক্তৃতা করছেন, সেই নেতারা নন, কংগ্রেসে কর্মীরাই আসল। কোনও হীনমন্যতায় ভুগবেন না। সভায় আসা কর্মীদের উৎসাহ দেখে এমনই পরামর্শ দিলেন রাজ্যসভার সদস্য প্রদীপ ভট্টাচার্য। উত্তরবঙ্গের দেবপ্রসাদ রায়, শঙ্কর মালাকার থেকে দক্ষিণবঙ্গের ফিরোজা বেগম, আবু হেনা সবার ভাষণেই একসঙ্গে নরমে গরমে ছিল বিজেপি ও তৃণমূলের সমালোচনা। রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর নামে বড় বড় ভবন তৈরি হলেও হাসপাতালে চিকিৎসক অমিল, দাবি প্রদেশ কংগ্রেস নেতা শঙ্করের। প্রাক্তন সাংসদ দেবপ্রসাদের মতে, বিজ্ঞাপনে মিথ্যা দাবি জানানোয় কেন্দ্র-রাজ্য দুই সরকারই একই পথে হাঁটছে। একজন কাটমানি ফেরতের কথা বলছে, অন্যজন ব্ল্যাকমানি ফেরানোর দাবি তুলছে। ফিরোজার অভিযোগ, কেন্দ্রে ও রাজ্যে দুটোই লুটেরাদের সরকার। কেন্দ্র যেমন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিকে লুট করেছে, বিএসএনএল সহ কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে বেসরকারি হাতে তুলে দিচ্ছে, তেমনই রাজ্যে সমস্ত সরকারি প্রকল্পে কাটমানি নিয়ে চলেছে তৃণমূল। প্রতিবাদ করলেই মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে।
এদিনের সভায় এনআরসি’র বিরুদ্ধে সরব হন সবাই। প্রদীপ ভট্টাচার্যের দাবি, বাংলায় এনআরসি’র পাশাপাশি নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলও যথেষ্ট উদ্বেগের কারণ। উল্লেখ্য, রাজ্যসভায় ওই বিল সংক্রান্ত কমিটির সদস্য তিনি। তাঁর মতে, ১৯৪৭ সালে বাংলা ভাগের পর যাঁরা এদেশে এসেছেন, তাঁরাই সঙ্কটে পড়বেন। তিনি মনে করেন, এই বিল ধর্মীয় বিভাজনের লক্ষ্যে আনতে চাইছে বিজেপি। এনআরসি প্রসঙ্গ তুলে আব্দুল মান্নান, সোমেন মিত্রও কড়া ভাষায় সমালোচনা করেন কেন্দ্রের। মান্নানের দাবি, যে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়কে সামনে রেখে বিজেপি এনআরসি নিয়ে শোরগোল করছে, দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে তাঁর কোনও অবদান নেই। সোমেনের মতে, এনআরসি’র নাম করে বাংলায় বিভাজনের রাজনীতি করছে বিজেপি।
গত লোকসভা ভোটে বিজেপির সাফল্যের নেপথ্যে কংগ্রেসের ভোট হ্রাস অন্যতম কারণ বলেই মনে করেন মান্নান। তিনি বলেন, যদি কেউ মনে করেন, তৃণমূলের স্বৈরাচারের হাত থেকে বাঁচতে বিজেপিকে সমর্থন করব, তাহলে ভুল হবে। বিকল্প হতে পারে কংগ্রেস। সোমেন বলেন, কংগ্রেস একার পক্ষে এই দুই প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারবে না। তাই পুজোর মরশুম কেটে গেলে বামেদের সঙ্গে ইস্যুভিত্তিক আন্দোলনে নামা হবে বলে জানান প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। এদিন প্রাক্তন বাম সাংসদ তথা গত লোকসভা ভোটে কংগ্রেস প্রার্থী লক্ষ্মণ শেঠকে মঞ্চ থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়। মান্নান আগে থেকেই লক্ষ্মণকে নিয়ে তাঁর আপত্তির কথা প্রদেশ সভাপতিকে জানিয়ে দিয়েছেন। তাই বিতর্কিত প্রাক্তন সাংসদ মঞ্চে উঠতেই অমিতাভ চক্রবর্তী ও সভার সঞ্চালক শুভঙ্কর সরকার তাঁকে নেমে যেতে বলেন।